ছবিঃ সংগৃহীত
দেশে আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে মশাবাহিত ভাইরাসজনিত রোগ চিকুনগুনিয়া। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)-এর পরীক্ষায় দেখা গেছে, জ্বর নিয়ে আসা রোগীদের মধ্যে ৮২ শতাংশই চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত। বিজ্ঞানী ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, এটি রোগের ফের ছড়িয়ে পড়ার একটি বড় ইঙ্গিত। তবে এখনো সরকারের তরফে তেমন কোনো সাড়া নেই, যা উদ্বেগজনক।
আইসিডিডিআরবির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জুন থেকে ২১ জুন পর্যন্ত, জ্বরের উপসর্গ নিয়ে আসা ১৭১ জন রোগীর মধ্যে ১৪০ জনের শরীরে চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয়েছে। গত বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্তও প্রায় ৫২ শতাংশ নমুনায় এই রোগের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এমনকি জানুয়ারিতে শনাক্তের হার ছিল ২৬ শতাংশ, আর মে মাসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৪ শতাংশে।
অন্যদিকে, সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, তাদের পরীক্ষাগারে সাম্প্রতিক সময়ে ৩৩৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ৪৫ শতাংশ ক্ষেত্রে চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয়েছে। এই উচ্চ হারকে বিশেষজ্ঞরা ‘উল্লেখযোগ্য এবং উদ্বেগজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন।
চিকুনগুনিয়া ছড়ায় এডিস মশার মাধ্যমে, যা একই সঙ্গে ডেঙ্গু এবং জিকার ভাইরাসও বহন করে। রোগটির সাধারণ উপসর্গের মধ্যে রয়েছে — জ্বর, মাথাব্যথা, শরীর ও অস্থিসন্ধিতে তীব্র ব্যথা, বিশেষ করে কোমর, পিঠ, ও গোড়ালির রগে। কিছু ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা ও স্নায়ুজনিত জটিলতাও দেখা যায়। চিকিৎসা সঠিকভাবে হলে প্রায় ৮৮ শতাংশ রোগী পুরোপুরি সেরে ওঠেন।
জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, ২০১৭ সালে ঢাকাসহ ২৩টি জেলায় চিকুনগুনিয়ার বড় প্রাদুর্ভাব দেখা গিয়েছিল। সে সময় ঢাকাতেই ১৩ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল। এরপর কয়েক বছর তুলনামূলক শান্ত থাকলেও এখন ফের রোগটির উর্ধ্বমুখী প্রবণতা চোখে পড়ছে।
আরও পড়ুন