বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে শনিবার (১৬ আগস্ট) থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে হাসপাতাল প্রাঙ্গণ থেকে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেওয়ার পর এ ঘোষণা আসে।
স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে ‘ছাত্র-জনতা’ ব্যানারে তিন দফা আন্দোলন শুরু হয় গত ২৮ জুলাই। ৭ আগস্ট থেকে প্রতিদিন ৬-৭ ঘণ্টা বরিশালের নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করা হচ্ছে, ফলে বিভাগের ছয় জেলার সঙ্গে রাজধানীর সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। গত ১১ আগস্ট থেকে দুই শিক্ষার্থীসহ তিনজন শেবাচিম হাসপাতালের প্রধান ফটকে অনশন শুরু করেন।
চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, আন্দোলনের কারণে হাসপাতালের পরিবেশ নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে এবং আন্দোলনকারীরা নানাভাবে চিকিৎসকদের হয়রানি ও হেনস্তা করছেন। অপরদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার দুপুরে নার্স, টেকনোলজিস্ট ও তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা বিক্ষোভ মিছিল শেষে অনশনস্থলে গিয়ে তাদের মারধর করে বের করে দেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর হামলা এবং শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের অবসান চাই। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “নিরাপত্তা না দিলে শনিবার থেকে কর্মবিরতিতে যাব। পরিণতির দায় আন্দোলনকারীদের ওপর বর্তাবে।”
ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. মো. জোনায়েদ বিন জাকির সিদ্দিকী বলেন, “স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবি যৌক্তিক, আমরাও একমত। কিন্তু হঠাৎ ১০-২০ জন এসে চিকিৎসককে অযাচিত প্রশ্ন বা চাপ দেওয়া অগ্রহণযোগ্য। রোগীর মৃত্যু হলে ডাক্তারদের অপ্রাসঙ্গিক জবাবদিহিতে বাধ্য করা হয়, যা প্রয়োজন নেই।”
ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. সৌমিক আহমেদ জানান, “গত দুইদিন প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও আমরা সেবা দিয়েছি। কিন্তু মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেই চিকিৎসকদের ওপর চড়াও হওয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় আমরা নিরাপত্তা ছাড়া দায়িত্ব পালন করতে পারি না।”
এর আগে বুধবার এক বিবৃতিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে জানিয়েছিলেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে শনিবার থেকে কর্মবিরতি শুরু করবেন।
আরও পড়ুন