Ad
Advertisement
Doctor TV

মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫


অন্তঃসত্ত্বাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও ইনসুলিন নেওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

Main Image

একবার যদি গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হয়, সাধারণত ৮০ ভাগ রোগী বাচ্চা ডেলিভারির পর ভালো হয়ে যান।


লাইফস্টাইলের অসুখ আমাদের গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের দিকেও হাত বাড়ায়। আমাদের দেশে ও সারা পৃথিবীতে গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে।

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হলো- অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরেই যে ডায়াবেটিস ধরা পড়ে, আগে থেকে তার ডায়াবেটিস ছিল না। সেটাকে বলা হয় গর্ভকালীন ডায়াবেটিস।

গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে সুগার নিয়ন্ত্রণ সাংঘাতিক গুরুত্বপূর্ণ মা এবং শিশুর সুস্বাস্থ্যের জন্য। গর্ভকালীন ডায়াবেটিস যদি সময়মতো ধরা না পড়ে এবং সঠিক চিকিৎসা না হয়, তাহলে গর্ভপাত, বাচ্চার জন্মগত ত্রুটি এবং শেষের দিকে বাচ্চা পেটের মধ্যে মারা যাওয়াসহ বৃহৎ আকারে বাচ্চা হওয়া, বাচ্চা জন্মানোর পর সুগার নিল হয়ে যাওয়া এরকম আরও অনেক সমস্যার সম্মুখীন আমাদের হতে হয়।

একবার যদি গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হয়, সাধারণত ৮০ ভাগ রোগী বাচ্চা ডেলিভারির পর ভালো হয়ে যান। কিন্তু তারপরও বাচ্চা ডেলিভারির ছয় সপ্তাহ পর তার ব্লাড সুগার দেখতে হবে যে কি অবস্থায় আছে। পরে যদি উনি সব সময় ভালো থাকেন, তাহলে পরবর্তীতে গর্ভধারণের আগে এটা হতে হবে প্ল্যানড প্রেগন্যান্সি। প্রি কনসেপশন কেয়ার নিয়ে ডায়াবেটিস চেক করে তারপর তাকে গর্ভধারণের পরিকল্পনা করতে হবে।

আর গর্ভকালীন সময়ে সুগার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এন্ডোক্রাইনোলজিস্টরা শুধু ইনসুলিন ব্যবহার করেন। কেন ইনসুলিন? ডায়াবেটিসের যে ওষুধগুলো আমরা ব্যবহার করি, সেগুলো দিয়েও গর্ভকালীন অবস্থায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু এগুলো বাচ্চার জন্য নিরাপদ নয়। মা এই ওষুধগুলো খেলে এগুলো বাচ্চার শরীরে চলে যায়। কিন্তু ইনসুলিন মায়ের শরীরের রক্তে মিশে গেলেও বাচ্চার শরীরে ঢুকতে পারে না। যেই রক্তনালী দিয়ে ইনসুলিন বাচ্চার শরীরে ঢুকবে সেখানে একটা এনজাইম থাকে, এই ইনসুলিনকে অকার্যকর করে দেওয়ার জন্য। শুধু ইনসুলিন দিয়ে মায়ের কন্ট্রোল করা ব্লাডটা সার্কুলেশন দিয়ে বাচ্চার শরীরে যাবে এবং একটি হেলদি বাচ্চা আল্লাহর রহমতে আল্লাহ আমাদের উপহার দেন।

গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের একমাত্র চিকিৎসা হলো ইনসুলিন। আর আমাদের ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলো অনেক ধরনের ইনসুলিন তৈরি করেন। সব ইনসুলিন আবার গর্ভকালীন সময়ের জন্য রিকমেন্ডেড না। সুতরাং অভিজ্ঞ চিকিৎসকের কাছ থেকে সঠিক মাত্রার ইনসুলিন দেওয়ার পরামর্শ নিতে হবে। আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে- বাচ্চা বড় হবে, প্রতিদিন ইনসুলিনের মাত্রা বাড়তে পারে। এতে ভয়ের কিছু নেই। ইনসুলিন যতটা লাগবে, বাচ্চার সুস্থতার জন্য ডেলিভারির শেষ সময় পর্যন্ত ইনসুলিন নিতে হবে।

এই যে গর্ভকালীন মায়ের ডায়াবেটিস হলো, তার যদি বাচ্চা ডেলিভারির পর ডায়াবেটিস থেকেই যায়, তাহলেও ইনসুলিন নিয়ে বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। কারণ মুখে খাওয়া ট্যাবলেটগুলো বুকের দুধ দিয়ে বাচ্চার শরীরে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং বাচ্চার সুগার নিল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। সুতরাং যিনি গর্ভকালীন ডায়াবেটিস আক্রান্ত বা ডায়াবেটিক রোগী মা হয়েছেন, এখন শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে চান, তাহলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তাকে ইনসুলিন দিয়েই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

আরও পড়ুন