ছবিঃ সংগৃহীত
লক্ষাধিক মার্কিন নাগরিকের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যতথ্য অবৈধভাবে অভিবাসন দফতর বা হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে এমন অভিযোগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের বিরুদ্ধে বড় ধরনের মামলা দায়ের করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ২০টি রাজ্য। সংবাদ সংস্থা এপি-র বরাতে জানা গেছে, সাবেক মার্কিন স্বাস্থ্যসচিব রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়রের উপদেষ্টারা গত মাসে ক্যালিফোর্নিয়া, ইলিনয় এবং ওয়াশিংটন-সহ কয়েকটি স্টেটের নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য হোমল্যান্ড সিকিউরিটির হাতে তুলে দিয়েছেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, এসব রাজ্যের স্বাস্থ্যসেবার আওতায় থাকা নাগরিকদের পাশাপাশি অভিবাসীদের নামও নথিভুক্ত ছিল। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, রাষ্ট্রীয় করদাতাদের অর্থে পরিচালিত এসব সেবা ব্যবহারের অধিকার শুধুমাত্র আইনগতভাবে বৈধ নাগরিকদেরই থাকা উচিত। এই যুক্তিতে তারা তথ্য হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়।
তবে বিষয়টি নিয়ে কড়া আপত্তি তুলেছে ক্ষতিগ্রস্ত স্টেটগুলো। ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল রব বন্টা এক বিবৃতিতে বলেন, “এটি যুক্তরাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইনের গুরুতর লঙ্ঘন। বহু মানুষের সংবেদনশীল স্বাস্থ্যতথ্য বেআইনিভাবে আইসিই-র (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় শুধু গোপনীয়তাই লঙ্ঘিত হয়নি, বরং সাধারণ মানুষের মধ্যে একধরনের ভয় ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। অনেকেই এখন আর জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না, কারণ তাদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ফাঁস হওয়া তথ্যে রয়েছে ব্যক্তির নাম, ঠিকানা, তারা অভিবাসী কি না, সামাজিক নিরাপত্তা নম্বর (Social Security Number), স্বাস্থ্য বীমার বিবরণ ইত্যাদি।
অন্যদিকে, এসব অভিযোগ সরাসরি উড়িয়ে দিয়েছে মার্কিন স্বাস্থ্য বিভাগ। বিভাগের মুখপাত্র অ্যান্ড্রু নিক্সন দাবি করেন, “প্রশাসনের সব পদক্ষেপ আইনের মধ্যেই থেকে গ্রহণ করা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য শুধুই নিশ্চিত করা, যাতে সরকারি সুবিধা শুধুমাত্র তারাই পান, যাঁরা তার যোগ্য।”
তবে রাজ্যগুলো এই সিদ্ধান্তকে ‘অনৈতিক’, ‘অবৈধ’ এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করছে। তাদের মতে, অভিবাসন ইস্যুকে সামনে এনে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
এই মামলার পরিণতি এখনো স্পষ্ট নয়। তবে জনমত ও রাজনৈতিক মহলে এই ইস্যু ইতোমধ্যেই ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিষয়টি যে যুক্তরাষ্ট্রের গোপনীয়তা আইন ও নীতিমালার এক গভীর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে, তা বলাই বাহুল্য।
আরও পড়ুন