রাতে ঘুম আসে না, জানুন করণীয়
পর্যাপ্ত ঘুম শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে ইতিবাচক প্রভাব রাখে।
রাতে ভালো এবং পর্যাপ্ত ঘুম আমাদের স্বাস্থ্য ও সুস্থতার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। রাতের গভীর ঘুম স্মৃতিশক্তি একত্রীকরণ, হরমোন নিয়ন্ত্রণ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং সামগ্রিক সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ঘুমানোর মাধ্যমে দেহ ও মন বিশ্রাম নেয়। পাশাপাশি দেহযন্ত্রগুলোও নিজেদের কার্যক্রম সঠিকভাবে করতে পারে। পর্যাপ্ত ঘুম শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে ইতিবাচক প্রভাব রাখে।
বর্তমানে মানুষের জীবনযাত্রার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। স্বাস্থ্যের উপর যার প্রভাব স্পষ্ট, বিশেষত ঘুমের উপর। নানা কারণেই শরীরিক চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত ঘুম হয়না আমাদের। অনেক সময় ঘুমাতে চাইলেও ঘুম আসে না। রাতে শোয়ার দু‘তিন ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও ঘুম আসে না, যেন পালিয়ে বেড়ায়।
রাতের বেলা ঘুমাতে চেয়েও যারা ঘুমাতে পারেন না তাদের করণীয় জানিয়েছেন ভারতের দ্য স্লিপ কোম্পানির সহ-প্রতিষ্ঠাতা প্রিয়াঙ্কা সালোট। চলুন জেনে নেওয়া যাক গভীর ঘুমের জন্য আপনার করণীয় সম্পর্কে-
রুটিন মেনে চলা
নিয়মিত ঘুমের রুটিন থাকাটাই ঘুমের চাবিকাঠি। ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে উঠার সময় নির্দিষ্ট করুন। ঘুম গভীর হলে তা আপনাকে যথেষ্ট বিশ্রাম দেবে এবং পরবর্তী দিনের জন্য উৎফুল্ল রাখবে।
সহায়ক পরিবেশ
ভালো ঘুমের জন্য ভালো পরিবেশ আবশ্যক। শান্ত পরিবেশের পাশাপাশি আপনার বিছানা, বালিশ এবং কমফোটারের গুণমানও ঘুমকে প্রভাবিত করে। আপনার বিছানা বা বালিশ নির্বাচনের সময় সেদিকে খেয়াল রাখুন। পছন্দের পাশাপাশি সেগুলো আরামদায়ক এবং স্বাস্থ্যের জন্য সহায়ক কি না, সেদিকেও দৃষ্টি দিন।
অ্যালকোহল, ধূমপান গ্রহন নিয়ন্ত্রণ
ঘুমের অন্যতম শত্রু হল সিগারেট, অ্যালকোহল ও ক্যাফেইনজাতীয় পানীয়। ঘুমানোর আট থেকে ছয় ঘণ্টা আগে থেকে এসব পরিহার করুন। বিছানায় যাওয়ার আগে ভারী খাবার এড়িয়ে চলুন। কারণ এটি অস্বস্তি এবং হজমের সমস্যা করতে পারে, যার ফলে ঘুমের চক্র ব্যাহত হয়।
মন শান্ত রাখা
বিক্ষিপ্ত মনের কারণে ঘুমের অভাব হতে পারে। যদি দুশ্চিন্তা করার প্রবণতা থাকে, তাহলে দুশ্চিন্তার বিষয় নিয়ে ভাবার জন্য দিনের কিছুটা সময় আলাদা রাখুন। ইতিবাচক চিন্তা দিয়ে তার মোকাবিলা করুন। এছাড়াও মন শান্ত করার জন্য ধ্যান, শিথিলায়ন, শ্বাসচর্চা বেশ উপকারী।
ইলেকট্রনিক ডিভাইস এড়িয়ে চলা
ঘুমাতে যাওয়ার আগে টেলিভিশন, ট্যাব, স্মার্টফোন ব্যবহার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। কারণ ডিভাইস থেকে নির্গত নীল আলো ঘুমে ব্যাঘ্যাত ঘটাতে পারে। এই আলো মেলাটোনিন নিঃসরণকে বাধা দেওয়ার পাশাপাশি ব্যবহার মনকেও বিক্ষিপ্ত করে।
এসবের পাশাপাশি রাতে ভালো ঘুম না হওয়ার পেছনে মানসিক চাপ, পারিবারিক দায়িত্ব, অসুস্থতাও কারণ হতে পারে। সাম্প্রতিক গবেষণা অনুসারে, পর্যাপ্ত ঘুম আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রতি রাতে ৬-৭ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করতে হবে।