Advertisement
Doctor TV

শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫


উড়ন্ত বিমানে অজ্ঞান যাত্রীকে জরুরি চিকিৎসা দিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন ডা. রায়হান উদ্দিন

Main Image

উড়ন্ত বিমানে অজ্ঞান যাত্রীকে জরুরি চিকিৎসা দিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন ডা. রায়হান উদ্দিন


ওমরাহ শেষে সৌদি থেকে ফেরার উড়ন্ত বিমানে বয়োবৃদ্ধ অজ্ঞান যাত্রীকে নিঃস্বার্থ জরুরি চিকিৎসা দিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন বাংলাদেশের চিকিৎসক ডা. রায়হান উদ্দিন। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট সৌদি আরবের মদিনা থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবার পর এই ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি নিজ ফেসবুক টাইম লাইনে শেয়ার করেছেন ডা. রায়হান উদ্দিন। ডক্টর টিভি অনলাইনের পাঠকদের জন্য লেখাটি তুলে ধরা হলোঃ 

 

‘‘আলহামদুলিল্লাহ্ আজ এক অন্য রকম ভাললাগা কাজ করলো হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যাওয়া ৭০+ বয়সী মহিলা যাত্রীকে বাংলাদেশ বিমানে জরুরী চিকিৎসা সেবা দিতে পেরে।
 

বাংলাদেশ বিমান মদিনা থেকে ঢাকা ফ্লাইটে বিমান যখন প্রায় পাঁচ হাজার ফিট উচ্চতায় ফ্লাই করছে। ঢাকা পৌঁছাতে তখনো প্রায় আড়াই ঘন্টা বাকি। আমি তখন গভীর ঘুমে। হঠাৎ বিমান থেকে ঘোষণা আসে বিমানে কোন ডাক্তার আছে কিনা, একজন যাত্রী সেন্স হারিয়ে ফেলেছে। তখন আমার কাফেলার একজন বলে, ডাক্তার রায়হান নামে ঘোষণা দিতে। আমায় একজন হঠাৎ করে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। আমি হঠাৎ করেই জেগে শুনছি- ডা. রায়হান বলে বিমানে ঘোষণা দিচ্ছে। ঘুম থেকে উঠেই দৌড়ে সামনে গেলাম। গিয়ে দেখি হইচই অবস্থা। একজন ৭০+ উর্ধ্ব বয়সী বৃদ্ধা যাত্রী সেন্সলেস। পাশে একজন কেবিন ক্রু এবং রোগীর জামাতা দেখছেন, আর আমায় বলছেন পালস্ পাচ্ছে না। নিঃশ্বাস নিচ্ছে কিনা বুঝতে পারছে না। কিছু সময় আগে বমিও করেছিলেন। গিয়েই দেখি শরীর ঠান্ডা। তখন গিয়েই মোবাইলের টর্চ দিয়েই রোগীর চোখের পিউপিল দেখি।পিউপিলের রেসপন্স দেখেই মনে আশা জাগলো আলহামদুলিল্লাহ। চোখের কোণে জোড়ে স্টিমুলেশন দেখায় একটু নড়ে উঠলেন। জিজ্ঞেস করলাম. রোগীর কি ডায়াবেটিস ছিলো? বললো ছিলো। আপডাউন করতো। 

 

সাথে সাথেই কেবিন ক্রুকে বললাম, এক বোতলে অনেক বেশী মাত্রায় চিনি দিয়ে মুখে দিতে। দ্রুত বিমানের ফাস্ট এইড বক্স নিয়ে আসতে বললাম। ব্লাড প্রেসার চেক করে দেখি- ব্লাড প্রেসার অনেক কম। দ্রুত পালস্ অক্সিমিটার লাগালাম। দেখলাম, অক্সিজেন স্যাচুরেশন ও পালস্ অনেক কম। দ্রুত বিমানে থাকা ইমার্জেন্সী অক্সিজেন দিলাম। দীর্ঘ সময় ধরে রোগীর পাশে থেকে চেষ্টা চালালাম জরুরী চিকিৎসার অংশ হিসেবে সাধ্যের মধ্যে থেকে।আলহামদুলিল্লাহ্ দীর্ঘ সময় পর রোগীর জ্ঞান ফিরলো।পালস্ ও অক্সিজেন স্যাচুরেশন বাড়লো। 
 

বিমান ল্যান্ড করার আগ পর্যন্ত প্রায় ২ঘন্টা রোগীর পাশেই দাঁড়ানো ছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ্ রোগীর জ্ঞান ফিরলো। রোগীর সাথে কথা বললাম। বাংলাদেশ বিমানের সকল ক্রু এই রোগীকে সেবা দিতে সর্বাত্মক সহযোগীতা করেছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। 
বিমান থেকে রোগীকে  হুইল চেয়ারে করে নামানো পর্যন্ত উপস্থিত থেকে রোগীর থেকে দোয়া নিয়ে বিমানবন্দর থেকে বের হলাম। আলহামদুলিল্লাহ্। এটি আমার ডাক্তারী জীবনের এক অন্যরকম নিঃস্বার্থ প্রাপ্তি।

আরও পড়ুন