বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) অনুমতি ছাড়াই রাজধানীতে চলমান ‘ঢাকা ফার্টিলিটি এক্সপো’তে রোগীদের সেবা দিচ্ছিলেন বিদেশি চিকিৎসকরা। বিষয়টি নিয়ে সরেজমিনে গিয়ে মেলার স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) থেকে রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হয় ৩ দিনের এই মেলা, যার আয়োজক প্রতিষ্ঠান ‘ইকো এক্সপো’। তবে প্রথম দিনই দেখা যায় ভারত ও থাইল্যান্ড থেকে আগত চিকিৎসকরা অংশগ্রহণকারীদের কাউন্সেলিংয়ের পাশাপাশি সরাসরি রোগী সেবা দেন। বিষয়টি নজরে এলে বিকেল ৩টার দিকে মেলাস্থলে উপস্থিত হন সিভিল সার্জন এবং তাৎক্ষণিকভাবে এসব কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেন।
মেলার আয়োজন নিয়ে আয়োজক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা গত ৩ মার্চ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন এবং ২৭ মার্চ মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি-৭ শাখার অনুমোদন পান। পরে হল বুকিংয়ের কপি সংযুক্ত করে ২১ জুন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে (ডিএমপি) অবহিত করা হয়।
তবে আয়োজকদের জমা দেওয়া আবেদনে শুধু ‘মেলা’ ও ‘প্রদর্শনী’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। কোথাও উল্লেখ নেই যে, এতে বিদেশি চিকিৎসকরা রোগী দেখবেন বা চিকিৎসা দেবেন। পাশাপাশি, বিএমডিসির মতো চিকিৎসা পেশা নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমতিও তারা নেয়নি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান বলেন, আয়োজকদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি আছে, কিন্তু পুলিশের অনুমতি নেই, শুধু অবহিত করেছে। তারা বলেছে মেলা, কিন্তু এটি আসলে মেলা নয়। চিকিৎসা, কাউন্সেলিং এবং বিদেশে পাঠানোর প্ররোচনা একসাথে চালাচ্ছে। আমি মৌখিকভাবে তাদের বলে এসেছি যে, স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম বন্ধ করুন। একইসাথে অফিসিয়াল চিঠিও দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মেলার অনুমতি থাকলেও তা যদি প্রযুক্তি বা চিকিৎসাবিষয়ক তথ্য শেয়ারের উদ্দেশ্যে হয়, তাহলে এক কথা। কিন্তু এখানে রোগী দেখা, চিকিৎসা দেওয়া এবং বিদেশে চিকিৎসার জন্য উৎসাহিত করা—এসব কিছুই নিয়মবহির্ভূত। আমাদের নির্দেশনা অমান্য করলে, পরবর্তীতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।
বিএমডিসি থেকে কোনো অনুমতি না নিয়েই বিদেশি চিকিৎসকদের দ্বারা রোগী দেখানোর ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আভাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, দেশের বাইরে থেকে কোনো চিকিৎসক বাংলাদেশে রোগী সেবা দিতে হলে বিএমডিসি'র অনুমতি আবশ্যক। এটি ছাড়া চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা আইনত শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
আরও পড়ুন