Advertisement
Doctor TV

বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫


অপ্রতুল ক্যান্সার চিকিৎসায় বাড়ছে বিদেশমুখিতা

Main Image

হাসপাতালে রেডিওথেরাপি দিতে আসলে সিরিয়াল পায় ৫ মাস পরে। এতদিন রোগী বাঁচবে কি-না সেটাই তো প্রশ্ন


চিকিৎসক নেতারা বলেছেন, দেশে আশঙ্কাজনক হারে ক্যান্সার আক্রান্ত বাড়লেও রোগটি শনাক্ত এবং চিকিৎসায় যথাযথ ব্যবস্থা নেই। এ জন্য প্রতিবছর অসংখ্য রোগী দেশে বাইরে চলে যাচ্ছেন।

বিশ্ব ক্যান্সার দিবস উপলক্ষে রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে এক আলোচনা সভায় একথা বলেন তারা।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন, দেশে ক্যান্সার রোগীর কোনো ডাটাবেইজ নেই। বর্তমানে দেশে সর্বমোট ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা কত, দৈনিক কতজন ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন, আমরা জানি না। এগুলো নিয়ে দেশে কোনো গবেষণাও নেই। এর ফলে ক্যান্সাররোধে যথাযথ কাজ এগিয়ে নিতে পারছি না। আমাদের যথেষ্ট স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম নেই, যথেষ্ট জনবল নেই। অথচ দেশে প্রতিনিয়ত লক্ষাধিক লোক ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন।

তিনি বলেন, একটা হাসপাতালে রেডিওথেরাপি দিতে আসলে সিরিয়াল পায় ৫ মাস পরে। এতদিন রোগী বাঁচবে কি-না সেটাই তো প্রশ্ন। বাধ্য হয়ে রোগীকে ভাবতে হয় অন্যান্য কোনো দেশে চলে যেতে। এগুলো আমাদের ভাবতে হবে।

ডা. ইহতেশামুল হক বলেন, দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের ক্যান্সার রোগীরা পার্শ্ববর্তী দেশে চলে যাচ্ছে। আমরা তাদের শনাক্তই করতে পারছি না। ক্যান্সার চিকিৎসায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো প্যালিয়েটিভ কেয়ার। কিন্তু বিএসএমএমইউসহ মাত্র হাতে গোনা কয়েকটি হাসপাতালেই এই সেবা আছে। এটি আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।

এ সময় আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, আমাদের দেশে চিকিৎসায় যেভাবে জনবল তৈরি হওয়া দরকার, সেভাবে হচ্ছে না। দক্ষ জনবল তৈরি করতে হলে প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের যে ইনস্টিটিউট হচ্ছে, সেগুলোতে এখনই জেলা-উপজেলার স্বাস্থ্যকর্মীদের এনে প্রশিক্ষণ দেওয়া প্রয়োজন।

তিনি বলেন, আমাদের শুধু প্যালিয়েটিভ কেয়ারের সংকট নয়, পাশাপাশি ক্যান্সার রোগীদের পর্যাপ্ত আইসিউও নেই। এগুলো ক্যান্সার চিকিৎসায় খুবই দরকারি। জেলা-উপজেলা হাসপাতালগুলোতে ঠিকমতো ডায়াগনোসিস হয় না। পর্যাপ্ত সরঞ্জাম নেই, যেগুলো আছে সেগুলো অকেজো হয়ে আছে।

অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ক্যান্সার নিয়ে আমাদের দেশে সচেতনতার খুবই অভাব। অথচ বছরে লাখ লাখ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে ও মারা যাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ক্যান্সারে খুবই গুরুত্ব দিচ্ছে।

তিনি বলেন, ক্যান্সারে দেশে প্রতি বছর ১৪ হাজার নারী মারা যায়, জরাযু ক্যান্সারে ১২ হাজার মারা যায়। কিন্তু এগুলো প্রতিরোধযোগ্য। এ ক্ষেত্রে আমরা সচেতনতার মাধ্যমে ভূমিকা রাখতে পারি। ধূমপান লাং ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। কিন্তু অনেকেই মনে করেন, আমি তো দীর্ঘদিন ধূমপান করি, ক্যান্সার তো হচ্ছে না। বাস্তবতা তো চিকিৎসকরা জানি। কিছুদিন আগে একজন চিকিৎসকও লাং ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার কথা শুনেছি। সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই।

এ সময় স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. টিটু মিয়া বলেন, ক্যান্সার প্রতিরোধযোগ্য। আমাদের ডায়াগনোসিস সেবা বাড়াতে হবে। বাংলাদেশ থেকে অনেক রোগী বাইরে চলে যায় ডায়গোনোসিসের জন্য। আমাদেরকে প্যালিয়েটিভ কেয়ারে মনোযোগ দিতে হবে, জনবল বাড়াতে হবে।

আরও পড়ুন