ডা. এম আর খান শিশু হাসপাতালের চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় মামলা

ডক্টর টিভি রিপোর্ট
2024-11-02 13:50:00
ডা. এম আর খান শিশু হাসপাতালের চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় মামলা

ডা. এম আর খান শিশু হাসপাতালে শিশু মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চিকিৎসককে মারধর করে রোগীর স্বজনেরা

ডা. এম আর খান শিশু হাসপাতালের চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার (২ নভেম্বর) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুল্লাহ আল মামুন বাদি হয়ে ৪ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। মামলায় ৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন- রবিউল ইসলাম রবি চৌধুরী, মো. মোছাফির মতিন. জয় চৌধুরী ও মো. রানা। শিশুমৃত্যুকে কেন্দ্র করে চিকিৎসক ও হাসপাতাল স্টাফদের ওপর সংঘবদ্ধ হামলা চালায় তারা। 

 

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ৩১ অক্টোবর সকাল আনুমানিক ৯টা ৫৫ মিনিটে উল্লিখিত আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জন বেআইনী জনতা সংঘবদ্ধভাবে দেশীয় অস্ত্র হাতে হাসপাতালে অনধিকার প্রবেশ করে প্রফেসর ডা. শফিকুজ্জামানকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলাপাথারী কিল-ঘুষি, চর-থাপ্পর মারিতে থাকে। এ সময় হাসপাতালে উপস্থিত ডা. তরিকুল ইসলাম, সিকিউরিটি জেনারেল ম্যানেজারসহ কয়েকজন স্টাফ এগিয়ে গেলে তাদের উপর হামলা চালায় আসামিরা।  

 

মামলার বিবরণীতে বলা হয়েছে, গত ২৫ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে শিশু জান্নাতুল ফেরদৌসকে (৪/৫ মাস বয়সী) ডেঙ্গু জ্বরজনিত সমস্যা নিয়ে ডা. এম আর খান শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার অবস্থার অবনতি হলে গত ২৮ অক্টোবর তাকে ওয়ার্ড থেকে পিআইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। এরপরও তার অবস্থার আরও অবনিত হলে রোগীর আত্মীয়-স্বজনকে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য হাসপাতালের আইসিইউতে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। এরপরও রোগীর আত্মীয়-স্বজন তাদের রোগীকে অন্যত্র নিতে অপারগতা প্রকাশ করে। এরপর ৩১ অক্টোবর বেলা ২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশু জান্নাতুল ফেরদৌস মৃত্যুবরণ করে। 

 

পরবর্তীতে মৃত জান্নাতুল ফেরদৌসের আত্মীয়-স্বজন কোন কোন বিল পরিশোধ না করে রোগীর মৃত্যুর বিষয়কে কেন্দ্র করে হাসপাতালের প্রফেসর ডা, শফিকুজ্জামানের সঙ্গে তর্কা-তর্কি ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ এবং বিভিন্ন ভয়ভীতি হুমকি দিতে থাকে। এক পর্যায়ে ৩১ অক্টোবর সকাল আনুমানিক ৯টা ৫৫ মিনিটে উল্লিখিত আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জন বেআইনী জনতা সংঘবদ্ধভাবে দেশীয় অস্ত্র হাতে হাসপাতালে অনধিকার প্রবেশ করে প্রফেসর ডা. শফিকুজ্জামানকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলাপাথারী কিল-ঘুষি, চর-থাপ্পর মারিতে থাকে। এ সময় হাসপাতালে উপস্থিত ডা. তরিকুল ইসলাম, সিকিউরিটি জেনারেল ম্যানেজারসহ কয়েকজন স্টাফ এগিয়ে গেলে তাদের উপর হামলা চালায় আসামিরা। আসামীদের হামলায় তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে যখম হয়। শেষ পর্যন্ত হাসপাতালের চিকিৎসকদের ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাদের রক্ষা করেন। 

 

পরবর্তীতে প্রফেসর ডা, শফিকুজ্জামানসহ আহত ডাক্তাররা শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। 

 

মামলা দায়ের করতে বিলম্ব হওয়ার কারণ সম্পর্কে হাসপাতাল পরিচালক উল্লেখ করেছেন, হামলার ঘটনার বিষয়ে হাসপাতালের ডাক্তারগণ আমাকে অবহিত করলে, আমি বিস্তারিত শুনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ-আলোচনা করে থানায় এসে মামলা দায়ের করতে বিলম্ব হলো। হাসপাতালের সিসি ফুটেজ দেখে আরও আসামিদের শনাক্ত করে জানানো হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে মামলার বিবরণীতে। 


আরও দেখুন: