ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের উদ্যোগে মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিএসএমএমইউর শহীদ ডা. মিলন হলে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত
ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের উদ্যোগে মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিএসএমএমইউর শহীদ ডা. মিলন হলে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইফতার মাহফিলে অংশগ্রণকারী বিজ্ঞ আলোচকবৃন্দ ইসলামী চেতনাকে জাগ্রত করে সাম্য ও শান্তির ধর্ম ইসলামের আদর্শকে ধারণ করে দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, চাঁদাবাজ মুক্ত, বৈষম্যবিরোধী, আলোকিত, সাম্যের নতুন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করেন।
ফোরামের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. আতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আমীর মো. নুরুল ইসলাম বুলবুল।
মূল বক্তা ছিলেন জেনারেল ও ল্যাপারোস্কপিক সার্জন অধ্যাপক ডা. মো. মতিউর রহমান। পবিত্র মাহে রমজান মাস উপলক্ষে আয়োজিত এই ইফতার মাহফিলে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত যোদ্ধারা অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও বিএসএমএমইউর সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. রুহুল আমিন, অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার ডা. মো. দেলোয়ার হোসেন টিটো, অতিরিক্ত পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. হাসনাত আহসান সুমন, ভিসির একান্ত সচিব সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. রুহুল কুদ্দুস বিপ্লব, সহকারী প্রক্টর ডা. মো. আদনান হাসান মাসুদ, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ডা. সজীব সরকারের পিতা আব্দুল হালিম সরকার, জুলাই অভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধা আকতারুজ্জামানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামাযাতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, পবিত্র রমজান মাস মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার মাস। পবিত্র এই মাসে মহান ¯্রােষ্টার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিজেকে পরির্তন করতে হবে, আত্মার উন্নতি করতে হবে, নিজেকে আরো বেশি শুদ্ধ করতে হবে। নিজেকে পবিত্র ইসলামের সত্যিকারের অনুসারী করতে হবে এবং অন্যকে সত্যিকারের অনুসারী করে তুলতে হবে। আমাদের আত্মকেন্দ্রীয়তা ভুলে সমগ্র মানবজাতির কল্যাণে কাজ করতে হবে। এভাবেই নিজেকে তৈরি করতে হবে। তিনি বলেন, ক্ষমতা দখলের অশুভ লড়াই থেকে বের হয়ে আসতে হবে। দৃষ্টি দিতে হবে সমাজ ও জনকল্যাণে। দেশে ঘটে যাওয়া বিগত কয়েক মাসের কিছু ঘটনা কিছুটা হলেও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে যা কাম্য নয়। বাংলাদেশে সংসদ নির্বাচনই ক্ষমতা বদলের মাধ্যম। আগামী নির্বাচনে জনগণ দল নয়, মার্কা নয়, যে প্রার্থী সৎ ও যোগ্য তাকেই ভোট দিবেন সেটা আশা করি। তিনি তাঁর বক্তব্যে চিকিৎসকদের ইথিক্যাল প্র্যাকটিস উপর গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ জামাযাতে ইসলামীর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আমীর মোঃ নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, মহানবী, বিশ্বনবী হয়রত মুহাম্মদ (সাঃ) হলেন বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত। পবিত্র কোরান ভিত্তিক রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারলে সকল প্রকার অশান্তি থেকে মুক্ত করে শান্তি ও সাম্যের দেশ ও বিশ গড়া সম্ভব। বাংলাদেশে যারা ইসলাম প্রতিষ্ঠার কাজ করেছে, যারা কোরানকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে, ইসলামকে বিকশিত করার চেষ্টা করেছে তাদের উপর অনেক অত্যাচার হয়েছে, যা সত্যিই অত্যন্ত নির্মম। সময় এসেছে মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার। সত্যিকার অর্থেই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ গড়ে তোলার। ন্যায় বিচারের বাংলাদেশ গড়ে তোলার। আমাদেরকে দলের চাইতে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। ইসলামি চেতনাকে ধারণ করে সন্ত্রাসমুক্ত, বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোঃ রুহুল আমিন তাঁর বক্তব্যে তাকওয়া দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে চিকিৎসকদের পেশাগত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
জুলাই গণ অভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধা মো. আকতারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ভাই ভাই। এদেশের জনগণকে সাথে নিয়ে দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সাম্যের বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের হয়ে কেউ ষড়যন্ত্র করলে তাদেরকে রুখে দিতে হবে। ফ্যাসিস্ট ষড়যন্ত্রকারীদের ঠাই বাংলাদেশের মাটিতে হবে না।
আরও পড়ুন