২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে প্রথমবর্ষে যাত্রা শুরু করা ১১ হাজারেরও বেশি নতুন মেডিকেল শিক্ষার্থীদের জন্য খোলাচিঠি পাঠালেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন। চিঠিতে তিনি বলেন, ‘‘এরা একদিন আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে নেতৃত্ব দিবে। আল্লাহ তাদের সবাইকে রহমত দান করুন।’’
চিঠির শুরুতেই নবাগত শিক্ষার্থীদের সালাম জানিয়েছেন স্বাস্থ্যের ডিজি। এরপরই তিনি বলেন, ‘‘দেশের ঐতিহ্যবাহী মেডিকেল শিক্ষাঙ্গনে স্বাগতম। ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আজ যারা বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে প্রথম বর্ষে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছ, স্বাস্থ্য শিক্ষা তাধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তোমাদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন। কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে স্কুল ও কলেজের গণ্ডী পেরিয়ে তোমরা মেডিকেল কলেজে পদার্পন করেছ; তোমাদের এ পদযাত্রা সাফল্যমণ্ডিত হোক।’’
চিঠিতে ডিজি বলেন, ‘‘তোমাদের জীবনে আজ একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হল। সেবা, ঔদার্য এবং মানবতার আদর্শে সমুজ্জ্বল এই মহান পেশার প্রস্তুতিপর্ব আজ থেকেই আরম্ভ হল। মেডিকেল শিক্ষা শুধুমাত্র পড়াশোনা কার্যক্রমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং নৈতিকতা এবং মানবিক মূল্যবোধে জাগ্রত হয়ে মানবসেবায় আত্মনিয়োগ করার একটি অনন্য মাধ্যম।’’
অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন বলেন, ‘‘মেডিকেল কলেজের পাঁচ বছরের শিক্ষা কার্যক্রম একটি পাঠ্যক্রম অনুযায়ী পরিচালিত হয়ে থাকে। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধূলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং অন্যান্য কার্যক্রমে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তোমরা একজন পরিপূর্ণ মানবিক গুণসম্পন্ন চিকিৎসক হয়ে গড়ে উঠবে, এই আশা রাখছি। সফল চিকিৎসক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান, দক্ষতা এবং মূল্যবোধ তৈরিতে আমাদের শিক্ষকগণ আন্তরিক ভূমিকা পালন করবেন। শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের সুদীর্ঘ ঐতিহ্য আশাকরি তোমরা বজায় রাখবে। নহপাঠীদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরির মাধ্যমে তোমরা মেডিকেল কলেজসমূহে একটি সুন্দর পরিবেশ তৈরি করবে। তোমরা আজ যারা একসাথে মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা শুরু করেছ, জীবনের দীর্ঘ যাত্রাপথে তারাই সুখে-দুঃখে সাথী হয়ে পাশে থাকবে, দেশাগত জীবনের কঠিন যাত্রায় পরস্পরকে সাথে নিয়ে গড়ে তুলবে একটি সুন্দর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। প্রিয় এ মাতৃভূমিকে সুন্দর করে গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের এক সাথে পালন করতে হবে।’’
স্বাস্থ্য শিক্ষার ডিজি বলেন, ‘‘প্রতিটি মেডিকেল কলেজ দেশের অমূল্য সম্পদ। শিক্ষাঙ্গনে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা আমাদের সকলের পবিত্র দায়িত্ব। দেশকে ভালোবেসে তরুণ সমাজ যেভাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে বুক পেতে দিয়েছিল, সেই আদর্শে অনুপ্রানিত হয়ে তোমরা একদিন আদর্শ চিকিৎসক হয়ে গড়ে উঠবে, এই প্রার্থনা করি। মানবসেবার ব্রত নিয়ে এই মহান যাত্রায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর সর্বদাই তোমাদের পাশে থাকবে।’’
তিনি আরও বলেন, তোমাদের সম্মানিত অভিভাবকবৃন্দকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিবাদন জানাই, সন্তানদের আজকের এই অবস্থানে নিয়ে আসার জন্য তাঁদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। নবীন শিক্ষার্থীদের জন্য রইল দোয়া ও শুভকামনা। তোমাদের ভবিষ্যৎ হোক আলোকিত ও মানবসেবায় উৎসর্গীকৃত। মহান সৃষ্টিকর্তা সর্বদা তোমাদের সহায় হোন।
আরও পড়ুন