দেশে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর অন্যতম কারণ পিসিওএস
পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস)
দেশে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর অন্যতম কারণ পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস)। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) পিসিওএস সচেতনতা মাস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে এতথ্য জানানো হয়।
“পিসিওএস একটি হরমোন জনিত সমস্যা। জানুন, চিকিৎসা নিন।“ এই প্রতিপাদ্যে বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ব্লক অডিটোরিয়ামে বৈজ্ঞানিক সেমিনারটির আয়োজন করে বাংলাদেশ এন্ড্রোক্রাইন সোসাইটি ।
সেখানে জানানো হয়, বিশ্বে প্রতি ১০ নারীর মধ্যে একজন পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম বা পিসিওএস রোগে আক্রান্ত। প্রজনন ক্ষমতাসম্পন্ন ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী নারীরা সাধারণত এ রোগে ভুগছেন। আক্রান্তের মধ্যে ১৫ থেকে ২০ বছর বয়সী কিশোরীর সংখ্যাই বেশি। দেশে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর অন্যতম কারণ এ রোগ।
এ ছাড়া ডায়াবেটিস, হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি, বন্ধ্যত্ব, জরায়ু ক্যান্সারসহ দীর্ঘস্থায়ী অসংক্রামক রোগ বাড়াতে বড় ভূমিকা রাখে পিসিওএস। এ পরিস্থিতিতে পিসিওএস নির্মূলে ওজন নিয়ন্ত্রণ, খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনসহ নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্নিষ্ট চিকিৎসকরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, পিসিওএস নারীর বহুমুখী রোগ সৃষ্টির অন্যতম কারণ। পিসিওএস নিয়ন্ত্রণে দৈহিক ওজন কমানোসহ নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন জরুরি। অনেকে অনেক ধরণের রোগে ভুগেন । সেটি কী রোগ সেটি জানেন না। কিছু উপসর্গ দেখে সুনির্দিষ্ট পরীক্ষার মাধ্যমে কোনটি পলিসিস্টিক, কোনটি হরমোন জনিত রোগ সেটি জানা যাবে। সে অনুযায়ী চিকিৎসা নিলে সুস্থ হওয়া যাবে। পলিসিস্টিক একটি হরমোন জনিত রোগ। এ রোগের ফলে নারীদের পিরিয়ডের অনিয়মতা, ইনফারলিটি ও বন্ধ্যাত্ব হয়ে থাকে। এটি বহুমাত্রিক রোগের সৃষ্টি করতে পারে। এ রোগটির হরমোন জনিত হলেও জীবনাচার পরিবর্তন করে সুস্থ থাকা যায়।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাসেবা ও গবেষণায় আন্তর্জাতিক মানের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। গবেষণায় ভাল করার অনুপ্রেরণা দেবার জন্য আমরা পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা পিএইচডি গবেষণার জন্য ২৬টি থিসিস পেয়েছি। আমাদের প্যানেল অব এক্সাপার্টরা সেগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করছেন। আশা করছি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার মান আরো অনেক বৃদ্ধি পাবে ।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ এন্ড্রোক্রাইন সোসাইটির মহাসচিব সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম ও বাংলাদেশ পিসিওএস টাস্কফোর্সের মহাসচিব সহকারী অধ্যাপক ডা. এবিএম কামরুল হাসান ।
সেমিনারে প্যানেল অব এক্সাপার্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এন্ড্রোক্রাইন সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. ফারুক পাঠান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ড্রোক্রাইনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মুহম্মদ আবুল হাসানাত ও অধ্যাপক ডা. এস এম আশরাফুজ্জামান।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন, উপ উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান।