Advertisement
Doctor TV

বুধবার, ২৫ জুন, ২০২৫


করোনা সংক্রমণ বাড়লেও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই: ডা. ফজলে রাব্বী চৌধুরী

Main Image


চলতি বছরের মাঝামাঝিতে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়লেও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে সচেতনতা ও সতর্কতা অবলম্বন জরুরি। বাংলাদেশ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে (বিএমইউ) উপস্থাপিত এক গবেষণাভিত্তিক প্রবন্ধে এ কথা বলেছেন বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনিভার্সিটির (বিএমইউ) ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফজলে রাব্বী চৌধুরী। মঙ্গলবার (২৪ জুন) ‘কোভিড-১৯ ট্রেন্ড ২০২৫ ইন বাংলাদেশ: এভিডেন্স বেইসড ইনফরমেশন’ শীর্ষক উপস্থাপনায় এসব তথ্য জানানো হয়।

 

প্রবন্ধে ডা. ফজলে রাব্বী চৌধুরী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ রোগীরা মূলত ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের অন্তর্গত জেএন.১ সাব-ভেরিয়েন্টের দুটি শাখা এক্সএফজি ও এক্সএফসি দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভেরিয়েন্টগুলোকে ‘ভেরিয়েন্ট অফ কনসার্ন’ না বলে ‘ভেরিয়েন্ট অফ মনিটরিং’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। অর্থাৎ, এদের বিষয়ে নজরদারি প্রয়োজন হলেও এখন পর্যন্ত এগুলোর কারণে ভয়াবহ জটিলতা দেখা যাচ্ছে না।

 

তিনি বলেন, বিশ্বের কিছু উন্নত দেশে ফাইজার ও বায়োনটেক কোম্পানি জেএন.১ ভেরিয়েন্ট প্রতিরোধী মডিফায়েড টিকা বাজারে এনেছে, যদিও এই টিকা বাংলাদেশে এখনো সহজলভ্য নয়। তবে যেসব ব্যক্তি আগেই অন্তত তিন ডোজ টিকা নিয়েছেন, তাদের দেহে এই নতুন ভেরিয়েন্টের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট মাত্রায় প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে। তাদের আক্রান্ত হলেও তীব্র রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা তুলনামূলক কম।

তিনি বলেন, বর্তমানে সাধারণ ফ্লু ও কোভিড-১৯ একসঙ্গে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, যাকে ‘ফ্লুরোনা’ নামে অভিহিত করা হচ্ছে। এই মিলিত সংক্রমণ বিশেষ করে তাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ, যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল। যেমন— অতিরিক্ত স্থূল ব্যক্তি, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগী, হাঁপানি বা ব্রঙ্কাইটিসে ভোগা মানুষ, ক্যান্সার রোগী, কিডনি জটিলতায় আক্রান্ত এবং যারা ডায়ালাইসিস বা ট্রান্সপ্লান্ট চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।

 

করণীয় প্রসঙ্গে এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, এই সময়টায় উচ্চঝুঁকির এসব মানুষদের জন্য জনসমাগম এড়িয়ে চলা, বাইরে গেলে সার্জিক্যাল মাস্ক পরিধান, হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার মেনে চলা, বারবার সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়া, সুষম খাবার খাওয়া এবং প্রচুর পানি পান করা জরুরি।

 

প্রবন্ধে আরও বলা হয়, বর্তমানে কোভিড-১৯ এর কারণে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, তবে সচেতনতা ও সতর্কতা অবলম্বন জরুরি। ভাইরাসটি পরিবর্তনশীল প্রকৃতির হওয়ায় এটি পুরোপুরি নির্মূল না হলেও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে এর তীব্রতা এবং সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএমইউর ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম। সভাপতিত্ব করেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) ও ইন্টারনাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, শিক্ষক, চিকিৎসক, রেসিডেন্টবৃন্দ।

আরও পড়ুন