Advertisement
Doctor TV

বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫


যাদের মাসিকের পরিমাণ কম তাদের জন্মনিয়ন্ত্রণে বিকল্প পদ্ধতি নেয়া উচিত

Main Image

প্রতীকী ছবি


কেউ সদ্য বিয়ে করেছেন, একটু দেরিতে সন্তান নেবেন। কারও আবার একটি সন্তান আছে, পরের সন্তান নেওয়ার আগে কয়েক বছরের বিরতি চান। কেউ হয়তো ইতোমধ্যে দুই সন্তানের বাবা-মা, তাই জন্মনিয়ন্ত্রণে স্থায়ী কোনো পদ্ধতিতে যেতে চান। কেউ চান প্রসব-পরবর্তী সময়ের জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি, কেউ আবার চান গর্ভপাত-পরবর্তী সময়ে।

জন্মনিয়ন্ত্রণের নানা রকমের পদ্ধতি আছে। তবে একেক দম্পতির জন্য একেক রকম পদ্ধতি ভালো। সবার চাহিদার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বিশেষ পরামর্শ বা কাউন্সেলিং, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা এবং সঠিক পরিবার পরিকল্পনা সেবার দরকার হয়। সবার জন্য একই পদ্ধতি কখনো প্রযোজ্য হতে পারে না।

জন্মনিয়ন্ত্রণে পদ্ধতি দুই রকমের হয়। একটা হয় স্বল্পমেয়াদি আরেকটা হয় দীর্ঘমেয়াদি। স্বল্পমেয়াদির ভেতর আমরা যে হরমোনালগুলা বলে থাকি, তার মধ্যে যেটা মুখে খাবার বড়ি এটা খুব সাধারণভাবে ব্যবহার করে। এছাড়াও স্বল্পমেয়াদির ভেতর আছে ইঞ্জেকশন যেটা মাসে মাসে নিয়ে থাকে। এর বাইরেও কনডম নিয়ে থাকে।

আর দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতির ভেতর আছে তিন মাসের জন্য ইঞ্জেকশন নিতে হয়। একটা আছে হাতে রড দেওয়া হয়, যেটাকে ইমপ্লায়েন্ট বলে। আর একটা আছে কয়াপাটি, এটা ৮-১০ বছরের জন্য নেওয়া হয়।

আমাদের দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়িটা খুবই কার্যকর এবং জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানুষের একটা ধারণা থাকে যে, জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি খেলে হয়তো সে যখন বাচ্চা নিতে চাইবেন, তখন নিতে পারবেন না অথবা তার গর্ভধারণ ক্ষমতা কমে যাবে। এছাড়াও কিছু কিছু মেয়েদের ধারণা আছে ওজন বেড়ে যেতে পারে এবং অনেক সময় রক্তপাত হতে পারে।

এসব ধারণার ফলে আমাদের দেশের নারীরা জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি থেকে বিরত থাকেন। কিন্তু জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি অত্যন্ত নিরাপদ এবং ছোটোখাটো কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া বড় ধরনের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। এর সব থেকে বড় সুবিধা হলো সব বয়সী নারীরা ব্যবহার করতে পারবেন। তবে বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে কিছু বাধ্যবাধকতা আছে। সেটা ডাক্তারের পরামর্শে ব্যবহার করতে হবে।

জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়িটা নিয়মিত খেতে হয়। যেটা প্রতি রাতে একটা করে খেতে হবে।  জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়িটা খুব স্বল্পমাত্রায় হরমোন দিয়ে তৈরি করা হয়। কারণ এটি যাতে গ্রহীতার শরীরে সহনীয় হয় এবং তার যাতে কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া না হয়।

যেহেতু জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়িটা একটা হরমোন সেহেতু বিশেষ করে যারা নতুন করে এটি শুরু করছে তাদের সামান্য কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। একেক জনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া একেক রকম হতে পারে। যেমন কারো মাথা ঘুরাতে পারে, বমিবমি ভাব হতে পারে। অনেক সময় ওজন বেড়ে যায় বা অনেক সময় হাত-পা একটু ফুলে যেতে পারে। এছাড়াও হালকা মাথা ব্যথা হতে পারে। তবে এক-দুই মাস খাওয়ার পর এই সমস্যাগুলো আর থাকে না।

ডাক্তারর নিয়মিত জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়িটা খাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু তারপরও অনেক ভুলে যান। এখন, গত রাতে খাওয়ার কথা কিন্ত ভুলে গেছেন এমন যদি হয়, তাহলে সকালে যখনই মনে পড়বে তখনই সে খেয়ে নেবেন এবং আজকে রাতেরটা আবার আজকে রাতে খেয়ে নেবেন।

কিন্তু কেউ যদি পর পর দুইরাতে ভুলে যায় তাহলে কিন্তু এর আর কার্যকারিতা থাকবে না। এখন যদি তখন তার বড়ি যদি সাতটা বাকি থাকে তাহলে সেটা শেষ করবেন এবং এই সাতদিনের ভেতর যদি সে স্বামীর সঙ্গে থাকেন তাহলে তখন তাকে অন্য পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে। এর পর আগের ডোজটি শেষ হলে পরবর্তী সপ্তাহ থেকে আবার আগের নিয়মে জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি নিয়মিত খেতে থাকবেন।

জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খাওয়ার ফলে অনেক সময় মেয়েদের মাসিক কমে যায়। এটা যাদের মাসিকের পরিমাণটা একটু বেশি তাদের জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খেলে মাসিক পরিমাণটা কমে যায়। এজন্য যাদের মাসিকের পরিমাণটা কম তাদের জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি না নিয়ে অন্য পদ্ধতিতে যাওয়া উচিত।

আরও পড়ুন