বাংলাদেশে শিশুদের গত এক বছরে অপুষ্টির প্রকোপ আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে তীব্র অপুষ্টিতে থাকা শিশুদের সংখ্যা হিসেব করলে বাংলাদেশের অবস্থান উপরের দিকেই থাকবে বলে মন্তব্য করেন বিশেষজ্ঞরা।
বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক বা গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স ২০২৪ এর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে বাংলাদেশে ১১.৯ ভাগ শিশু অপুষ্টিতে আক্রান্ত, যা সর্বশেষ ২০১৬ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী ছিলো ২৪ দশমিক ৭ ভাগ। আর অপুষ্টি জনিত কারণে ২৩ দশমিক ৬ ভাগ শিশুর বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ও ওয়ার্ল্ড হাঙ্গার ইনডেক্স যৌথ ভাবে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এ সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান মাঝারি দেশ গুলোর সাথেই।
অপুষ্টি বোঝার জন্য বেশ কিছু ধরনের পরীক্ষা করা হয়। অপুষ্টির ধরণ, তীব্রতা এবং কারণ নির্ণয় করার জন্য এই পরীক্ষাগুলো করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে শারীরিক পরীক্ষা, যেমন ওজন এবং উচ্চতা মাপা, হাতের উপরের অংশের পরিধি মাপা, এবং রক্ত পরীক্ষা করে ভিটামিন ও খনিজ উপাদানের অভাব নির্ণয় করা।
চিকিৎসকদের মতে অপুষ্টি মূলত তিন প্রকারের হয়ে থাকে; সাধারণ অপুষ্টি, ভিটামিন ও খনিজ অপুষ্টি, স্থুলতা বা অতিরিক্ত ওজন জনিত অপুষ্টি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর নির্দেশনা মেনে বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে শিশুদের তীব্র অপুষ্টির (SAM) চিকিৎসায় বিশেষ এসএএম কর্নার স্থাপন করা হয়েছে। ২০১২ সাল থেকে জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই ৪১০টি কর্নার শিশুদের জন্য আশার আলো দেখাচ্ছে।
জাতীয় পুষ্টি সেবার (এনএনএস) ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. গাজী আহমদ হাসান জানিয়েছেন, এসব কর্নারে শুধুমাত্র চিকিৎসা নয়, বরং F-75 ও F-100 এর মতো প্রয়োজনীয় থেরাপিউটিক খাবার এবং অন্যান্য উপকরণও সরবরাহ করা হয়। প্রশিক্ষিত নার্স ও চিকিৎসকরা শিশুদের দুই-তিন সপ্তাহ ধরে নিবিড় তত্ত্বাবধানে রাখেন। গ্রামের কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকেও অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের এসব বিশেষায়িত কর্নারে পাঠানো হয়, যা তৃণমূল পর্যায় থেকে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সাহায্য করছে।
আরও পড়ুন