
ছবিঃ সংগৃহীত
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে দেশের প্রথম ‘সাপে কাটা রোগীদের জন্য বিশেষায়িত ওয়ার্ড’ উদ্বোধন করা হয়েছে — যার লক্ষ্য সাপের কামড়ে মৃত্যুহার কমানো এবং আক্রান্তদের দ্রুত, উন্নত ও বিনামূল্যে চিকিৎসা নিশ্চিত করা।
বৃহস্পতিবার হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ. এম. শামীম আহমেদ আনুষ্ঠানিকভাবে ‘স্নেকবাইট অ্যান্ড টক্সিকোলজি ওয়ার্ড’-এর উদ্বোধন করেন।তিনি জানান, এটি একটি হাই-ডিপেনডেন্সি ইউনিট (এইচডিইউ) মানের ওয়ার্ড, যেখানে শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ বা অন্যান্য জটিলতায়আক্রান্ত সাপে কাটা রোগীদের সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়া হবে।
নতুন এই ওয়ার্ডে ৮ জন পুরুষও ৪ জন নারী রোগীর ভর্তি ব্যবস্থা রয়েছে। প্রয়োজনে বাইরের রোগীদেরও জরুরি চিকিৎসা প্রদান করা হবে।
রামেকের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আবু শাহিন মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত হাসপাতালে ১,২০৫ জন সাপে কাটা রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৬০ জন বিষধর সাপের কামড়ে আক্রান্ত ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ওয়ার্ড চালুর আগে চিকিৎসক ওনার্সদের জাতীয় সাপের কামড় ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকাঅনুযায়ী বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, যাতে চিকিৎসা আরওদ্রুত ও কার্যকর হয়।
ডা. মাহবুবুর রহমানের তথ্যমতে, ২০১৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ে মৃত্যুহার ছিল প্রায় ২৭ শতাংশ, তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উন্নত চিকিৎসার ফলে তা উল্লেখযোগ্য ভাবে হ্রাস পেয়েছে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহমেদ বলেন, আগে সাপে কাটা রোগীরা সাধারণ ওয়ার্ডে ভর্তি হতেন, ফলে অনেক সময়চিকিৎসা পেতে বিলম্ব হতো।
তিনি বলেন, “এখনএইচডিইউ মানের নতুন ইউনিটে ২৪ঘণ্টা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও নার্সের উপস্থিতি, দ্রুত অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ ও নিয়মিত পর্যবেক্ষণেরমাধ্যমে রোগীরা তাৎক্ষণিক চিকিৎসা পাবেন। এতে মৃত্যুহার আরওকমে আসবে।”
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতিটি অ্যান্টিভেনম ডোজের দাম প্রায় ১৩ হাজার টাকা, এবং প্রতি ডোজে সাধারণত ১০টি শিশি লাগে। অনেক রোগীর ক্ষেত্রে একাধিক ডোজ প্রয়োজন হয়।
তবে রামেক পরিচালক নিশ্চিত করেছেন, “সব ধরনের চিকিৎসা ও ওষুধ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রদান করা হবে। রোগী হাসপাতালে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই চিকিৎসা শুরু হবে কোনো বিলম্ব ছাড়াই।”
আরও পড়ুন