Advertisement
Doctor TV

বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫


ডেঙ্গুর জিনোম সিকুয়েন্সিং নিয়ে কাজ চলছে : বিএসএমএমইউ ভিসি

Main Image

বিএসএমএমইউয়ে ডেঙ্গু মোকাবেলায় বর্তমান পরিস্থিতি ও আমাদের যৌথ দায়বদ্ধতা শীর্ষক সচেতনতামূলক সেমিনার


ডেঙ্গুর জিনোম সিকুয়েন্সিং নিয়ে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, বিএসএমএমইউর উদ্যোগে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী রোগীদের ডেথ রিভিউ হচ্ছে। ডেঙ্গুর জিনোম সিকুয়েন্সিং নিয়ে কাজ চলছে। খুব শীঘ্রই তা জানানো সম্ভব হবে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কোনো কোনো রোগীর রেনাল ফেইলর, হেপাটো ফেইলর হচ্ছে। এসব ব্যাপারে কাজ হচ্ছে বলে জানান বিএসএমএমইউ ভিসি। 

রোববার (২০ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে ডেঙ্গু মোকাবেলায় বর্তমান পরিস্থিতি ও আমাদের যৌথ দায়বদ্ধতা শীর্ষক সচেতনতামূলক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে ভিসি এসব কথা বলেন। 

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রো-ভিসি (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ মনিরুজ্জামান খান।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বিএমএর সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ্, অতিরিক্ত সচিব ডা. আসরাফি আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. এ. এস. এম মাকসুদ কামাল, নিপসনের পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম সারোয়ার, বিএসএমএমইউর ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আফজালুন্নেসা প্রমুখ মতামত ব্যক্ত করেন।

অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ডেঙ্গু মোকাবেলায় সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে সংযুক্ত করতে হবে। স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ডেঙ্গু প্রতিরোধে অংশগ্রহণ করার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। ছাত্রদের যার যার বাড়িকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব দিতে হবে। ওয়ার্ড কমিশনারকে তার এলাকা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য বিভিন্ন এনজিও, রাজনৈতিক সংগঠন, ব্যক্তিবর্গ ও স্কুলের শিক্ষক, ছাত্রদের নিয়ে কাজ করলে এ সমস্যা থেকে অনেক পরিত্রাণ পাওয়া যাবে। স্কুল কলেজ, বিভিন্ন এনজিও আছে তারা কাজ করলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ আসবে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে উন্নয়ন হয়েছে বলেই চারদিকে ভবন তৈরি হচ্ছে। এ ভবন তৈরির সময় অনেক জায়গায় পানি জমে থাকে। এসব ভবনের পানি জমি থাকলে মশা সৃষ্টি হবে। পানি জমি থাকলে ঠিকাদারদেরকে জরিমানার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। থানাগুলোতে অনেক পুরানো পরিত্যক্ত গাড়ি আছে। সেখানে পানি জমে। সেখান থেকেও মশা হয়। হাসপাতালগুলোতে দেখতে হবে কোন অঞ্চলের রোগী বেশি আসছে। সেই অঞ্চলের জনপ্রতিনিধিকে বলতে হবে আপনার এলাকায় রোগী বেশি। আপনার এলাকায় ডেঙ্গু রোগ বাহক মশা নিধন করতে হবে। এই দায়িত্ব সবাইকে নিতে হবে।

অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, মশা নিধনে যেসব কীটনাশক রয়েছে তা অনেকটা প্রতিরোধী হয়ে উঠছে। এজন্য মশা নিধনে ব্যবহৃত কীটনাশকের মান বৃদ্ধিতে নজর দিতে হবে, প্রয়োজনে গবেষণা করতে হবে, কোনটি কাজ করে সেটি ব্যবহারের পরামর্শ দেবেন। এর বাইরেও আমরা শুনেছি, সিঙ্গাপুরে আরেকটা মশা রয়েছে। যেটি ডেঙ্গু মশা খেয়ে ফেলে। গাপ্পাও মাছও মশা নিধনে ব্যবহার করতে হবে।

অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, আমরা ডেঙ্গুর ভ্যাক্সিন নিয়ে ভাইরোলজিস্ট, ইমিউনোলজিস্ট নিয়ে কমিটি করে দিয়েছি। যখনই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যদি কোন ভ্যাক্সিন অনুমোদন দেয়, সেটি নিশ্চয়ই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এনে দেবেন। প্রতিবছর তাপমাত্রা ২ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে ডেঙ্গুও বৃদ্ধি পাবে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি রোধে বৃক্ষরোপণ করতে হবে।

ইমিরেটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, ডেঙ্গু ভাইরাস প্রতিরোধে টিকা সহজলভ্য না হওয়ার এবং টিকা নিয়ে বিতর্ক থাকায় এই টিকা প্রয়োগ করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া বেশির ভাগ নারী, তাদের অনেকে অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তাই গর্ভবতী মা ও শিশুদের জন্য বাড়তি সতর্কতার রাখতে হবে। ডেঙ্গু হলে এন্টিবায়োটিক দেয়া যাবে এমনটা ঠিক না। ডেঙ্গুর চিকিৎসা হলো লক্ষণ নির্ভর। জ্বরের সঙ্গে যে রোগ হয়, তার চিকিৎসা দিতে হবে। চিকিৎসক যদি মনে করেন, এন্টিবায়োটিক দেয়া প্রয়োজন তবে রোগীকে তাই দেয়া উচিত। আবার ডেঙ্গু হলেই প্লাটিলেট দিতে হবে এমনটাও নয়। আগে রোগীর অবস্থা কেমন তা জানতে হবে।

অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ এবং প্রিভেনটি এন্ড সোস্যাল মেডিসিন অনুষদের ডিন ও পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আতিকুল হক। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স (মেডিক্যাল এডুকেশন) বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. রাসেল আহমেদ।

আরও পড়ুন