ছবিঃ সংগৃহীত
সরকার নতুন একটি এনজিওগ্রাম মেশিন, যা বর্তমানে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ব্যবহারবিহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে এই স্থানান্তরের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে, যা চট্টগ্রামের হৃদরোগীদের জন্য আশার সঞ্চার করেছে।
চমেক হাসপাতালে বর্তমানে একটি ক্যাথল্যাব দিয়ে হৃদরোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে, তবে এটি যেকোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে একবার এটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বৃহত্তর চট্টগ্রামের দরিদ্র হৃদরোগীরা দুই সপ্তাহের জন্য চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছিল।
পাঁচ বছর আগে, আওয়ামী লীগ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুটি এনজিওগ্রাম মেশিন বরাদ্দ করেছিলেন। ২০১৮-১৯ এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এইচটিএমএস ও ট্রেড হাউস ক্যাথল্যাব দুটি সরবরাহ করেছিল। তবে দক্ষ জনবল সংকটের কারণে এসব মেশিন চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে, এর মধ্যে একটি মেশিন চমেক হাসপাতালে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
৮ মে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা-১ শাখার উপসচিব মো. শাহাদত হোসেন কবির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হৃদরোগী চিকিৎসার জন্য একটি উপযুক্ত ক্যাথল্যাব মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে স্থানান্তরের ব্যবস্থা নিতে হবে।
চমেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগ জানায়, সেখানে বর্তমানে একটি শিমার্জু ব্র্যান্ডের মেশিন দিয়ে বিভিন্ন চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে, তবে অতিরিক্ত চাপের কারণে গত বছর এটি দুই সপ্তাহ বন্ধ ছিল। ২০২১ সালের শেষের দিকে, আরেকটি মেশিনের পিকচার টিউব নষ্ট হয়ে যায়, যা মেরামত করতে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা খরচ হতে পারে, তবে সেটি মেরামত করা হয়নি।
চিকিৎসকরা বলেন, এনজিওগ্রাম মেশিন সংকটের সমাধান হলে সেবার গতি দ্বিগুণ হবে। চট্টগ্রামে হৃদরোগের হার অন্যান্য জেলার তুলনায় বেশি, এবং গরীব ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের জন্য চমেক হাসপাতালই একমাত্র ভরসা।
এ বিষয়ে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা নজরুল ইসলাম তালুকদার জানান, চমেক হাসপাতালে এনজিওগ্রাম করতে রোগীদের খরচ হয় ৬-৭ হাজার টাকা, যা বেসরকারি হাসপাতালে ২০-২৫ হাজার টাকা হয়ে থাকে। হার্ট রিং স্থাপনে চমেক হাসপাতালে খরচ ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা, কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালে তা দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা হতে পারে।
চমেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের প্রধান ডা. নূর উদ্দিন তারেক বলেন, বর্তমানে একটিমাত্র মেশিন দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে, তবে নতুন মেশিন আসলে সেবা আরও দ্রুত হবে। চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন জানান, অর্থ বরাদ্দ হয়ে গেছে এবং শিগগিরই মেশিনটি আসবে।
আরও পড়ুন