ব্যয় সংকোচনের কৌশলের অংশ হিসেবে শিশু বিকাশ কেন্দ্রের ৩৫ চিকিৎসক ও ২৩ মনোবিজ্ঞানীর পদ বাতিল করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে বাতিল করা হয়েছে সব অফিস ব্যবস্থাপক ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর পদও।
ফলে অপরিহার্য স্বাস্থ্যকর্মী বাদ দিয়ে কেবলমাত্র ১২ জন মনোবিজ্ঞানী ও ৩৫ জন থেরাপিস্টের পদ রাখা হয়েছে। তবে তাদেরকেও আউটসোর্সিংয়ের আওতায় আনা হয়েছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।
শিশু বিকাশ কেন্দ্রের ইতিহাস ও সেবা
কর্মকর্তাদের দাবি
শিশু বিকাশ কেন্দ্রের কর্মকর্তারা তিনটি দাবি জানিয়েছেন—
১. ১৫ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ।
২. সমস্ত জনবল ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্তিকরণ।
৩️. রাজস্বখাতে আত্মীকরণ।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক কামাল উদ্দিন আহম্মেদ চৌধুরী বলেছেন, “চিকিৎসক ও মনোবিজ্ঞানীর পদ কমিয়ে দিলে সেবাটি কার্যত বন্ধ হয়ে যাবে। এটি সরকারের ভুল সিদ্ধান্ত।”
ঢাকা মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যাপক ডা. ইফ্ফাত আরা শামসেদ বলেন, শিশু বিকাশের চিকিৎসা একটি মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি অ্যাপ্রোচ, যেখানে চিকিৎসক, মনোবিজ্ঞানী ও থেরাপিস্ট—এই তিনজন মিলে একটি পূর্ণাঙ্গ টিম গঠন করেন। এর মধ্যে কোনো পদ বাদ দিলে সেবার মান ব্যাহত হবে।
বাস্তব অভিজ্ঞতা
খুলনার শিশু বিকাশ কেন্দ্র থেকে সেবা নেওয়া এক অভিভাবক জানান, নিয়মিত থেরাপি ও পরামর্শের কারণে তাঁর সন্তানের অবস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মন্তব্য
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (এইচএসএম) ডা. মো. জয়নাল আবেদীন টিটো বলেন, “আমাদের প্রস্তাব ছিল সবগুলো পদ বহাল রাখা। এগুলো অত্যাবশ্যক সেবা।”
বিশেষজ্ঞ ও সেবা-প্রাপ্ত পরিবারগুলো মনে করছেন, সরকারের এ সিদ্ধান্ত শিশু বিকাশ কেন্দ্রের কার্যকারিতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের সেবার সুযোগ কমিয়ে দেবে।
আরও পড়ুন