সঠিক চিকিৎসায় সিজোফ্রেনিয়া রোগী ভাল হয় : অধ্যাপক ডা. মহসিন

ইলিয়াস হোসেন :
2023-05-24 10:33:20
সঠিক চিকিৎসায় সিজোফ্রেনিয়া রোগী ভাল হয় : অধ্যাপক ডা. মহসিন

সিজোফ্রেনিয়া অত্যন্ত জটিল মানসিক রোগ

সিজোফ্রেনিয়া অত্যন্ত জটিল মানসিক রোগ। এই রোগীরা অতিরিক্ত সন্দেহপ্রবণ হয়ে থাকেন। তারা অহেতুক ও অমূলক ধারণায় বিশ্বাসী হন। নিজের যুক্তি ও মত ছাড়া অন্য কারো মতামত মানতে চান না। তবে, সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে সিজোফ্রেনিয়া রোগীকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিভাগের প্রবীণ শিক্ষক অধ্যাপক ডা. মহসিন আলী শাহ। 

বুধবার (২৪ মে) সিজোফ্রেনিয়া দিবস উপলক্ষে বিশেষ সাক্ষাৎকারে একথা বলেন তিনি। 

প্রবীণ মানসিকরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মহসিন আলী শাহ বলেন, মানসিক রোগের মধ্যে অন্যতম জটিলরোগ সিজোফ্রেনিয়া। কারণ এটার চিকিৎসাও অত্যন্ত জটিল। নারী-পুরুষ উভয়েরই রোগটি হয়ে থাকে। তবে পুরুষদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যায়। বাংলাদেশে প্রতি একশ জনের মধ্যে একজন এই রোগে আক্রান্ত বলে ধারণা বলে জানান তিনি। 

অধ্যাপক ডা. মহসিন আলী শাহ বলেন, গ্রামের চেয়ে শহরাঞ্চলে রোগটির প্রকোপ বেশি। পনেরো বছরের নীচে কারো মধ্যে রোগটি দেখা যায় না। এর পর যে কোনো বয়সে এই অসুখ দেখা দিতে পারে। আক্রান্তদের ইতিহাস থেকে বলা যেতে পারে ১৫ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে রোগটি হতে পারে। 

বাবা-মায়ের থাকলে সন্তানেরও সিজোফ্রেনিয়া হতে পারে। তাছাড়া অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণেও সিজোফ্রেনিয়া হতে পারে। 

রোগটির লক্ষণ সম্পর্কে তিনি বলেন, সিজোফ্রেনিয়া রোগীরা এমন কিছু শুনতে বা দেখতে পায় যার কোন বাস্তবতা নাই। কথা বলা, লেখায় অদ্ভুত বা অযৌক্তিক ধরন বা আচরণ প্রকাশ করে। তাদের মধ্যে উদাসীনতা লক্ষ্য করা যায়। পরিবারের অন্য সদস্য বা নিজের যত্ন নেয়ার প্রতি উদাসীনতা দেখায়। তাদের স্বাভাবিক আবেগ, অনুভূতি কমে যাওয়া লক্ষ্য করা যায়। 

চিকিৎসায় এইরোগীদের সুস্থ্য করে তোলা সম্ভব কি-না এ প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ডা. মহসিন আলী শাহ বলেন, রোগীর ইতিহাস জেনে সঠিকভাবে চিকিৎসা করলে, অবশ্যই সুস্থ করে তোলা সম্ভব। এজন্য চিকিৎসককে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞানের অধিকারী হতে হবে।বিজ্ঞানভিত্তিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।   

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২৪শে এপ্রিল রোববার বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সাইক্রিয়াট্রিস্ট সিজোফ্রেনিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত গাইডলাইন তৈরি করে তা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়।

সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের মতে, সিজোফ্রেনিয়ার চিকিৎসার মধ্যে বেশকিছু অসামঞ্জস্য থাকায়, সব দিক বিবেচনা করে চিকিৎসা সংক্রান্ত গাইডলাইনটি তৈরি করেছেন তারা। এতে বেশকিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যেমন :

১. এই রোগের চিকিৎসার আন্তর্জাতিকমান অনুসরণ করে চিকিৎসা করতে হবে।  

২.  চিকিৎসকদের মধ্যে যারা বিশেষজ্ঞ নন, তাদের ভূমিকা কি হবে সেটা ঠিক করতে হবে।

৩. রোগটির চিকিৎসায় সামাজিকভাবে সহযোগিতার ব্যবস্থা করতে হবে।

৪. রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে সিজোফ্রেনিয়া সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি ও চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে হবে।


আরও দেখুন: