অপরিনত নবজাতক
বিশ্বের ১০৩টি দেশের মধ্যে অপরিনত নবজাতক জন্মদানের হারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে প্রথম এবং এই হার ১৬.২ শতাংশ। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিএসএমএমইউয়ে আয়োজিত সেন্ট্রাল সেমিনারে ‘প্রিম্যাচুরিটি: এ্যাকসেস টু কোয়ালিটি কেয়ার এভরিহোয়ার’ শীর্ষক প্রবন্ধে নিওনেটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. এম এ মান্নান এ তথ্য উপস্থাপন করেন।
প্রফেসর ডা. এম এ মান্নান বলেন, বিশ্বে প্রতি বছর দেড় কোটি অপরিণত নবজাতক জন্ম নেয়। তাদের মধ্যে ১০ লক্ষ নবজাতক বিভিন্ন জটিলতায় মারা যায়। এই সংখ্যা মোট নবজাতকের মৃত্যুর ৩৫ শতাংশ। প্রতিবছর বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করে ৬ লক্ষ ৪ হাজার অপরিণত নবজাতক। বিশ্বের ১০৩টি দেশের মধ্যে অপরিনত নবজাতক জন্মদানের হারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে প্রথম এবং এই হার ১৬.২ শতাংশ। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বিএসএমএমইউর নিওন্যাটাল বিভাগের এনআইসিইউতে ভর্তি নবজাতকদের ৬৪ শতাংশই অপরিণত নবজাতক। তবে বিএসএমএমইউর এনআইসিইউতে ভর্তি হওয়া নবজাতকের সুস্থতার হার ৮০ শতাংশ।
তিনি আরও বলেন, প্রিম্যাচুর নবজাতকদের জন্য সঠিক চিকিৎসা ও পরিচর্যা অত্যন্ত জরুরি। সচেতনতা বৃদ্ধি ও সঠিক যত্নসহ ‘ক্যাঙ্গারু মাদার কেয়ার’ পদ্ধতির মাধ্যমে প্রিম্যাচুর নবজাতকদের জীবন রক্ষা ও সুস্থতা বৃদ্ধি নিশ্চিত করা সম্ভব।
সেমিনারে ‘প্রিম্যাচুর বার্থ: এ্যান্টেন্যাটাল পারসপেক্টিভ’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফিটোম্যাটার্নাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. তাবাসুম পারভীন। প্রবন্ধে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিশ্বের সর্বোচ্চ প্রি-টার্ম জন্মের হার (১৬.২%) রয়েছে। এই অবস্থা মোকাবিলার জন্য প্রাক-গর্ভাবস্থার যত্ন, অন্তঃসত্ত্বা মায়ের যত্ন, প্রসবকালীন যত্ন এবং অন্তত চারটি পোস্টনেটাল যত্ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রাক-গর্ভাবস্থা এবং শুরুর অন্তঃসত্ত্বা যত্নে ঝুঁকি নির্ধারণ করা উচিত। যেমন- কিশোর বয়সে গর্ভধারণ, একাধিক গর্ভাবস্থা, সংক্রমণ, দীর্ঘমেয়াদী রোগ, অতিরিক্ত কাজের চাপ, জীবনযাত্রার আচরণ, অপুষ্টি এবং এগুলোর চিকিৎসা করা। যখন প্রি-টার্ম ডেলিভারির ঝুঁকি থাকে, তখন নবজাতকের শ্বাসপ্রশ্বাসের কষ্ট কমাতে অন্তঃসত্ত্বা corticosteroid মাকে দেওয়া উচিত, শিশুর নিউরোপ্রটেকশনের জন্য ম্যাগনেসিয়াম সালফেট মাকে দেওয়া উচিত, অ্যান্টিবায়োটিকস এবং টোকোলাইটিক্স ব্যবহার করা উচিত। ডেলিভারির পর, সব প্রি-টার্ম নবজাতককে কাংগারু মাদার কেয়ার দরকার। এই সব প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা প্রি-টার্ম জন্মের তিন চতুর্থাংশ কমিয়ে আনতে পারি, সর্বনিম্ন খরচে অথবা কোনো খরচ ছাড়াই।
নবজাতকদের ‘জীবন রক্ষায় বর্ন টু সুন: এ্যাওয়ানেস মাস্ট বি এ কনসার্ন’ শীর্ষক ইউনিভার্সিটি সেন্ট্রাল সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম। সভাপতিত্ব করেন সেন্ট্রাল সেমিনার সাব কমিটির চেয়ারপারসন অধ্যাপক ডা. আফজালুন নেছা। সঞ্চালনায় করেন ডা. খালেদ মাহবুব মোর্শেদ (মামুন)। সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ। বক্তব্য রাখেন মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. শামীম আহমেদ ও শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. আতিয়ার রহমান গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন