Advertisement
Doctor TV

বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫


৭৯টি বৈধ কারখানায় তৈরি হচ্ছে নকল ওষুধ 

Main Image

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কাছে প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা সরবরাহ করেছে গোয়েন্দা সংস্থা


নকল ওষুধ তৈরি করছে দেশের বেশ কয়েকটি বৈধ কারখানায়। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর অনুমোদিত ৭৯টি ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক কারখানায় বিভিন্ন নামিদামি অ্যালোপ্যাথিক কোম্পানির ওষুধ নকল করা হয়।

গোয়েন্দা সংস্থা বলছে রাজধানীর মিটফোর্ডকেন্দ্রিক একটি মুনাফালোভী চক্র ওষুধ ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে তা ছড়িয়ে দিচ্ছে প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জে। ইতোমধ্যে তারা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কাছে প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা সরবরাহ করেছে ।

ডিবি জানিয়েছে, দেশীয় ওষুধের পাশাপাশি এসব প্রতিষ্ঠানে নকল করা হচ্ছে বিদেশি নামিদামি ওষুধও। এগুলো উৎপাদন ও বিপণনের কাজে জড়িত একাধিক সংঘবদ্ধ চক্র। আর নকল ওষুধ বিপণনের বড় হাট রাজধানীর মিটফোর্ড। এখান থেকেই অসাধু চক্র কুরিয়ারের মাধ্যমে নকল ওষুধের চালান পাঠিয়ে দেয় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ফার্মেসি মালিকদের কাছে। অধিক লাভের আশায় জেনেশুনেই ফার্মেসি মালিকরা তা কিনে নিচ্ছে।

ডিবি আরো জানিয়েছে, হুবহু ‘আসল’ মোড়কে গ্যাস্ট্রিক, ক্যানসার, ডায়াবেটিস, কিডনি রোগসহ বিভিন্ন জটিল রোগের নকল ওষুধ বাজারে ছাড়ছে সংঘবদ্ধ চক্র, যা দেখে ভোক্তাদের আসল-নকল পরখ করা অনেকটাই দুঃসাধ্য। তথ্য রয়েছে, এ চক্রকে সহযোগিতা করছে অতি মুনাফালোভী কতিপয় ফার্মেসি মালিক।

এদিকে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, নকল, ভেজাল ও নিম্নমানের এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ২ হাজার ৩৬টি মামলা করা হয়েছে। জরিমানা আদায় করা হয়েছে ২ কোটি ৬৭ লাখ ৫৪ হাজার ৩০০ টাকা।

গোয়েন্দা সূত্র বলছে, বৈধ বিভিন্ন ইউনানি আয়ুর্বেদিক ওষুধ কারখানায় তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির বহুল ব্যবহৃত নকল ওষুধ। আটা, ময়দা, রং ও ঘনচিনি মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে এসব নকল ওষুধ। পরে তা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে অলিগলিসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ফার্মেসিগুলোয়, যা রোগ সারানোর বদলে ভোক্তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, রাজধানীর ফকিরাপুলকেন্দ্রিক প্যাকেজিং ব্যবসা গড়ে উঠেছে। বিভিন্ন নামিদামি ওষুধ কোম্পানিগুলো এসব কারখানা থেকে বিভিন্ন ওষুধের মোড়ক তৈরি করে। কিছু প্যাকেজিং কারখানার অসাধুরা অর্ডারের অধিক পরিমাণে মোড়ক তৈরি করে, যা পরে নকলকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বিক্রি করে দেয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশে অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ উৎপাদনের জন্য ২৮৪টি কোম্পানির অনুমোদন রয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের। এছাড়া ২৮১টি ইউনানি, ৩৪টি হারবাল ও ২১২টি আয়ুর্বেদিক কোম্পানিকেও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ইউনানি, হারবাল ও আয়ুর্বেদিক কোম্পানিগুলোর কিছু স্বার্থান্বেষী মালিক তাদের নিজস্ব ওষুধ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন অ্যালোপেথিক কোম্পানির নকল ওষুধ তৈরি করছে। তাদের কাছ থেকে মিটফোর্ডকেন্দ্রিক কিছু চক্র এসব ওষুধ কিনে এনে দেশব্যাপী বাজারজাত করছে।

আরও পড়ুন