Advertisement
Doctor TV

শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫


বিশ্ব ফিস্টুলা দিবস আজ: হাজারে ১.৬৯ জন বিবাহিত নারী রোগটিতে আক্রান্ত

Main Image


বিশ্ব ফিস্টুলা সচেতনতা দিবস আজ (২৩ মে)। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রসবজনিত ফিস্টুলা সম্পর্কে জনসচেতনা বাড়াতে সারা বিশ্বে প্রতি বছর এই দিবসটি পালিত হয়। নানা আয়োজনে বাংলাদেশেও আজ দিবসটি পালিত হচ্ছে।

 

অবস্টেট্রিক ফিস্টুলা হলো প্রসবকালীন জটিলতার কারণে সৃষ্ট একটি গুরুতর শারীরিক অবস্থা, যেখানে দীর্ঘস্থায়ী ও বাধাগ্রস্ত প্রসবের ফলে মূত্রাশয় বা মলদ্বার এবং যোনির মধ্যে একটি গর্ত তৈরি হয়। এর ফলে আক্রান্ত নারী অনিয়ন্ত্রিতভাবে প্রস্রাব বা মলত্যাগে ভোগেন, যা কেবল শারীরিক নয়, বরং মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিকভাবেও তাদের জীবনকে ধ্বংস করে দেয়।

 

ফিস্টুলায় আক্রান্ত নারীরা প্রায়ই পরিবার ও সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন, যা তাদের গভীর হতাশা ও নিঃসঙ্গতার দিকে ঠেলে দেয়।

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে ফিস্টুলা হওয়ার অনেকগুলো কারণের মধ্যে বাল্যবিয়ে, কুসংস্কার, অশিক্ষা, দারিদ্রতা, নূন্যতম যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকা, প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাস করা অন্যতম। বাংলাদেশে ফিস্টুলা সমস্যাটি কত বড় সেটা নিয়ে দীর্ঘদিন ধোঁয়াসা থাকলেও বর্তমানে তা পরিস্কার।

 

পরিসংখ্যান বলছে, দেশে প্রতিদিন গড়ে প্রসবজনিত কারণে মারা যান ১৪ জন নারী। তাদের মধ্যে শতকরা ৮ ভাগ নারীর মৃত্যু হয় বাধাগ্রস্ত বা বিলম্বিত প্রসবের কারণে। তবে বাংলাদেশে ফিস্টুলা রোগীর সংখ্যা কত- এ নিয়ে সঠিক পরিসংখ্যান নেই।

 

ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অব অবস্টেট্রিক ফিস্টুলা সার্জন্সের (আইএসওএফএস) তথ্য মতে, ২০২৪ সালে দেশে ফিস্টুলা আক্রান্ত নারীর অনুমিত সংখ্যা ১৭ হাজার ৪৫৭ জন। এর মধ্যে অস্ত্রোপচার হয়েছে ৩ হাজার ১০৯ জনের। অর্থাৎ ৮২ শতাংশ নারী চিকিৎসার আওতার বাইরে আছেন।

 

তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, আনুমানিক ১ লাখ ২০ হাজার নারী প্রসবজনিত ফিস্টুলায় ভুগছেন। প্রতি এক হাজার বিবাহিত নারীর মধ্যে ১ দশমিক ৬৯ জন প্রসবজনিত ফিস্টুলায় আক্রান্ত।

 

এদিকে জাতিসংঘ এই প্রজন্মেই ফিস্টুলা অবসানের লক্ষ ঘোষণা করেছে। এর সরল অর্থটি হলো- ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বকে ফিস্টুলামুক্ত করা। বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘের এই লক্ষ্যের আলোকে নির্দিষ্ট কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

 

লক্ষ্যমাত্রাটি হলো- ২০৩০ সাল থেকে আর কোনো মহিলা নতুন করে প্রসবজনিত ফিস্টুলায় আক্রান্ত হবেন না। যারা বর্তমানে ফিস্টুলায় আক্রান্ত আছেন, সেটি প্রসবজনিত হোক আর অস্ত্রপচারজনিত হোক, তাদের সবাইকে অপারেশনের আওতায় এনে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা।

 

যেসব ফিস্টুলা রোগী চিকিৎসার পর ভালো হয়ে গেছেন, তাদের মধ্যে যাদের পুনর্বাসন সুবিধা দরকার, তাদের জন্য পুনর্বাসন সুবিধা নিশ্চিত করা। যারা পরিবার অথবা সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন, তাদের পুনর্মিলনের ব্যবস্থা করা। যেসব মহিলা চিকিৎসার পর ভালো হয়নি বা আর ভালো হওয়ার সম্ভাবনাও নেই, তাদের জন্য একটি ধারাবাহিক সেবার ব্যবস্থা করা।

আরও পড়ুন