হাসপাতালের ‘স্টোরে না থাকা’ ওষুধ জব্দ করল দুদক টিম
পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে দ্বিতীয় দফা অভিযান চালিয়ে স্টোরে না থাকা ওষুধ জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) টিম। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) দিনব্যাপী অভিযানে এই ওষুধ জব্দ করা হয়। দুদক পিরোজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ওষুধ জব্দ করেন সহকারী কমিশনার (রাজস্ব) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীরুল কাদের।
দুদক সূত্রে জানা যায়, পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ক্রয়কৃত ওষুধগুলো শুধু কাগজে-কলমে বুঝে নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ২ কোটি টাকা বিল পরিশোধ করে। এরপর গত ২৭ জানুয়ারি পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে ১ কোটি ৭৬ লাখ ২১ হাজার ৬০০ টাকার ওষুধ ও এমএসআর পণ্য গরমিলের অভিযোগের সত্যতা পায় দুদক। এরপর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোববার ওই গরমিলকৃত ওষুধ ও এমএসআর পণ্য স্টোররুমে নেওয়ার চেষ্টা করে। গোপনে খবর পেয়ে দুদক একটি পিকআপ বোঝাই শতাধিক কার্টনে ২২ প্রকারের ৯৪ হাজার ১৯৯ পিস ওষুধ ও এমএসআর পণ্য জব্দ করে।
দুদক সূত্রে আরও জানা যায়, পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে ওষুধ ও এমএসআর পণ্য সরবরাহের জন্য সামসুল আরেফিন নামে এক ঠিকাদারের মালিকানাধীন সাউথ বাংলা কর্পোরেশনকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাসপাতালে প্রায় ২ কোটি টাকার কোনো পণ্য সরবরাহ না করলেও কাগজে সেগুলোকে সরবরাহ করা হয়েছে দেখিয়ে ঠিকাদারকে পুরো বিল পরিশোধ করে দেন।
দুদকের পিরোজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাসপাতালে প্রায় ২ কোটি টাকার কোনো পণ্য সরবরাহ না করলেও কাগজে সেগুলোকে সরবরাহ করা হয়েছে দেখিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় বিল তুলে নেন। ওষুধ প্রাপ্ত না হয়েও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মিথ্যাভাবে ওষুধ রেজিস্ট্রারে সংযুক্ত করেন এবং বিতরণ দেখান। প্রকৃত পক্ষে ওষুধ আসেনাই। এতে প্রমাণ হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশে এই দুর্নীতি হয়। এ কারণেই রাতের আঁধারে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আজ ওষুধ নিয়ে আসেন এবং আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তা জব্দ করেছি।
এ বিষয়ে পিরোজপুরের সিভিল সার্জন মো. মিজানুর রহমান বলেন, এই ওষুধগুলো ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ক্রয়কৃত তখন আমি এখানে যোগদান করিনি। আমি তখন এখানে ছিলাম না। তবে ওষুধগুলো আরএমও এবং স্টোর কিপার বুঝে নেন। তারপর থেকে এই ওষুধের সম্পূর্ণ বিষয় আরএমও এবং স্টোর কিপারের স্বাক্ষর ছাড়া নড়চড়ের সুযোগ নাই।
আরও পড়ুন