Advertisement
Doctor TV

সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫


ডাক্তার পদবী ব্যবহার সংক্রান্ত রিট নিষ্পত্তির দাবি ইউমবের

Main Image

চিকিৎসক ও চিকিৎসা শিক্ষার্থীদের সংগঠনগুলোর সম্মিলিত উদ্যোগ ইউনাইটেড মেডিকেল অর্গানাইজেশনস্ অব বাংলাদেশ (ইউমব)


দীর্ঘ ১০ বছর ধরে আদালতে ঝুলে থাকা ডাক্তার পদবী ব্যবহার সংক্রান্ত রিট নিষ্পত্তির দাবি জানিয়েছে চিকিৎসক ও চিকিৎসা শিক্ষার্থীদের সংগঠনগুলোর সম্মিলিত উদ্যোগ ইউনাইটেড মেডিকেল অর্গানাইজেশনস্ অব বাংলাদেশ (ইউমব)। ডাক্তার পদবী সংক্রান্ত ২৭৩০/২০১৩ রিটটি ৯০ বার "কজ লিস্ট' এ আসা এবং শুনানি সম্পন্ন হবার পরও রায় প্রদানে অযাচিত কালবিলম্বে চিকিৎসক ও সচেতন নাগরিকবৃন্দ সংক্ষুব্ধ বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ইউমবের বিশেষ বিবৃতিতে এ সব কথা বলা হয়েছে।  

 

বিবৃতিতে গভীর উদ্বেগের সাথে বলা হয়েছে, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টদের পক্ষ থেকে ২০১৩ সালে ডাক্তার পদবী ব্যবহার করার জন্য আদালতে একটি রিট করে দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে বেআইনিভাবে তাদের নামের পূর্বে ডাক্তার পদবী ব্যবহার করে দেশের সর্বস্তরের জনগণের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে। বিগত ১৩ বছরে ৯০ বার কজ লিস্টে আসার পর, এমনকি শুনানির পর্ব গত তিন মাস আগেই শেষ হয়ে যাওয়ার পরও নানাবিধ অদৃশ্য কারণে এই রিটের রায় প্রদান করা হচ্ছে না। 

 

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য পৃথিবীজুড়ে চিকিৎসকদের চিকিৎসা কর্মে সহায়তার জন্য অ্যালাইড হেলথ প্রফেশন রয়েছে, যেখানে নার্স, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট, মিডওয়াইফসহ নির্দিষ্ট কিছু জনশক্তি রয়েছে যারা নির্দিষ্ট কর্ম বাস্তবায়ন করে থাকেন। প্রত্যেকের উচিত তাদের নিজস্ব অবস্থানের স্বকীয়তা বজায় রেখে নির্ধারিত কাজ বাস্তবায়ন করা। চিকিৎসক বাদে কেউ নিজেদেরকে চিকিৎসক হিসেবে দাবি করে বসলে পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধসে পড়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।

 

এভাবে জনগুরুত্বপূর্ণ একটি রিটকে বারবার পেছানোর মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষকে সঠিক স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তির মৌলিক ও রাষ্ট্রীয় অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। যারা ডাক্তার না তারা নামের আগে ডাক্তার ব্যবহার করে চিকিৎসা প্রদানের মাধ্যমে জনগণকে প্রতারিত করে যাচ্ছেন। ফলস্বরূপ অবাধে শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিকগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে, অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স দেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, যা এ দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য একটি বিশাল হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অবাধে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ব্যবহৃত হচ্ছে যা সাধারণ জনগণের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে নানাবিধ জটিল ও দুরারোগ্য রোগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এভাবেই অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছে দেশের জনসাধারণ, যা স্বাস্থ্য বাবস্থা ভেঙে পড়ার অন্যতম কারণ।

 

জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যখন রাষ্ট্রের সকল সেক্টরকে নিয়মতান্ত্রিক আর সুশৃঙ্খল করার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে, ঠিক সেই সময়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার চরম অব্যবস্থাপনার অন্যতম কারণ এই অ-চিকিৎসকদেরকে চিকিৎসক হিসেবে চিকিৎসা দেওয়ার বৈধতা দেওয়া এই দেশে কখনোই কাম্য নয়। সর্বশেষ শুনানিতে বিচারক সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, মঙ্গলবার আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারির পর আর কোনো সময় দেওয়া হবে না এবং ঐদিনই রায় প্রদানের তারিখ ঘোষণা করা হবে। দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট, বর্তমানে বিদ্যমান আইনসিদ্ধ, ২০০৭ সালেই আদালতে সমাধিত এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে রায় প্রদানে লাগামহীন দীর্ঘসূত্রিতা আমরা আর দেখতে চাই না।

 

অনতিবিলম্বে এই রিটের নিষ্পত্তিকরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের নিকট আমরা উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। অনাথায় দেশের সচেতন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও জনতা ক্রমান্বয়ে আদালত এবং সরকারের উপর আস্থা হারাতে বাধ্য হবে।

 

উল্লেখ্য, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টদের পক্ষ থেকে আদালতে বর্তমানে তিনটি রিট চলমান,

 

১. ডাক্তার পদবী ব্যবহার সংক্রান্ত, ২৭৩০/২০১৩

২. ডাক্তার পদবী সংক্রান্ত 'বিএমডিসি অ্যাক্ট ২০১০ এর ধারা ২৯" কে চ্যালেঞ্জ করে, ১৩০৪৬/২০২৪

৩. আপডেটেড ঔষধ, অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রাইব করার বৈধতা চেয়ে, ১৩৪৬২/২০২৪

আরও পড়ুন