Advertisement
Doctor TV

বুধবার, ৪ জুন, ২০২৫


গুণগত সেবার নতুন দিগন্তে বিএমইউ

Main Image


বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে (বিএমইউ) চিকিৎসাসেবা ও শিক্ষার মানোন্নয়নে ক্লিনিক্যাল অডিট নিয়ে ইউনিভার্সিটি স্পেশাল সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মাধ্যমে ক্লিনিক্যাল অডিট, গবেষণা ও শিক্ষা কার্যক্রম পর্যালোচনার মাধ্যমে গুণগত সেবার নতুন দিগন্তে প্রবেশ করলো বিএমইউ। সোমবার (২ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ব্লক অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএমডিসির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। 

 

সেমিনারে জানানো হয়, স্বাস্থ্যসেবার গুণগত মান ও প্রাতিষ্ঠানিক উৎকর্ষ উন্নয়নে এক সাহসী পদক্ষেপ হিসেবে বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনিভার্সিটি “অডিট ফর অ্যাডভান্সমেন্ট: চিকিৎসা মান, শিক্ষা ও সেবার উন্নয়ন” শীর্ষক একটি নতুন কর্মসূচির উদ্বোধন করেছে। এ কর্মসূচিটি রোগীসেবা, পেশাগত প্রশিক্ষণ ও সামগ্রিক সেবার মান উন্নয়নের জন্য একটি কৌশলগত ও ধারাবাহিক প্রতিশ্রুতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে বিএমইউ এর চিকিৎসা ও শিক্ষা বিভাগগুলোর বর্তমান কার্যক্রম পদ্ধতিগতভাবে মূল্যায়ন, দুর্বলতা চিহ্নিতকরণ এবং বাস্তবভিত্তিক পরিবর্তন বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সঠিক অডিট, লক্ষ্যভিত্তিক মতামত এবং সম্মিলিত কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে বিএমইউ চিকিৎসা শিক্ষা, গবেষণা ও ক্লিনিক্যাল উৎকর্ষতার এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। স্বাস্থ্যসেবার গুণগত মান ও রোগীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি, জবাবদিহিতা নিশ্চিতসহ এবং এ সংক্রান্ত বিএমইউ এর বাস্তবিক বিশ্লেষণ, মূল্যায়ন ও ফলাফল নিয়ে এই বিশেষ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। 
 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএমডিসির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, মানসিকতায় পরিবর্তন এনে শুধু সেবা নয়, মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। বিএমইউকে সত্যিকার অর্থে মোহনীয় রূপে রূপান্তর করতে শিক্ষা, সেবা ও গবেষণার মান অবশ্যই উন্নত করতে হবে। বিএমইউ এর বর্তমান তারুণ্য দীপ্ত প্রশাসনের নেতৃত্বে এর সফল বাস্তবায়ন সম্ভব। রোগীদের কাছে চিকিৎসক সমাজের, স্বাস্থ্যকর্মীদের অন্তর্নিহিত প্রতিশ্রুতি হলো তাদেরকে মানসম্মত চিকিৎসাসেবা দেয়া। আন্তর্জাতিক মানদন্ডের নিরিখে সেবা প্রদানকে মূল্যায়ন করতে ক্লিনিক্যাল অডিট এর বিরাট অবদান রয়েছে। ক্লিনিক্যাল অডিট এর সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করে মানসম্মত সেবা প্রদানে সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রস্তুত করা এখন সময়েরই দাবি।   
 

সভাপতির বক্তব্যে বিএমইউ এর ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, চিকিৎসাসেবার গুণগতমান বৃদ্ধিসহ স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নের ক্লিনিক্যাল অডিটের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। এর মাধ্যমেই চিকিৎসাসেবাকে কাঙ্খিত মানে উন্নীত করা সম্ভব।  
 

প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ ক্লিনিক্যাল অডিটের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এবং তিনি ক্লিনিক্যাল অডিট এর ইতিহাস, উদ্দেশ্য, ধরণ, গুরুত্বসহ বিস্তারিত তুলে ধরেন। একই সাথে তিনি সেমিনারে অংশগ্রহণকারী বিজ্ঞনের বিভিন্ন প্রশ্নের প্রজ্ঞাময় উত্তর দেন।  
 

প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলদার তাঁর বক্তব্যে একটি মেডিক্যাল অডিট সেল গঠনের উপর গুরুত্বারোপ করেন। 
 

কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার তাঁর বক্তব্যে ক্লিনিক্যাল অডিট বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেবা প্রদানের ল্যাপস এন্ড গ্যাপস দূর করা সম্ভব বলে উল্লেখ করেন।  
 

বিএমইউ এর রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে ক্লিনিক্যাল অডিটকে সেবা প্রদান মূল্যায়নের ক্ষেত্রে জবাবদিহিতার প্রথম ধাপ বলে উল্লেখ করেন। 
 

সেমিনারে হৃদরোগ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সফি উদ্দিন ‘অডিট ফর এ্যাডভান্সমেন্ট, ইমপ্রুভিং ক্লিনিক্যাল স্ট্যান্ডার্ডস, এডুকেশন এন্ড সার্ভিস এট বিএমইউ’ বিষয়ক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ।
 

ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. কাজী আলী আফতাব, মেডিক্যাল রেফারেল নোট ক্লিনিক্যাল অডিট: বিএমইউ এর স্বাস্থ্যসেবা সহায়তায় গুণগতমান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিষদ মূল্যায়ন শীষর্ক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সেখানে বিভিন্ন বিভাগ নির্বাচিত ১১৩টি রেফারেল নোটের উপর একটি পূর্ববর্তী বিশ্লেষণ করা হয়। বিশ্লেষণে কিছু সংখ্যক  রেফারেল নোটে তারিখ ও সময় না থাকা, শারীরিক পরীক্ষার অভাব, ল্যাব রিপোর্টের অভাব, পর্যাপ্ত ক্লিনিক্যাল তথ্যের অভাব ইত্যাদি পরিলক্ষিত হয় বলে উল্লেখ করা হয়। এ অবস্থা উত্তোরণের লক্ষ্যে স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের জন্য বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন  সুপারিশ তুলে ধরা হয়। 
 

সেন্ট্রাল সেমিনার সাব কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এই বিশেষ সেমিনারে কমিটির  চেয়ারপারসন অধ্যাপক ডা. আফজালুন নেছা ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং ইন্টারন্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. খালেদ মাহবুব মোর্শেদ (মামুন) সঞ্চালনা করেন। 

আরও পড়ুন