মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) মিলন অডিটোরিয়ামে এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ এবং টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘রমজানে ডায়াবেটিস আপডেট’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত
গবেষণার ফল অনুযায়ী ডায়াবেটিস রোগীদের রোজা রাখতে কোন বাধা নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) মিলন অডিটোরিয়ামে এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ এবং টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘রমজানে ডায়াবেটিস আপডেট’ শীর্ষক সেমিনারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এ কথা বলেন।
চিকিৎসকরা বলেন, আগে আমরা ডায়াবেটিস রোগীদের রোজা রাখতে অনুৎসাহিত করতাম। কিন্তু এখন গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে রোগীদের আমরা রোজা রাখার ক্ষেত্রে উৎসাহিত করি। সেক্ষেত্রে অবশ্যই সব সময় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে চলতে হবে এবং যেকোনো সমস্যা হলেই রোজা ভেঙে ফেলতে হবে।
ঢামেকের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. ইন্দ্রজিৎ প্রসাদের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢামেকের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. কামরুল আলম। সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন ভাইস প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ, পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, সহযোগী অধ্যাপক ডা. এম সাইফুদ্দিন, সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মইনুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. ফিরোজ হোসেন, অধ্যাপক ডা. মাকসুদা মৌরি, সহযোগী অধ্যাপক ডা. মীর্জা শরীফুজ্জামান, ডা. মো. মাহমুদ হাসানসহ অনেকে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আফসার আহমেদ মিরাজ। পূর্বের ন্যায় এ সেমিনারে ঢামেকের অন্যান্য বিভাগের চিকিৎসকদের রোগীদের ডায়াবেটিস চিকিৎসার নিয়ম কানুন সম্পর্কে বিস্তারিত নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ সময় প্রায় হাজারের অধিক চিকিৎসক, নার্স ও মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ডায়াবেটিস রোগী চিকিৎসার ক্ষেত্রে সবাই গুগলের প্লে স্টোর থেকে ‘ডায়াবেটিস রমাদান স্কোর’ নামক অ্যাপটি ডাউনলোড করে ব্যবহার করার নির্দেশনা দেন। এ অ্যাপের মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের শর্করার পরিমাণ হিসাব রাখাসহ সব ধরনের ব্যবস্থাপনার হিসাব সহজে রেখে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব।
বাবা-মায়ের ডায়াবেটিস থাকলে সন্তানের ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, বাবা-মায়ের ডায়াবেটিস থাকলে সন্তানের প্রায় শতকরা ৬০ শতাংশ ডায়াবেটিসের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাছাড়া অধিক ওজনধারী ব্যক্তিরাও ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে থাকেন। এ ধরনের ঝুঁকিতে যারা রয়েছেন তারা ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার পরে নয় বরং আগে থেকেই নিয়ম মেনে জীবন যাপনের পরামর্শ দেন তারা।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসকদের ভূমিকা নিয়ে বক্তারা আরও বলেন, রোগীরা যাতে সঠিক সমাধান পান সেজন্য চিকিৎসকদের সংগঠনসহ প্রত্যেকে যার যার জায়গা থেকে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাতে পারেন। রোগীদের কাছে সঠিক তথ্য নিশ্চিত করতে হবে। যদিও অনেক সময় এক্ষেত্রে চিকিৎসকরা মারাত্মক এক ক্রান্তিলগ্নে অবস্থান করেন। কেননা রোগীদের রোজা রাখতে অনুৎসাহিত করতে হয়।
তাছাড়া দেশের ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে ঢাকা মেডিকেল কলেজের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ আধুনিক প্রযুক্তিতে সমন্বিত হয়ে চিকিৎসার মানকে আরও উন্নতিকল্পে কাজ করছে বলেও জানান বক্তারা।
আরও পড়ুন