রাতের খাবার কখন খাবেন, কতটুকু খাবেন?
পুষ্টিবিদ তপতী সাহা
আমরা অবশ্যই আমাদের খাবার সময়মতো স্বাস্থ্যকরভাবেই খাবো। আমরা অবশ্যই চেষ্টা করবো রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে আমাদের রাতের খাবার শেষ করার। রাতের খাবার অবশ্যই হতে হবে ভারসাম্যপূর্ণ ও হালকা।
অনেকে রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১০টায় রাতের খাবার খেয়ে থাকেন এবং তারপরই ঘুমাতে চলে যান। এর ফলে আমাদের শরীরের কোনো নড়াচড়া তেমন হয় না। সুতরাং আমার অনুরোধ থাকবে যে আমরা ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে রাতের খাবার খাবো।
যাদের অন্যান্য রোগ আছে, তাদের এ ব্যাপারে অবশ্যই আরও বেশি মনযোগ দিতে হবে। যাদের ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, লিভার রোগ আছে, তাদের এক্ষেত্রে আরও বেশি সচেতন হতে হবে যাতে সময়মতো রাতের খাবার গ্রহণ করা যায়।
রাতের খাবার তাড়াতাড়ি খেলে অনেকেরই অনুযোগ থাকে রাতে ঘুমাতে দেরি হয় এবং আবার খিদে পেয়ে যায়। সেক্ষেত্রে বলবো- রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে আমাদের স্বাস্থ্যকর পানীয় খেতে হবে। বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিক রোগী, তারা কিন্তু রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে কিছু না খেলে হাইপোগ্লাইসেমিক ফিল করবেন। এক্ষেত্রে আমি বলবো- রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস দুধ পান করার জন্য। কারণ আমাদের ভালো ঘুমের জন্য দুধ অনেক বেশি উপকারী। দুধ আমাদের ব্রেইনের সেরোটোনিনের মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে। আমাদের শরীরে ভিটামিন ‘ডি’ এবং ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণ করার জন্য অবশ্যই আমাদের খাদ্যতালিকায় দুধ রাখতে হবে। অনেকের আবার ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স আছে অর্থাৎ দুধ খেলে তাদের প্রবলেম হয়, সে ক্ষেত্রে তাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে তারা দুধ না খেলেও দুগ্ধজাতীয় খাবার খাবেন।
এছাড়া টকদই হতে পারে তাদের জন্য খুব ভালো একটি খাবার। যাদের ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স আছে, তাদের দই খেলে সেরকম খুব একটা সমস্যা হয় না।
অনুরোধ থাকবে রাতে ঘুমানোর আগমুহূর্তের খাবারটা ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে শেষ করবেন। রাতের খাবার ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে শেষ করার চেষ্টা করবেন। রাত ১২টার পরে আমরা আর কোনো রকম খাবার খাবো না। রাত ১২টার পর খাবার খেলে সেটা আমাদের অ্যাবডোমিনাল ডিস্কম্ফর্ট আনবে।
সারা দিনে সব খাবারের পাশাপাশি আমাদের অন্তত দুই থেকে আড়াই লিটার পানি খেতে হবে এবং তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে। কারণ তরল আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি দরকার। কারণ, এই করোনা মহামারী পরিস্থিতিতে আমরা যখন আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো কথা বলছি, সে ক্ষেত্রে আমাদের খাবার-দাবারের পাশাপাশি তরলজাতীয় খাবারও আমাদের শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, যেটা আমাদের শরীরের টক্সিন পদার্থ কমাতে সাহায্য করবে।
লেখক: তপতী সাহা
কো-অর্ডিনেটর
ডায়েট্রি অ্যান্ড পেশেন্ট নিউট্রিশন সার্ভিসেস
স্কয়ার হসপিটাল লিমিটেড