বর্তমান লাইফস্টাইল অনেক ধরনের ক্যান্সারের জন্য দায়ী।
মানব শরীরের জটিল রোগগুলোর মধ্যে ক্যান্সার অন্যতম। দেশে মরণব্যাধি ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, বিশ্বে প্রতিবছর ৮২ লাখ মানুষ ক্যান্সারে মৃত্যুবরণ করে। বিশেষ করে সাড়ে ১০ কোটি নারী ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হন।
আশঙ্কাজনক খবর হলো, দ্বিতীয় এ মরণব্যাধিতে আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই হচ্ছে বাংলাদেশসহ তৃতীয় বিশ্বের নাগরিক।
এমন পরিস্থিতিতে শুক্রবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব ক্যান্সার দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য- ‘আসুন ক্যান্সার সেবায় বৈষম্য দূর করি’।
সারাবিশ্বে এই দিনটি ইউনিয়ন ফর ইন্টারন্যাশনাল ক্যান্সার কন্ট্রোল নামক একটি বেসরকারি সংস্থার নেতৃত্বে উদযাপন করা হয়, যা আগে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন নামে পরিচিত ছিল।
দিবসটি উদযাপনের উদ্দেশ্য হলো মারাত্মক ও প্রাণঘাতী এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া এবং এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের সাহায্য করার জন্য মানুষকে উৎসাহিত করা।
ক্যান্সারের ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশ ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশগত কারণে হয়ে থাকে। বাকি ১০ শতাংশ বংশানুক্রমে হয়। বিশেষ করে বর্তমান লাইফস্টাইল অনেক ধরনের ক্যান্সারের জন্য দায়ী।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যাদের ব্যায়াম, হাঁটাচলা কম করা হয়, মুটিয়ে যাবার ফলে তাদের ক্যান্সার হতে থাকে। নারীদের ক্ষেত্রে মুটিয়ে যাওয়ার ফলে স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। যারা ফিজিক্যালি ইন-অ্যাকটিভ থাকেন, তাদের কনস্টিপেশন হয়। এর প্রভাবে খাদ্যনালীর ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
প্রায় ৪০ ভাগ ক্যান্সারের প্রধান কারণ ধুমপান। এর প্রভাবে ফুসফুস, মুখগহ্বর, খাদ্যনালী, প্যানক্রিয়াস, কিডনি, মূত্রথলির, পাকস্থলী, এমনকি ব্লাড ক্যান্সারও হয়ে থাকে। এছাড়া অ্যালকোহল মুখের ক্যান্সার, লিভারের ক্যান্সার, প্যানক্রিয়াসের ক্যান্সার এবং কিডনির ক্যান্সার ঘটাতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীদের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে প্যানক্রিয়াটিক ক্যানসার, হেপাটোবিলিয়ারি ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
কেউ কেউ মাংস জাতীয় খাবার বা চর্বিযুক্ত মাংস বেশি খেয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এক্ষেত্রে রেকটাম এবং কোলন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
বাইরের খাবার বিশেষ করে ফাস্টফুড বেশি পরিমাণে খেলে ওবেসিটি বা মুটিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। ওবিসিটি অনেকগুলো ক্যান্সারের কারণ। কিছু কিছু খাবারে স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি পরিমাণে থাকলে খাদ্যনালীর ক্যান্সার বা কলোরেক্টাল ক্যান্সার বেশি হয়। এছাড়া ব্রেস্ট ক্যান্সার, কিডনি ক্যান্সারও হতে পারে।
চিকিৎসকরা মনে করেন, নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ক্যান্সারের রোগ তাড়াতাড়ি ধরা পড়ে এবং সেক্ষেত্রে চিকিৎসা সহজ হয়।
তারা বলছেন, ক্যান্সার বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন। এটা কী ধরনের রোগ, কী কী কারণে ঝুঁকি বাড়ে, প্রতিরোধের জন্য কী কী করণীয় সে বিষয়ে সচেতনতা জরুরি।
আরও পড়ুন