Advertisement
Doctor TV

রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫


ডাক্তার পদবি সংক্রান্ত রিট নিষ্পত্তির দাবিতে লংমার্চের ঘোষণা মেডিকেল শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকদের

Main Image

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে কর্মসূচি ঘোষণা করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকরা


ডাক্তার পদবি সংক্রান্ত রিট নিষ্পত্তিসহ ৫ দফা দাবিতে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) লংমার্চ টু হাইকোর্ট কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন মেডিকেল শিক্ষার্থীরা। একই দাবিতে আগামীকাল সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে একাডেমিক শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তারা। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কর্মসূচি ঘোষণা করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকরা। 

 

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্যা দীর্ঘদিনের। এ সমস্যা সমাধানে একটি মৌলিক পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে তাদের পাঁচ দফা দাবি স্বাস্থ্যখাতে একটি বিপ্লব ঘটাতে পারে। এই দাবিগুলো বাস্তবায়িত হলে একদিকে যেমন স্বাস্থ্যখাতের অব্যবস্থা ও অনিশ্চয়তা দূর হবে, তেমনি অন্যদিকে রোগী এবং সাধারণ মানুষও উপকৃত হবেন।

 

ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ইসতিয়াক উদ্দিন মোহাম্মদ তাসকিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টদের চিকিৎসক পরিচয়ে রোগী দেখার বিরুদ্ধে দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় আমরা ক্ষুব্ধ। আমরা মনে করি, আমাদের দাবিগুলোতে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। তাই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত দেশের অন্যান্য সব মেডিকেল কলেজের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সব শিক্ষার্থী ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে একাডেমিক শাটডাউন ও ২৫ ফেব্রুয়ারি লংমার্চ টু হাইকোর্ট কর্মসূচি পালন করা হবে। এরপরও দাবি মেনে না নেওয়া হলে কর্মসূচি আরও কঠোর হবে।

 

মেডিকেল শিক্ষার্থীরা বলছেন, ডাক্তার পদবি সংক্রান্ত রিটটি এখন পর্যন্ত ৮৯ বার পেছানো হয়েছে। এমনকি রায়ের জন্য আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত। আমরা চাই এদিনই গত ১৩ বছর ধরে টানা ডাক্তার পদবি নিয়ে করা রিটের কার্যক্রমের অবসান হোক।

 

শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি হলো

 

১. এমবিবিএস/বিডিএস ব্যতীত কেউ ডাক্তার লিখতে পারবে না—বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) এ আইনের বিরুদ্ধে করা রিট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে ও বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন শুধু এমবিবিএস/বিডিএস ডিগ্রিধারীদের দিতে হবে। ২০১০ সালে হাসিনা সরকার ডিপ্লোমা অব মেডিকেল ফ্যাকাল্টি ইন মেডিকেল অ্যাসিসট্যান্ট ট্রেনিং কোর্স-ম্যাটসদেরকে বিএমডিসি থেকে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া শুরু করেছে, এই ম্যাটসদের বিএমডিসি থেকে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

 

২. চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ওভার-দ্য-কাউন্টার (ওটিসি) তালিকা নবায়ন করতে হবে। এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া অন্য কেউ ওটিসি তালিকার বাইরে ওষুধ প্রেসক্রিপশন করতে পারবে না। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিগুলো ওটিসি তালিকার বাইরে কোনো ওষুধ বিক্রি করতে পারবে না।

 

৩. স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসকের সংকট নিরসনে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। যেমন- ক. দ্রুত ১০,০০০ জন ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে সকল শূন্য পদ পূরণ করতে হবে। আলাদা স্বাস্থ্য কমিশন গঠনের আগের মতো সপ্তম গ্রেডে নিয়োগ দিতে হবে। খ. প্রতিবছর ৪,০০০-৫,০০০ ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে স্বাস্থ্যখাতের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। গ. ডাক্তারদের বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) বয়সসীমা ৩৪ বছর করতে হবে।

 

৪. ম্যাটস ও মানহীন সরকারি ও বেসরকারি কলেজগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। এরইমধ্যে পাস করা ম্যাটস শিক্ষার্থীদের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (সেকমো) পদবি রহিত করে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।

 

৫. চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।

 

দাবিগুলো বাস্তবায়নে দেশের বেশ কিছু মেডিকেল কলেজে আন্দোলন চলমান রয়েছে। তবে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনে তাদের করা দাবিগুলো বাস্তবায়নের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ নির্বিকার রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুন