Advertisement
Doctor TV

বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫


ডেন্টালে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হওয়া রাহাতের গল্প

Main Image

নাজমুস সাকিব রাহাত


নাজমুস সাকিব রাহাত। এবারের ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় প্রথম হয়েছেন তিনি। পঞ্চগড়ের এ কৃতি সন্তান সারাদেশের ৩৯ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীকে পেছনে ফেলে দেশসেরা হয়েছেন। ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জন (বিডিএস) কোর্সে ভর্তি পরীক্ষায় আগের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস তৈরি করেছেন তিনি। ভর্তি পরীক্ষায় ৩০০ নাম্বারের মধ্যে ২৯৫ নাম্বার পেয়েছেন রাহাত। মঙ্গলবার বিকালে ডক্টর টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাহাত জানিয়েছেন তার সাফল্যকথা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন হাসান মাহমুদ

ডক্টর টিভি: বিডিএস পরীক্ষায় প্রথম হওয়ায় ডক্টর টিভির পক্ষ থেকে আপনাকে অভিনন্দন।

নাজমুস সাকিব রাহাত: আপনাকে ধন্যবাদ। আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ডক্টর টিভির প্রতি অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।

ডক্টর টিভি: ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জন্স পরীক্ষায় মেধা তালিকায় প্রথম হওয়ার অনুভূতি কেমন?

নাজমুস সাকিব রাহাত:  যখন রেজাল্ট হয়, তখন আমি রাস্তায় ছিলাম। এটা প্রথম দেখার পর আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। যদিও পরীক্ষা ভালো দিয়েছিলাম বলে একটা আত্মবিশ্বাস ছিল আমি অন্তত চান্স পাবো, কিন্তু সেটা এতো ভালো হবে তা ভাবতেও পারিনি। এজন্য আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞাতা প্রকাশ করছি।

ডক্টর টিভি: চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন কখন থেকে দেখতেন?

নাজমুস সাকিব রাহাত: চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নটা আমার অনেক আগে থেকেই। যখন ছোটো বেলায় পরীক্ষায় ‘এইম ইন লাইফ’ রচনা লিখতাম, তখনও ডাক্তার হওয়ার কথাই লিখতাম। কিন্তু সেটি আরও বেশি শক্তিশালী হয় যখন আমি কলেজে উঠি তখন। অনেকেই তখন মজা করে, আমাকে ডাক্তার ডাকতো। এটা আমাকে অনেক প্রেরণা দিয়েছিল।

ডক্টর টিভি: ভবিষ্যতে আপনি মানুষের জন্য কী করতে চান?

নাজমুস সাকিব রাহাত: বিডিএস শেষ করে, মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে চাই। দরিদ্র সমাজের অবহেলিত মানুষের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যেতে চাই। মানুষের সেবাই হবে আমার একমাত্র লক্ষ্য।

ডক্টর টিভি: এবারের পরীক্ষা কয়েকবার পিছিয়েছিল, সেটি আপনার প্রস্তুতিতে কোনো প্রভাব ফেলেছিল কিনা?

নাজমুস সাকিব রাহাত: পরীক্ষা বারবার পিছিয়ে যাওয়ার কারণে মন ভেঙে গিয়েছিল। কিন্তু আমার বড় ভাই সবসময় আমাকে এক ধরনের চাপের মধ্যে রেখে ছিল। এই সময়গুলোতে আমি অনেকগুলো পরীক্ষায় অংশ নেই। যার কারণে অনেক বেশি চাপে ছিলাম। এটা আমাকে অনেক বেশি সহায়তা করেছে।

ডক্টর টিভি: অনেকেই প্রথম দিকে সফল হলেও সেটি ধরে রাখতে পারে না, এব্যপারে আপনার পরীকল্পনা কী?

নাজমুস সাকিব রাহাত: আসলে মেডিকেল বা ডেন্টাল পরীক্ষায় প্রথম হওয়াটা অত বেশি গুরুত্ব বহন করে না। এটা একটা ধাপ মাত্র। আর মেডিকেল বা ডেন্টালের বইগুলো অনেক বেশি কঠিন হয়ে থাকে। ফলে এখানে টিকে থাকতে হলে অনেক বেশি পরিশ্রম করে যেতে হবে।

ডক্টর টিভি: আপনার এই সফলতার পেছনে কাদের অবদান বেশি?

নাজমুস সাকিব রাহাত: এই সফলাতার পিছনে অনেকেরই অবদান আছে। বিশেষ করে আমার মা-বাবা যারা আমার জন্য অনেক বেশি দোয়া করেছেন। এছাড়া শিক্ষকের কথা বলতে গেলে অনেক শিক্ষকের কথাই বলতে হয়। বিশেষ করে আমার প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘রত্নিবাড়ি শিশু শিক্ষা নিকেতনের’ শিক্ষকরা অনেক বেশি আন্তরিক ছিলেন। সেখান থেকে আমি ‘জেলা গভমেন্ট হাইস্কুলে’ ভর্তি হই। এই স্কুলের শিক্ষকরাও আমাকে অনেক বেশি সহায়তা করেছেন।

বিশেষ করে বিজ্ঞানের বিষয়েগুলোতে তারা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতো। এর পরে ‘সেন্ট জোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে’ ভর্তি হই। সেখানকার প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ অনেক বেশি সহায়ক ছিল।

ডক্টর টিভি: এমন পাবলিক পরীক্ষায় ভালো ফলাফল পেতে হলে নিশ্চয়ই কিছু আলাদা কৌশল নিতে হয়, আপনি কোন কৌশল নিয়েছিলেন?

নাজমুস সাকিব রাহাত: আমি চেষ্টা করতাম আমার বইয়ের পড়া নিয়মিত পড়ার। বিশেষ করে দিনের পড়া দিনেই শেষ করতাম। কোনো কিছু গ্যাপ হয়ে গেলে সেটি শুক্রবার বা বন্ধের দিনগুলোতে পড়ে শেষ করার চেষ্টা করতাম। পড়া শেষ করতে যতটুকু সময় দরকার হতো সেটা অন্তত দেওয়ার চেষ্টা করতাম। তবে শখ যে ছিল না বিষয়টি তেমন নয়, সময় পেলেই খেলাধুলা করতাম। বিশেষ করে ক্রিকেট আমি বেশি খেলতাম।

ডক্টর টিভি: যারা মেডিকেল বা ডেন্টালে ভর্তি হতে চায়, আপনার এই সফলতা তাদের জন্য নিশ্চই প্রেরণার। তাদের জন্য আপনি কী পরামর্শ দিবেন?

নাজমুস সাকিব রাহাত: আমি সবার উদ্দশ্যেই বলবো- এইচএসসিতে ওঠার সঙ্গেই মনস্থির করতে হবে। এসময় মূল বইয়ের প্রতি ফোকাস রাখতে হবে। এর পাশাপাশি গাইড বইগুলো থেকে সহায়তা নিয়ে প্রশ্নের ধরন বুঝে পড়লে অনেকটাই সহজ হবে। এইচএসসি পরীক্ষার পর পুরোপুরি প্রস্তুতি নিতে হবে। এসময় বারবার চর্চার কোনো বিকল্প নেই।

আরও পড়ুন