দেশের এক-চতুর্থাংশ মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন
সকালে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে ৫ দিনব্যাপী কর্মশালার সমাপনী আয়োজনে বক্তব্য দিচ্ছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. মহিউদ্দিন
দেশের মোট জনগোষ্ঠীর এক-চতুর্থাংশ মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. মহিউদ্দিন। উচ্চ রক্তচাপের কারণে বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ, বিশেষ করে হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেইলিওর ও ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে বলে জানান তিনি।
সোমবার (১৭ এপ্রিল) সকালে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে ৫ দিনব্যাপী কর্মশালার সমাপনী আয়োজনে এ কথা বলেন। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (এনসিডিসি) কার্যক্রম যৌথভাবে কর্মশালার আয়োজন করেন। গত ১২ এপ্রিল এ কর্মশালা শুরু হয়। পাঁচ দিনব্যাপী কর্মশালায় চট্টগ্রাম বিভাগের ৩টি জেলার ২১টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ডাক্তার, নার্স, সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট মেডিকেল অফিসারসহ মোট ২০৯ জন স্বাস্থ্যকর্মী অংশ নেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাথে দেশের ১৮২টি উপজেলায় এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
ডা. মো. মহিউদ্দিন আরও বলেন, উচ্চ রক্তচাপে থেকে স্ট্রোক ও মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ হয়ে রোগীর মৃত্যু হতে পারে। স্ট্রোক থেকে অন্ধত্ব, শরীরের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ অবশ হয়ে যাওয়া, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন প্রতিরোধে জীবনধারা পরিবর্তন ও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে।
তিনি বলেন, উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধের জন্য ধূমপান গ্রহণ, মাদক সেবন ও অ্যালকোহল খাওয়া বন্ধ করতে হবে। শরীরচর্চাসহ প্রতিদিন ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা হাঁটতে হবে। চর্বি জাতীয় খাবার, ফাস্ট ফুড পরিহার করে যাদের ওজন বেশি তাদের ওজন কমাতে হবে। হৃদরোগ প্রতিরোধে খাবারে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কাঁচা লবণ খাওয়া ছেড়ে দিতে হবে। এছাড়া খাদ্যাভাসেরও পরিবর্তন আনা উচিত।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ’র ডিভিশনাল প্রোগ্রাম অফিসার ডা. শাহিনুল ইসলামের সঞ্চালনায় কর্মশালায় ফেসিলিটেটর ছিলেন বাংলাদেশ হাইপারটেনশন কন্ট্রোল ইনিশিয়েটিভের ডেপুটি ডাইরেক্টর ডা. মাহফুজুর রহমান ভূঁইয়া, প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. শামীম জুবায়ের ও ডিভিশনাল মেডিক্যাল অফিসার ডা. মাহমুদুল হাসান পলাশ।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, হাইপারটেনশন সম্পর্কে সব চিকিৎসকের জ্ঞান থাকতে হবে। যে রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, সে রোগীকে কত পর্যন্ত ব্ল্যাড প্রেশার রাখা লাগবে তা অবশ্যই চিকিৎসককে জানতে হবে। যারা মোটা তাদের প্রেশার এক রকম, স্মোকারদের প্রেশার এক রকম হবে। হাইপারটেনশন যাতে না হয় সেদিকে নজর দিতে হবে। হাইপারটেনশন হলে হার্ট অ্যাটাক, কার্ডিও মাইয়োপ্যাথি, নিউরোলজিক্যাল ডিস অর্ডার হয়ে স্ট্রোক এবং চোখে রেটিনোপ্যাথি ও নেত্রোপ্যাথি হতে পারে।