Advertisement
Doctor TV

বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫


করোনার ভারতীয় ধরন নিয়ে কেন এত ভয়?

Main Image


দেশে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ভারতীয় ধরন (ভ্যারিয়েন্ট) শনাক্ত হয়েছে। শনিবার গণমাধ্যমে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই অতি সংক্রামক এই ধরন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

করোনাভাইরাসের জিনোমের উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার জার্মানির গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটার (জিআইএসএআইডি) ওয়েবসাইটে বাংলাদেশে করোনার এ ধরন শনাক্তের খবর প্রকাশিত হয়েছে।

গত ২৮ ও ২৯ এপ্রিল সংগৃহীত নমুনা থেকে দেশে দুই ব্যক্তির শরীরে করোনার ভারতীয় ধরনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। তারা দুজনই পুরুষ এবং উভয়ই ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছেন। দেশে এই দুই ব্যক্তি এখন কোথায় আছেন, তা জানা যায়নি।

গত ২৪ এপ্রিল এক অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলছেন, বর্তমান ভারতের ডাবল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার আগের তুলনায় বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই ভারতের এই ভ্যারিয়েন্ট যদি দেশে প্রবেশ করে, তাহলে পরিস্থিতি অনেক ভয়াবহ হবে।

অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (এআইআইএমএস) এর প্রধান রণদীপ গুলেরিয়ার বলেছেন, করোনার ভারতীয় ধরন অন্যগুলোর চেয়ে অনেক বেশি ভয়ঙ্কর। শুধু দ্রুত হারে সংক্রমণ ছড়িয়েই পড়ে না, এই ভাইরাস একবার শরীরে ঢুকলে অনেক বিপদ ঘটতে পারে।

তিনি বলেন, এমনকি যারা একবার করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন, তাদের শরীরেও নতুন করে বাসা বাঁধতে পারে ভাইরাসের এই নয়া ধরন। শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতিতিও তাকে রুখতে পারে না।

সংক্রামক রোগের তথ্য সংগ্রহ এবং আদান-প্রদানে নিয়োজিত আন্তর্জাতিক সংস্থা জিআইসএইড-এর ডাটাবেজ অনুসারে, এরই মধ্যে কমপক্ষে ২১টি দেশে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরন শনাক্ত হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ডব্লিউএইচও বলেছে, ভারতে করোনার অন্যান্য যে ধরন রয়েছে সেগুলোর চেয়ে এটি অনেক বেশি সংক্রামক। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে প্রথম ঢেউয়ের চেয়ে দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ খুব দ্রুত ঘটছে।

যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যের ভাইরোলজিস্ট ড. জেরেমি কামিল বলেন, ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে শনাক্ত একটি মিউটেশনের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ব্রাজিলীয় ভ্যারিয়েন্টে শনাক্ত মিউটেশনের মিল রয়েছে।

এই মিউটেশনটি দেহে রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থায় তৈরি অ্যান্টিবডিকে পাশ কাটিয়ে যেতে ভাইরাসকে সাহায্য করতে পারে। সংক্রমণ এবং ভ্যাকসিন নিয়ে আগের বিভিন্ন পরীক্ষায় এটি দেখা গেছে।

সম্প্রতি করোনা সংক্রমণে একের পর এক বিশ্ব রেকর্ড গড়ে যাচ্ছে ভারত। দেশটিতে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যাও আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। সক্রিয় রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া ভেঙে পড়েছে চিকিৎসা ব্যবস্থা। অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছেন অনেক রোগী।

গত ৬ মে এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমাদের রোগীর সংখ্যা কমেছে। আমাদের এক সঙ্গে ১২ হাজার রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে।’

সবকিছু মিলিয়ে করোনার ভারতীয় ধরন দেশে ছড়িয়ে পড়লে সক্রিয় রোগীর চাপে ভেঙে পড়তে পারে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা। তৈরি হতে পারে ভারতের চেয়েও ভয়াবহ পরিস্থিতি।

আরও পড়ুন