Advertisement
Doctor TV

বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫


ঢাকার কলেরা হাসপাতাল দেখে মুগ্ধ কানাডার মন্ত্রী

Main Image

শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মহাখালীর আইসিডিডিআর,বি পরিদর্শনে যান কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন মন্ত্রী হারজিত এস সজ্জন


কলেরা হাসপাতাল নামে পরিচিত আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশে (আইসিডিডিআর,বি) ঘুরে দেখে নিজের মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন মন্ত্রী হারজিত এস সজ্জন। আইসিডিডিআর,বি’র উদ্ভাবনগুলো মানুষের জীবন বাঁচায় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। 

শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মহাখালীর আইসিডিডিআর,বি পরিদর্শনে যান তিনি। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ এবং প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাকে স্বাগত জানান। এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলস এবং গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার অন্যান্য সদস্যরাও ছিলেন। 

মুগ্ধতার কারণ প্রসঙ্গে হারজিত এস সজ্জন বলেন, আইসিডিডিআর,বি’র বিজ্ঞানী ও কর্মীরা কানাডার বিনিয়োগকে ব্যবহার করে জটিল চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর সহজ সমাধান বের করছেন। যা পৃথিবীর সবচেয়ে সুবিধাবঞ্চিত জায়গায়ও ব্যবহার করা সম্ভব। এছাড়াও তারা এখানে যে জ্ঞান অর্জন করছে তা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিচ্ছে।  

ড. তাহমিদ আহমেদ বলেন, বিগত পঁয়তাল্লিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে কানাডা আমাদের অব্যাহতভাবে সহায়তা করে আসছে, আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। এই সহায়তার ফলেই, আমরা ধারাবাহিকভাবে আমাদের গবেষণা করতে সক্ষম হয়েছি, যা শুধুমাত্র বাংলাদেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং বিশ্বের অন্যান্য নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্যও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি আরো বলেন, একসঙ্গে কাজ করে আমরা বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ মানুষের জীবন বাঁচিয়েছি, যা কানাডাসহ আমাদের অন্যান্য দাতাদের দীর্ঘমেয়াদী সহায়তার ফলে সম্ভব হয়েছে।

এ সময় হাইকমিশনার লিলি নিকোলস আইসিডিডিআর,বির গবেষণা এবং উদ্ভাবনের প্রশংসা করে বলেন, আইসিডিডিআর,বি এখানে যে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছে তা লাখ লাখ জীবন বাঁচাচ্ছে। আমরা খাবার স্যালাইন, ডায়রিয়ার চিকিৎসায় জিঙ্কের ব্যবহার, ওরাল কলেরা ভ্যাকসিন এবং বার্থিং ম্যাটের মতো অনন্য উদ্ভাবন দেখেছি। এগুলো সহজ, কার্যকরী, সাশ্রয়ী এবং বাংলাদেশে তৈরি। কিন্তু এগুলো মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর সত্যিই অসাধারণ প্রভাব ফেলে।

তিনি বলেন, আমরা এই বিশ্বখ্যাত উদ্ভাবনগুলো দেখে খুবই আনন্দিত, এবং আমরা গর্বিত যে কানাডাও আইসিডিডিআর,বির সঙ্গে রয়েছে। গবেষণা ছাড়াও কানাডার সহায়তায় আইসিডিডিআর,বি ঢাকা এবং চাঁদপুরের মতলব হাসপাতালে বছরে দুই লাখেরও বেশি রোগীকে বিনামূল্যে ডায়রিয়া এবং অপুষ্টির চিকিৎসা প্রদানে সহায়তা করে।

এর আগে কানাডার মন্ত্রী আইসিডিডিআর,বির ঢাকা হাসপাতালে কিছু সময় কাটান, যেখানে তিনি প্রতিষ্ঠানের স্বল্প খরচের বিভিন্ন উদ্ভাবন, গুরুতর নিউমোনিয়া এবং হাইপোক্সেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার জন্য বাবল সিপিএপি এবং গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা কানাডার সহযোগিতায় পরিচালিত একটি যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার সম্পর্কিত কাউন্সেলিং সেবা - উদ্দীপ্ত সম্পর্কে জানতে পারেন। এছাড়াও তিনি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষসহ প্রান্তিক এবং সুবিধাবঞ্চিত সম্প্রদায়ের ওপর আইসিডিডিআর,বির বিভিন্ন কাজ সম্পর্কে অবহিত হন এবং কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন।

মন্ত্রী হারজিৎ এস সজ্জন আইসিডিডিআর,বির জীবন রক্ষাকারী গবেষণা এবং উদ্ভাবন দেখে মুগ্ধ হয়ে ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠানটিকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

জানা গেছে, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে বসবাসকারী প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন জনস্বাস্থ্য সমস্যার উদ্ভাবনী ও সাশ্রয়ী সমাধান প্রত্যক্ষ করার উদ্দেশ্যে মন্ত্রীর এই সফর। এর মাধ্যমে তিনি চার দশকেরও বেশি সময় ধরে আইসিডিডিআর,বির জীবন রক্ষাকারী কাজ এবং কানাডার সঙ্গে এর অংশীদারিত্বের বিষয়ে অবগত হয়েছেন। পরিদর্শনের সময়ে ড. তাহমিদ আহমেদ তাকে আইসিডিডিআর,বির কাজের বিষয়ে একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ প্রদান করেন যা বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী লাখো মানুষের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করেছে।

আরও পড়ুন