দেশের সরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে ডেন্টাল সার্জনদের জন্য নতুন পদসৃষ্টি ও নিয়োগ দেয়াসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব বরাবর ৭টি দাবি জানিয়েছে ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ) ডেন্টাল বিভাগ
দেশের সরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে ডেন্টাল সার্জনদের জন্য নতুন পদসৃষ্টি ও নিয়োগ দেয়াসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব বরাবর ৭টি দাবি জানিয়েছে ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ) ডেন্টাল বিভাগ। রোববার (১৬ মার্চ) এনডিএফ ডেন্টাল বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. নুরুল আমিন এবং সেক্রেটারী ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য বলা হয়েছে।
এনডিএফ ডেন্টাল বিভাগের প্রতিনিধিরা রোববার স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দাবিগুলো তুলে ধরেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১৮ কোটি জনসংখ্যার বাংলাদেশ একটি স্বল্পোন্নত দেশ। এই দেশের বেশীর ভাগ মানুষ প্রায়শ দাঁতের নানাবিধ রোগে ভুগে থাকেন। সাম্প্রতিক বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনিভার্সিটির (সাবেক বিএসএমএমইউ) গবেষণায় দেখা যায় বাংলাদেশে মুখ ও মুখ গহব্বর ক্যান্সারে আক্রান্তের হার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। দাঁত ও মুখের ক্যান্সারের বেসরকারি চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। অথচ একজন ডেন্টাল সার্জন প্রাথমিকভাবে রোগ নির্নয় ও চিকিৎসা প্রদান করতে পারলে এটি প্রতিরোধ করা অনেকাংশে সম্ভব। দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেন্টাল সার্জনের সংখা অত্যন্ত নগন্য।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সাড়ে ৭ হাজার জনগোষ্ঠীর বিপরীতে একজন ডেন্টাল সার্জনের প্রয়োজন। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় উপজেলায় ৩-৪ লাখ মানুষের বিপরীতে উপজেলার ৩১, ৫০ ও ১০০ বেডের হাসপাতাল গুলোতে ডেন্টাল সার্জনের পদ মাত্র ১টি। ১০ বেড, ২০ বেডের হাসপাতাল গুলোতে ডেন্টাল সার্জনের কোন পদই নেই। পদের দুর্ভাগ্যজনক অবস্থা অন্যান্য পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতেও বিদ্যমান। ফলশ্রুতিতে দেশের বেশীরভাগ মানুষ সরকারিভাবে মুখ ও দাঁতের স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং হাতুড়ে চিকিৎসকের শরনাপন্ন হতে বাধ্য হচ্ছেন।
এমতবস্থায় দেশের মানুষের মুখ ও দাঁতের স্বাস্থ্য সেবা, মুখের ক্যান্সার প্রাথমিকভাবে নির্ণয়, দুর্ঘটনাজনিত মুখমন্ডলের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম, ডেন্টাল বিভাগ নিম্ন লিখিত দাবীসমূহ পেশ করছে-
১. ১০ শয্যা, ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ডেন্টাল সার্জন পদ সৃষ্টি সহ জেলা, উপজেলা পর্যায়ে প্রতি ৫০ হাজার জনগোষ্ঠীর বিপরীতে একজন সহকারী ডেন্টাল সার্জনের পদ সৃষ্টি করতে হবে।
(বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ৭,৫০০ জনে ১ জন ডেন্টাল সার্জন প্রয়োজন)
২. আসন্ন বিশেষ বিসিএস এ ৫০০টি পদে সহকারী ডেন্টাল সার্জন নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একই সাথে বিসিএস সহ অন্যান্য নিয়োগ পরীক্ষায় ডাক্তারদের আবেদনের বয়স সীমা ৩২ বছর থেকে ৩৪ বছরে উন্নীত করতে হবে।
৩. উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সমূহে উপজেলা পর্যায়ে ৬ষ্ঠ গ্রেডের ৩টি জুনিয়র কনসালটেন্ট (বিষয়ভিত্তিক) এবং ২টি ডেন্টাল সার্জন পদ সৃজন করতে হবে। জেলা পর্যায়ে ৬ষ্ঠ গ্রেডের পাঁচটি জুনিয়র ডেন্টাল কনসালটেন্ট (বিষয়ভিত্তিক) এবং ৫ম গ্রেডের ৪টি সিনিয়র ডেন্টাল কনসালটেন্ট (বিষয়ভিত্তিক) এর পদসহ নবম গ্রেডের ১০ জন সহকারী ডেন্টাল সার্জনের পদ সৃজন করতে হবে।
৪. জনগণকে স্বল্প মূল্যে দন্ত সেবা প্রদান ও প্রাথমিক পর্যায়ে ওরাল ক্যান্সার সনাক্তের লক্ষ্যে ডেন্টিস্ট্রিকে অপারেশনাল প্ল্যানের আওতায় আনতে হবে।
৫. জনগণের সঠিক ও নিরাপদ চিকিৎসা নিশ্চিতে বিডিএস ডিগ্রী ব্যতীত অন্য কেউ দন্ত চিকিৎসা প্রদান করতে পারবে না তা নিশ্চিত করতে হবে।
৬. সরকারি বেসরকারি সব ধরনের বিএসসি ইন ডেন্টাল টেকনোলজিস্ট কোর্স বন্ধ করে বিএসসি ইন ডেন্টাল ল্যাব টেকনোলজি কোর্স চালু করতে হবে।
৭. বিএসসি ইন ডেন্টাল টেকনোলজিস্ট এবং ডিপ্লোমা ইন ডেন্টাল টেকনোলজিস্টদের প্রাইভেট প্র্যাক্টিসের অনুমতি প্রদানের চক্রান্ত বন্ধ করতে হবে। একই সাথে চলমান রীট মামলাসমূহের (সিভিল আপীল নিষ্পত্তি করতে হবে। ৬০/২০১৭, ২৫০১,৩০৮৫/১৮,৫৯০/২৫) দ্রুত
উপরোক্ত বিষয়গুলো জরুরী ভিত্তিতে অনুমোদনের জন্য বিনীত অনুরোধ জানিয়েছে
আরও পড়ুন