প্রত্যেক নারীই চায় একটি সুস্থ এবং স্বাস্থ্যবান শিশু জন্ম দিতে। কিন্তু ছোটো ছোটো কিছু ভুলের কারণে শিশুর জন্মগত ত্রুটি দেখা যায়। বিষয়টি নিয়ে ডক্টর টিভির সঙ্গে কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞ তিন জন চিকিৎসক। এনাম মেডিকেল কলেজের গাইনি ও অবস বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. গুলশান আরা, ডা. মাফুরুহা জাহান, বগুড়ার মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালের সিনিয়র গাইনি কনসালট্যান্ট ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র গাইনি কনসালট্যান্ট ডা. সাবিহা নাজনীন পপি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ঢাকা মেডিকেলের গাইনি বিভাগের চিকিৎসক ডা. শারমীন আক্তার
ডক্টর টিভি: একটি শিশুর শারীরিক বা মানসিক কী কী ত্রুটি থাকতে পারে? ত্রুটি নিয়ে জন্মানোর কারণগুলো কী?
ডা. মাফরুহা জাহান: কোনো শিশুর জন্মগত ত্রুটি কয়েকটি কারণে হতে পারে। যেমন, পরিবেশগত কারণ, ইনফেকশন অথবা বংশগত কারণ। এর যেকোনো একটি বা একাধিক কারণেও হতে পারে। কিছু ত্রুটি আছে শারীরিক গঠনগত কিছু আছে ফাংশনাল বা কার্যক্ষমতাগত ত্রুটি। কোনো কোনো সময় উভয় ত্রুটিও থাকতে পারে। ফাংশনাল ত্রুটিগুলো হচ্ছে:
এছাড়া হার্টের গঠনগত ত্রুটি নিয়েও অনেক শিশু জন্মগ্রহণ করে থাকে। শারীরিক গঠনগত কিছু সাধারণ ত্রুটি হচ্ছে:
ডক্টর টিভি: জন্মগত ত্রুটির ঝিুকি এড়াতে করণীয়গুলো কি কি?
অধ্যাপক ডা. গুলশান আরা: জন্মগত ত্রুটির কারণগুলো এখন পর্যন্ত ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রেই শনাক্ত করা যায় না। তার পরেও কিছু বিষয় আগে থেকে মেনে চললে এই ঝুঁকি এড়ানো যায়।
ডক্টর টিভি: কোনো মা যদি পূর্বে ত্রুটিযুক্ত সন্তান জন্ম দিয়ে থাকেন, তাহলে পরবর্তী সন্তান ত্রুটিযুক্ত হওয়ার কতটা ঝুকি থাকে?
ডা. সাবিহা নাজনীন: কোনও মা যদি ইতোপূর্বে ত্রুটিযুক্ত সন্তান জন্ম দেন, তাহলে তিনি ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যান। এজন্য তাকে বাড়তি কিছু সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। ৩৫ বছর বয়সের বেশি মায়েদের জন্য এই ঝুঁকি কিছুটা বেশি থাকে। এক্ষেত্রে তার পূর্বের সন্তান নেওয়ার সময় কী ধরণের চিকিৎসা নিয়েছিলেন সেটা বিবেচনা করতে হবে। এবং কারণগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। ফলিক এসিড জাতীয় খাবার যেমন, পালং শাক, সরিষা শাক, মুলা ইত্যাদি খাবার খেয়ে ফলিক এসিডের ঘাটতি পূরণ করার মাধ্যমে পরিকল্পিত গর্ভধারণ সুস্থ সবল সন্তান জন্মদানে সহায়ক হতে পারে।
ডক্টর টিভি: জন্মগত ত্রুটি গর্ভাবস্তায় নির্ণয় করা যায় কিনা? নির্ণয় করা গেলে তার চিকিৎসা কী হতে পারে?
ডা. মাফরুহা জাহান: কিছু ত্রুটি আছে যেগুলো গর্ভাবস্তায় নির্ণয় করা যায়। এসময় মায়ের আগের বাচ্ছা জন্মের তথ্যটা জানা জরুরি। আগের বাচ্ছার যদি ডাউন সিনড্রম থাকে বা মায়ের বয়স যদি ৩৫ বছরের বেশি হয় তাহলে তিনি ডাউন সিনড্রম ঝুকির মধ্যে থাকে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ঝুকিগুলো খঁজে বের করতে হবে। হাইড্রকেপালাস, এন এন কেপালি, নিউরাল টিউব ডিফেক্ট নিয়ে যে বাচ্ছা জন্মে তার অন্যতম কারণ হচ্ছে ফলিক এসিডের ঘাটতি। পরের সন্তান গর্ভে ধারণের আগে তিনি এসব খেছেন কি না তা জনতে হবে। এর পরে গর্ভাবস্তায় কিছু স্কিনিং টেস্টের মাধ্যমে এবারের বাচ্ছাটি আক্রান্ত কিনা তা জানা যায়। এর জন্য রক্তের কিছু পরীক্ষা বা আলট্রাসনোর সাহায্য নিয়ে নির্ণয় করা হয়। এছাড়া কিছু ইনভেসিভ পরীক্ষা যেটা মায়ের গর্ভ থেকে কিছু নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করে বাচ্ছার কোনো ত্রুটি আছে কি না সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়। এছাড়া জেনেটিক এ্যানালাইসিস থেকেও নিশ্চিত হওয়া যায় কি ধরণের ত্রুটির মধ্যে বাচ্ছা আছে। সব সময় ত্রুটি গুলো ভালো করা যায় না। জন্মের পর কিছু ত্রুটি চিকিৎসার মাধ্যমে ভালো হয়।
আরও পড়ুন