
ছবিঃ ডক্টরটিভি
‘সুস্থ কোমর, স্বস্তির জীবন; কিভাবে পাবেন?’ শীর্ষক একটি উন্মুক্ত শিক্ষা প্রোগ্রামের আয়োজন করেছে সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগ। সোমবার সকালে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. মুহিব্বুর রহমান। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের মহাপরিচালক মো. আব্দুর রাজ্জাক সরকার।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই কোমর ব্যথা বিষয়ে বিস্তারিত প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. মুহিব্বুর রহমান। তিনি জানান, “পৃথিবীতে বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে সমস্ত মানুষের মাঝে ৮০ ভাগ মানুষ কখনও কখনও তীব্র কোমর ব্যথায় ভুগতে পারেন। তবে সকল কোমর ব্যথাই দুশ্চিন্তার কারণ নয়, এবং নিজের নিয়মেই সেটা ঠিক হয়ে যায়। প্রতি লক্ষ্যে এক তৃতীয়াংশ নারী কোমর ব্যথায় আক্রান্ত হন। পুরুষরাও পিছিয়ে নেই যদিও তা নারীদের তুলনায় কমই বলা চলে।”
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, “২০১৫ সালের এক গবেষণায় দেখা যায় সেখানে কোমর ব্যথার হার ছিলো ২৭.২% যার মাঝে কায়িক শ্রম যারা করেন তাদের হার ৩১.৩%। সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে এই রোগের হার ছিলো ২৭.২৩%। এদের মাঝে বেশি রোগী ছিলেন ৪১ থেকে ৬০ বছরের রোগী।”
কোমর ব্যথার কারণ প্রসঙ্গে তিনি জানান, “সাধারণত যেকোন ট্রমা বা ইনজুরির কারনে কোমর ব্যথা হতে পারে। এছাড়া বার্ধক্যে হাড় ক্ষয় এর অন্যতম কারণ এমনকি স্থুলতা ও মানসিক চাপের কারণেও অনেক সময় কোমর ব্যথা হয়ে থাকে। তাই কোমর ব্যথা কয়েকদিন স্থায়ী হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এক্ষেত্রে শুধু ওষুধ নির্ভর না হয়ে নিয়মিত ব্যায়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের জন্য ছিল একটি লাইভ সেশন, যেখানে দেখানো হয় কীভাবে কোমর ব্যথা প্রতিরোধ করা যায় এবং কোমর ব্যথার সময় কোন ধরনের ব্যায়াম করতে হবে। এই সেশন পরিচালনা করেন সহকারী অধ্যাপক ডা. এ.টি.এম. রিয়াজ উদ্দিন।
সবশেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অনুষ্ঠানের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে হাসপাতালের মহাপরিচালক মো. আব্দুর রাজ্জাক সরকার বলেন, “হাসপাতাল সবসময় চেষ্টা করে চিকিৎসা দেখার জন্য, কিন্তু যদি এরকম প্রতিরোধমূলক অনুষ্ঠানের মাধ্যামে সবাইকে সুস্থ রাখা যায় তাহলে হাসপালতালের উপর চাপ কমে যায়, আমরা সুস্থ থাকি। মুলত ওষুধ খাওয়াটা বড় বিষয় নয়, এখন সেটা আমরা ফ্রী পাই কিংবা কিনে খাই, আমরা যাতে করে সুস্থ থাকি আমাদের সে প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।”
ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের এই সচেতনতামূলক আয়োজনে অংশ নেন বিভাগের চিকিৎসক, ফিজিওথেরাপিস্ট, নার্স এবং হাসপাতালের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের এই উদ্যোগকে অংশগ্রহণকারীরা অত্যন্ত সময়োপযোগী বলে মনে করেন। তাদের মতে, নিয়মিত এমন প্রতিরোধমূলক সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুধু রোগের ঝুঁকি কমায় না, কর্মব্যস্ত জীবনে স্বাস্থ্যসচেতনতা বাড়াতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আরও পড়ুন