প্রসবজনিত ফিস্টুলা প্রতিরোধযোগ্য: ডা. ফাইরুজ

ইলিয়াস হোসেন :
2023-05-23 12:01:27
প্রসবজনিত ফিস্টুলা প্রতিরোধযোগ্য: ডা. ফাইরুজ

প্রসবজনিত ফিস্টুলা প্রতিরোধযোগ্য

প্রসবজনিত ফিস্টুলা প্রতিরোধযোগ্য। অদক্ষ ধাত্রী দ্বারা শিশু জন্ম প্রতিহত করার মাধ্যমে ভয়াবহ কস্টের ফিস্টুলা থেকে মায়েদের রক্ষা করা সম্ভব। এ কারণে প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারি বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন গাইনী কনসালট্যান্ট ডা: ফাইরুজ পারভীন তানিয়া। ২৩ মে (মঙ্গলবার) আন্তর্জাতিক প্রসবজনিত ফিস্টুলা নির্মূল দিবস উপলক্ষে ডক্টর টিভিকে দেয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।

উল্লেখ্য, ডা: ফাইরুজ পারভীন তানিয়া কর্মরত আছেন পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাইনি ও প্রসূতি বিভাগে জুনিয়র কনসালট্যান্ট হিসেবে।  

ডা: ফাইরুজ পারভীন তানিয়া বলেন, ২৩ মে প্রসবজনিত ফিস্টুলা নির্মূল দিবস। এটি UNFAP  এর বর্ষপঞ্জিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। এবারে দিনটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ২০৩০ সালের মধ্যে প্রসূতিকালীন ফিস্টুলা নির্মূল করা।

প্রসূতিকালীন ফিস্টুলা সম্পর্কে ডা. তানিয়া বলেন, শিশু জন্মের সময় গুরুতর ও দুঃখজনক আঘত- যা যোনীপথে হয়ে থাকে। এটি যোনীপথ বা মূত্রথলি অথবা রেকটাম নামক অংশের তৈরি হওয়া ছিদ্র। ফিস্টুলা আক্রান্ত নারীর অনবরত প্রস্রাব-পায়খানা ঝরতে থাকে। এ কারণে যোনিপথে চুলকানি হয়, ক্ষত তৈরি হয়। নারীর জন্য দুর্বিষহ জীবন শুরু হয়। অপরিচ্ছন্নতার অযুহাতে অনেক নারী পরিবারের সদস্যদের দ্বারা নিদারুণ অবহেলার শিকার হন। অবহেলিত দীর্ঘ সময় নিয়ে শিশু জন্মদানের ফলে মায়দের ফিস্টুলা হতে পারে।

তিনি জানান, প্রসবজনিত ফিস্টুলায় আক্রান্ত নারীদের কোন সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে, বৈশ্বিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী- ধারণা করা হয়, আমাদের দেশের ১৫-৬৫ বছর বয়সী প্রায় ১৭ হাজার ৫শ’ নারী ফিস্টুলার ভয়াবহ কষ্ট নিয়ে ধুঁকে ধুঁকে বেঁচে আছেন। 

এটি প্রতিরোধের উপায়  সম্পর্কে ডা: ফাইরুজ পারভীন তানিয়া বলেন, প্রথম সন্তান জন্মদানের সময় বিলম্ব করতে হবে, অদক্ষ ধাত্রী দ্বারা শিশু জন্ম প্রতিহত করাও এক্ষত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেইসাথে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে শিশুর জন্ম এবং প্রসূতিকালীন জরুরী সেবা নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন তিনি। 

প্রসূতিকালীন ফিস্টুলা প্রতিরোধ এবং আক্রান্ত নারীকে যথাযথ চিকিৎসা দিয়ে মায়ের স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ৩ এর টার্গেট পূরণ করতে হবে। 

চিকিৎসা কোথায় সম্ভব- এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে ডা. তানিয়া বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে ফিস্টুলার চিকিৎসার ক্ষেত্রে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স একটি আদর্শ স্থান। ভর্তির পর আক্রান্ত নারী একজন গাইনী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সরাসরি চিকিৎসা পরামর্শ ও সেবা পেতে পারেন। ফিস্টুলা হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যে চিকিৎসকের কাছে এলে, সঙ্গে সঙ্গে প্রাথমিক সেবা পাবেন। হাসপাতাল প্রয়োজনীয় ওষুধ দেয়া হয়। এছাড়ায় প্রয়োজনে রোগীকে নল পরিধান করাতে পারেন চিকিৎসক। 

এই ভাবে প্রাথমিকভাবে একজন ফিস্টুলা রোগীর চিকিৎসা উপজেলা পর্যায়ে হতে পারে। তবে দীর্ঘ মেয়াদী ফিস্টুলা ও প্রাথমিক চিকিৎসার পরও যদি অবস্থার উন্নতি না হয়, তাহলে রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাতে হয়। দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে ফিস্টুলা রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসার সুযোগ রয়েছে বলে জানান গাইনী কনসালট্যান্ট ডা: ফাইরুজ পারভীন তানিয়া। 


আরও দেখুন: