Advertisement
Doctor TV

শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫


দশ সমস্যায় জর্জরিত দেশের স্বাস্থ্য খাত

Main Image

ছবিঃ সংগৃহীত


স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় দেশের স্বাস্থ্য খাতের দশটি বড় সংকটকে ‘রোগ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর সমস্যা হিসেবে ধরা হয়েছে মেধা, জ্ঞান ও যোগ্যতা থেকে বিচ্ছিন্ন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায় নিয়োগে মেধাশক্তির গুরুত্ব দেওয়া হয় না, দক্ষ জনশক্তি তৈরির প্রক্রিয়া উপেক্ষিত থাকে এবং পেশাগত লক্ষ্য অর্জনের কোনো সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি।

 

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শহীদ আবু সাঈদ আন্তর্জাতিক কনভেনশন হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরের স্বাস্থ্য খাতের অর্জন এবং ভবিষ্যৎ সংস্কার পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়। ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, কয়েক মাসের বিশ্লেষণের মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতের ১০টি বড় সংকট চিহ্নিত করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত কেন্দ্রীভূত কাঠামো, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা উপেক্ষা করে বিশেষায়ননির্ভর চিকিৎসা, স্বচ্ছতার অভাব, দায়মুক্তির সংস্কৃতি, উৎসাহ ও মনোবলহীন স্বাস্থ্যকর্মী, নৈতিকতার ঘাটতি, যন্ত্রপাতি পরিকল্পনা ও রক্ষণাবেক্ষণে পরনির্ভরতা, ওষুধের কাঁচামাল ও ভাবনায় বিদেশ নির্ভরতা এবং নেতৃত্ব ও পরিকল্পনার দুর্বলতা। তার মতে, স্বাস্থ্য খাতের সমস্যার সমাধানও হতে হবে চিকিৎসার মতো প্রথমে সঠিক রোগ নির্ণয়, তারপর সঠিক চিকিৎসা।

 

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম জানান, দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমেই আন্দোলনে শহীদদের তালিকা প্রকাশ এবং আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিতের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ পর্যন্ত ৭৮ জন আহতকে বিদেশে পাঠানো হয়েছে, যার মধ্যে চারজনকে জরুরি ভিত্তিতে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। তিনি জানান, দেশে বর্তমানে প্রায় সাত হাজার চিকিৎসকের ঘাটতি রয়েছে এবং সেপ্টেম্বরে তিন হাজার চিকিৎসক নিয়োগের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এই নিয়োগ প্রক্রিয়া পাঁচ থেকে ছয় মাসের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে, যা পূর্বে তিন বছর পর্যন্ত সময় নিত।

 

অঙ্গ প্রতিস্থাপন আইনের জটিলতা দূর করে দেশে অঙ্গ প্রতিস্থাপন কার্যক্রম চালুর জন্য সংশোধিত আইন আগামী সপ্তাহেই প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন উপদেষ্টা। তিনি আরও বলেন, মেডিকেল কলেজের অনুপযোগী হোস্টেল সমস্যা সমাধানে ১৯টি নতুন ছাত্রাবাস নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে ১০ হাজার শিক্ষার্থী আবাসন সুবিধা পাবে। সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের জন্য নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।

 

ওষুধ শিল্পের বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, রোগীর মানসম্পন্ন ওষুধপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে, আবার শিল্পের টিকে থাকার জন্য ন্যায়সংগত দামও বজায় রাখতে হবে। এ পর্যন্ত কোনো ওষুধ কোম্পানি অস্তিত্ব সংকটে পড়েনি এবং তাদের ন্যায়সংগত মুনাফা থেকে বঞ্চিত করা হবে না। তবে মানের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

 

মাইলস্টোন স্কুলের ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার বিষয়েও কথা বলেন নূরজাহান বেগম। তিনি জানান, বিদেশি চিকিৎসকরা স্থানীয় চিকিৎসকদের চিকিৎসা পদ্ধতিকে সঠিক বলেছেন এবং জুলাই আন্দোলন ও মাইলস্টোন ঘটনায় আহতদের চিকিৎসা সন্তোষজনক বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন।

আরও পড়ুন