ব্যাকটেরিয়ার অ্যান্টিবায়োটিক সহনশীলতা ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে 

ডক্টর টিভি রিপোর্ট
2023-12-01 16:22:48
ব্যাকটেরিয়ার অ্যান্টিবায়োটিক সহনশীলতা ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের উদ্যোগে এবং বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্স এবং ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার’র অর্থায়নে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়

ব্যাকটেরিয়ার অ্যান্টিবায়োটিক সহনশীলতা ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। গবেষণার তথ্য তুলে ধরে তারা বলেন, অধিকাংশ ব্যাকটেরিয়াই ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি সহনশীল। এমনকি শেষ প্রতিরক্ষাকারী অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে বিবেচিত যেমন- কার্বাপেনেম, কোলিস্টিনের প্রতি কিছু ব্যাকটেরিয়া ৯০ শতাংশের বেশি সহনশীল। আরটি-পিসিআরসহ অন্যান্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সংগৃহীত ব্যাকটেরিয়া থেকে ১৯টিরও বেশি আন্টিবায়োটিক সহনশীল জীন পাওয়া গেছে বলে জানান গবেষকরা। 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের উদ্যোগে ‘One Health Assessment of Emerging Antimicrobial Resistance Genes in Bangladeshi Livestock, Feeds and Manure’ শীর্ষক সেমিনারে গবেষকরা উপরোক্ত কথা বলেন। 

বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্স এবং ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার’র অর্থায়নে মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক রাশেদা আখতার ও জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. নূহু আলম।

গবেষকেরা জানান, বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পোল্ট্রি ফিড, গোবর এবং জৈব সারের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রাপ্ত নমুনা থেকে বিভিন্ন ধরনের রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া পৃথকীকরণের মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়। এদের একটি বড় অংশ বিভিন্ন এন্টিবায়োটিক (বিটা ল্যাকটাম, কার্বাপেনেম, কোলিস্টিন)-এর প্রতি সহনশীল। যেসব ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার আগে থেকেই লক্ষণীয় ছিল, সেসব ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিকের প্রতি সহনশীলতা বেশি দেখা গেছে।

বক্তারা জানান, গবেষণার মাধ্যমে লাইভস্টোকর মোট ২৪০টি নমুনা থেকে ৩০টিরও বেশি জেনাসসহ মোট ২২৫টি ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত হয়েছে। মানুষের মোট ১১০টি নমুনা (ডাইরিয়াল নমুনা) থেকে ৩০টিরও বেশি জেনাসসহ ১৪০টি ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত হয়েছে। প্রাপ্ত ব্যাকটেরিয়াগুলো মোট ৯টি অ্যান্টিবায়োটিক গ্রুপের ২০টি অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি ‘অ্যান্টিবায়োটিক অ্যাসসেপটিবিলিটি টেস্ট’ করেছেন তারা। 

সেমিনারে আদ দীন উইমেন্স মেডিকেল কলেজের প্রধান ড. কাজী সেলিম আনোয়ার বলেন, গবেষণায় প্রাপ্ত নমুনা সাভারের একটি নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ না থেকে সামগ্রিক প্রেক্ষাপট; অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্ট জানার জন্য সমগ্র বাংলাদেশ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা উচিত।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পোস্ট ডক্টরাল ফেলো ড. সাবরিনা হোসাইন বলেন, গবাদি পশুর অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ইতিহাস এবং রেজিস্ট্যান্ট জিনগুলো কোন প্রক্রিয়ার স্থানান্তর হচ্ছে তা শনাক্তকরণ করা জরুরি।

সেমিনারে উপস্থিতি ছিলেন প্রজেক্টের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক অধ্যাপক ড. সালেকুল ইসলাম ও সহকারী তত্ত্বাবধায়ক অধ্যাপক ড. শামসুন নাহার। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থী ও গবেষকরাও উপস্থিত ছিলেন।


আরও দেখুন: