Copyright Doctor TV - All right reserved
‘জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন ও তামাক কর বৃদ্ধি: গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, তামাক কোম্পানিগুলো বছরে যে পরিমাণ রাজস্ব দেয় তামাকজনিত বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় তারচেয়ে প্রায় আট হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় হয়। দেশে তামাক ব্যবহারের কারণে বছরে এক লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ অকালে প্রাণ হারায়।
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনীর উদ্যোগকে ‘সময়োপযোগী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। বুধবার (২০ মার্চ) গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স- আত্মার প্রতিনিধিদল সচিবালয়ে সাক্ষাৎ করতে গেলে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশে তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে প্রতি বছর প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার ৮ম বর্ষ উদযাপন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ।
অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, বিশ্ব হার্ট দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘ভালোবাসা দিয়ে প্রতিটি হৃদয়ের যত্ন নিন’। তাই প্রত্যেক চিকিৎসককে অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে হবে। যাতে রোগীরা চিকিৎসকের সংস্পর্শে এসেই মনের মধ্যে প্রশান্তি লাভ করতে পারেন।
বিশ্বব্যাপী মানুষের সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটে হৃদরোগে। বছরে এর সংখ্যা প্রায় এক কোটি ৮০ লাখ। হৃদরোগের অন্যতম কারণ উচ্চ রক্তচাপ ও তামাকজাত পণ্য সেবন। ভবিষ্যতে হৃদরোগের সমস্যা আরও জটিল হতে পারে। পরিমিত খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়াম একজন মানুষকে হৃদরোগ থেকে রক্ষা করতে পারে।
আজ ৩১ মে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। এবার ‘তামাক নয়, খাদ্য ফলান’ প্রতিপাদ্যে দিবসটি পালিত হচ্ছে। আমাদের দেশে অবাধে তামাক সেবন চোখে পড়ে। সিগারেট, বিড়ি, হুঁকা, জর্দা, গুল, সাদা পাতা—বুঝে না বুঝে ব্যবহারের কারণে সার্বিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও পরিবেশ ভয়ংকর ঝুঁকিতে পড়ছে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সবাইকে ধূমপান ও তামাকের ভয়াল নেশা থেকে দূরে থাকতে হবে। জনসচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে। বুধবার (৩১ মে) ‘বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস-২০২৩' উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (৩০ মে) দেয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন তিনি।
শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন কার্যকর হলেই বাংলাদেশ তামাকমুক্ত হবে বলে মনে করে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান)
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রণীত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী আগামী জাতীয় সংসদ অধিবেশনে উত্থাপন করে চূড়ান্ত আইনে পরিণত করার দাবি জানিয়েছে ইউনাইটেড ফোরাম অ্যাগেইনস্ট টোব্যাকো এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণে এখন পর্যন্ত ৩০ হাজারের মতো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। যা করোনায় মৃত্যুর চেয়েও ৫ গুণ বেশি।
তামাকজনিত রোগে দেশে প্রতিদিন ৪৫০ জন মানুষ মারা যান বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী। এ রোগে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটে বলেও জানান তিনি।
তামাক কোম্পানিগুলো বিভিন্ন কূটকৌশল প্রয়োগ করে তরুণদের আসক্ত করার মাধ্যমে দেশে ই-সিগারেটের বাজার দ্রুত সম্প্রসারণ করছে। এতে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য ব্যাহত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশে বছরে ১ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী তামাক বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো: এনামুর রহমান। তিনি বলেন, তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু, অসুস্থতা এবং তামাকের অন্যান্য বিধ্বংসী প্রভাব নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হলেও তামাক কোম্পানিগুলো সুচতুরভাবে তাদের এই চরিত্র আড়াল করার চেষ্টা করছে।
তামাকজনিত মৃত্যু ঠেকাতে শক্তিশালী আইন প্রণয়ন করা দরকার বলে মনে করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। বুধবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের নিজ দপ্তরে বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর এনসিডি কনট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (বিএনএনসিপি) একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ডা. এনাম এ কথা বলেন।
জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান বলেছেন, তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে শক্তিশালী আইনের বিকল্প নেই। তবে তামাক কোম্পানিগুলো নতুন ভোক্তা বানাতে নানা ধরনের অপতৎপরতা চালাচ্ছে। এ অবস্থায় তামাকমুক্ত দেশ গঠন ও তামাক কোম্পানিগুলোর অপতৎপরতা রুখে দিতে দেশের চিকিৎসকদের এগিয়ে আসতে হবে।