Advertisement
Doctor TV

শুক্রবার, ২০ জুন, ২০২৫


আইসিডিডিআর,বিতে বিশ্ব পরিবেশ দিবসের বিশেষ অনুষ্ঠানমালা

Main Image


বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৫ উপলক্ষে আইসিডিডিআর,বি-র এনভায়রনমেন্টাল হেলথ অ্যান্ড ওয়াশ রিসার্চ গ্রুপের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো এক বিশেষ অনুষ্ঠানমালা। 'প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ করি' এই বৈশ্বিক প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত এই উদযাপনে গবেষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, উন্নয়ন সহযোগী, সরকারি কর্মকর্তা এবং পরিবেশকর্মীসহ ৩ শতাধিক মানুষ অংশ নেন।
 

অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন আইসিডিডিআর,বি-র নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ। তিনি প্লাস্টিক দূষণ এবং নগরের ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার মতো পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সম্মিলিত প্রচেষ্টার গুরুত্ব তুলে ধরেন। 

 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান। মাননীয় সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ প্লাস্টিক দূষণের মতো পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি পরিচ্ছন্ন, সবুজ ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে বৈজ্ঞানিক প্রমাণ এবং প্রতিটি নাগরিকের সম্মিলিত অঙ্গীকারের উপর জোর দেন।
 

আইসিডিডিআর,বি-এর এইচএসপিএসডি-এর সিনিয়র ডিরেক্টর ড. সারা সালওয়ে তার বক্তব্যে এই প্রাণবন্ত উদযাপনকে সফল করে তোলার জন্য সকল বিশিষ্ট অতিথি, প্রতিযোগী এবং অংশগ্রহণকারীদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান।
 

এনভায়রনমেন্টাল হেলথ অ্যান্ড ওয়াশ প্রোগ্রামের প্রধান ও প্রকল্প সমন্বয়ক ড. মো. মাহবুবুর রহমান পরিবেশগত স্বাস্থ্যে আইসিডিডিআর,বি-র গবেষণা এবং প্রমাণ-ভিত্তিক সমাধানের মাধ্যমে অর্জিত উল্লেখযোগ্য সাফল্যের কথা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ও সুপারিশের ওপর জোর দেওয়া হয়, যার সপক্ষে তথ্য-প্রমাণও তুলে ধরা হয়।
 

প্লাস্টিক দূষণ মোকাবেলায় একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পরিহার, প্রাকৃতিক তন্তুর পোশাক বেছে নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। এছাড়া, কমিউনিটি পর্যায়ে বর্জ্য সংগ্রহ ও আলাদা করার সুসংগঠিত উদ্যোগের কথাও বলা হয়। শিল্পের জন্য পরিবেশবান্ধব মোড়ক ব্যবহার এবং সঠিক পরিস্রাবণ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
 

সিসা দূষণের বিষয়ে গবেষণার ফলস্বরূপ, সরকারের সহযোগিতায় একটি উল্লেখযোগ্য পরিবেশগত স্বাস্থ্য সাফল্য হলুদ গুঁড়োতে সিসার দূষণ ২৭% থেকে একেবারে ০%-এ নামিয়ে আনার বিষয়ে তুলে ধরা হয়। সিসা দূষণ নিয়ে আরও বৃহত্তর কর্মপরিকল্পনায় বাতাস, জল এবং মাটি থেকে বিষাক্ত দূষণ দূর করা, লেড-এসিড ব্যাটারির পুনর্ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা, বাজার থেকে সিসাযুক্ত পণ্য সরানো, শিল্প ও যানবাহনের সিসা নির্গমন 

নিয়ন্ত্রণ করা, ভোক্তা পণ্যে সিসামুক্ত মান নিশ্চিত করা এবং মসলা ও খাদ্য পণ্যের নিয়মিত পর্যবেক্ষণ অন্তর্ভুক্ত ছিল।
 

ইটভাটার ধোঁয়া কমানোর জন্য উদ্ভাবনী, কম খরচের সমাধানও উপস্থাপন করা হয়। বাস্তবায়িত সমাধানগুলো উল্লেখযোগ্য ফলাফল দেখিয়েছে, যার মধ্যে কয়লার ব্যবহার ২৩% হ্রাস এবং কার্বন ডাই অক্সাইড ও পিএম২.৫ নির্গমন ২০% হ্রাস। এছাড়াও, হাসপাতালগুলোতে বর্জ্য জল ব্যবস্থাপনার জন্য উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের জরুরি প্রয়োজন তুলে ধরা হয়। গরমে বাইরের কর্মীদের ওপর তাপের প্রভাব মোকাবিলায় কৌশল নিয়েও আলোচনা হয়।
 

অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল প্রতিযোগিতামূলক গবেষণার পোস্টার প্রদর্শনী, যেখানে ৫০০টিরও বেশি অ্যাবস্ট্রাক্ট এর মধ্য থেকে সেরা তিনটি রিসার্চ পেপার উপস্থাপন করা হয়। এছাড়াও, পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ এবং সেগুলোর সমাধান নিয়ে একটি আলোকচিত্র প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। বাছাইকৃত সেরা ছবিগুলো নিয়ে একটি বিশেষ প্রদর্শনী করা হয়। পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধিতে যারা অনুপ্রেরণামূলক কাজ করেছেন, তরুণদের নেতৃত্বে পরিচালিত পরিবেশবান্ধব সেরা উদ্যোগ এবং অসাধারণ অবদানগুলোকে পুরস্কৃত করা হয়।

আরও পড়ুন