মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় পরিবর্তনের পরিকল্পনা, আসনসংখ্যাও কমতে পারে
দক্ষ ও মানবিক চিকিৎসক তৈরির লক্ষ্যে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা করছে স্বাস্থ্য বিভাগ। সেইসাথে শিক্ষার্থী ভর্তির আসনসংখ্যাও কমতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে চঢ়ান্ত সিদ্ধান্ত আসছে মার্চ মাসে নেয়া হবে। সূত্রঃ ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন।
প্রচারিত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই কয়েক ধরনের মূল্যায়ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে তবেই পাওয়া যায় মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ। কিন্তু বাংলাদেশে এতদিন তেমন কোন মূল্যায়ন পরীক্ষার প্রচলন ছিল না। দেশের ১০৪টি সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে প্রায় ১১০০০ এরও অধিক শিক্ষার্থী প্রতিবছর মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পান। এজন্য তাদের ১০০ নাম্বারের এমসিকিউ পরীক্ষা দিতে হয়।
মেডিকেলে পড়ালেখা করার জন্য উপযুক্ত প্রার্থী যাচাইয়ে প্রচলিত পদ্ধতিকে যথেষ্ট বলে মনে করেন না সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। মেডিকেল ভর্তির ক্ষেত্রে মৌখিক পরীক্ষা অন্তর্ভুক্ত প্রয়োজন বলে অভিমত ব্যক্ত করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. নিজাম উদ্দিন। তিনি বলেন, মেডিকেলে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ইন্টারভিউ নেয়া জরুরি। কারণ মেডিকেলের পড়াশোনার প্রতি তার এমপ্যাথি, তার মোটিভেশন আর এ্যাটিটিউড আছে কী-না তা জানা দরকার। মেডিকেলে ভর্তির পরও কেউ কেউ একবছর না যেতেই ইন্টারেস্ট হারিয়ে ফেলে। তাতে করে একটা বড় অপরচুনিটি চলে যায়। এ কারণে আমাদের বর্তমান এডমিশন সিস্টেমের পরিবর্তন প্রয়োজন।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক নাজমুল হোসেন বলেন, একসময় মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষাটা লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষার অংশ হিসেবে নেয়া হত। মৌখিক পরীক্ষার বিষয়টা বিবেচনায় নাই। কিন্তু কোনভাবে লিখিত (শর্ট কোয়েশ্চন) যুক্ত করা যায় কী-না সে বিষয়টাও আলোচনা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, মেডিকেলে পড়তে মেধার সাথে সাথে মানবিক বৈশিষ্ট্যও থাকা জরুরি। এ ধরনের পেশার (চিকিৎসক) জন্য আসলে শুধুমাত্র মেধার পাশাপাশি আরো কতগুলো মানবিক বৈশিষ্ট্য থাকা দরকার। কিন্তু আমাদের পরীক্ষা পদ্ধতি শুধুমাত্র কতগুলো বিষয়ে তার জ্ঞান বা দক্ষতাকে মাপতে পারে। এটার মাধ্যমে মেধা আলাদা হয় বটে, কিন্তু এই মেধাবীদের মধ্যে থেকেও আবার মানবিক বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন মানুষগুলোকে আলাদা করার ফিল্টার পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্নভাবে করা হয়। এর মাধ্যমে আলাদা করা হয় যে, মেধাবীদের মধ্যে কারা কোন ধরনের সেবামূলক পেশার জন্য ভালো। কারা আসলে বিজ্ঞানী হওয়ার জন্য ভালো, কারা মহাকাশ বিজ্ঞানের জন্য ভালো।
প্রসঙ্গতঃ সুযোগ সুবিধা না বাড়িয়েই গত বছর (২০২৪ সালে) মেডিকেলের আসন বাড়ানো হয়েছিল ১০৩০টি।
আরও পড়ুন