দেশে থ্যালাসেমিয়া নিরাময়ে প্রথম সাফল্য

ডক্টর টিভি রিপোর্ট
2022-05-11 15:29:51
দেশে থ্যালাসেমিয়া নিরাময়ে প্রথম সাফল্য

বাংলাদেশে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তদের জন্য এটি অনেক বড় সুখবর

জন্মগত থ্যালাসেমিয়া রোগ নিরাময়ে প্রথম সাফল্য পেয়েছেন বাংলাদেশের চিকিৎসকরা। গত ৫ মে বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকরা শিহাব খন্দকার নামে ২১ মাস বয়সী এক শিশুর হ্যাপলো বোনমেরো ট্রান্সপ্লান্ট করার মাধ্যমে এ সফলতা পেয়েছেন।

বুধবার (১১ মে) এভারকেয়ার হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। চিকিৎসকরা জানান, দেশের সর্বপ্রথম জেসিআই স্বীকৃত এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকরা হ্যাপলো ট্রান্সপ্লান্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিশুটির চিকিৎসা শেষ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

এ সময় হেমাটোলজি ও স্টেম সেল ট্রান্সপ্লান্ট বিভাগের কো-অর্ডিনেটর সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ বলেন, ‘নীরব ঘাতক থ্যালাসেমিয়ার একমাত্র চিকিৎসা হলো বোনমেরো ট্রান্সপ্লান্ট। কিন্তু ডোনারের অভাবে এটি করা খুবই দুষ্কর। থ্যালাসেমিয়া রোগীর পরিবার ছোট আকারের হওয়ায় ডোনার পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে মাত্র ১০ শতাংশ।’

তিনি বলেন, ‘রোগটি চিকিৎসার বিকল্প পদ্ধতি হলো হ্যাপলো ট্রান্সপ্লান্ট (হাফ ম্যাচ ডোনার ট্রান্সপ্লান্ট)। এ পদ্ধতিতে পরিবারের যে কেউ (মা, বাবা, ভাই, বোন) ডোনার হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে। ফলে ডোনার নিয়ে ভোগান্তির অবসান হতে চলেছে।’

ডা. আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ আরও বলেন, ‘সাধারণত শিশুর দুই থেকে পাঁচ বছর বয়সে হ্যাপলো ট্রান্সপ্লান্ট করতে হয়। অনেক সময় দুই বছরের আগেও করা যায়। আমরা দেশে প্রথমবারের মতো গত ৫ মে ২১ মাস বয়সী এক শিশুর হ্যাপলো ট্রান্সপ্লান্ট সফলভাবে করেছি। বাংলাদেশে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তদের জন্য এটি অনেক বড় সুখবর। এভারকেয়ার হাসপাতালের হাত ধরে থ্যালাসেমিয়া চিকিৎসা ব্যবস্থায় যুগান্তকারী অধ্যায়ের সূচনা হলো বলে আমি মনে করি।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে এভারকেয়ার হাসপাতালের এমডি ও সিইও ডা. রত্নদ্বিপ, মেডিকেল সার্ভিসেসের উপপরিচালক ডা. আরিফ মাহমুদ, চিফ মার্কেটিং অফিসার ভিনয় কাউল এবং রোগী শিহাবেরর স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, থ্যালাসেমিয়া একটি জেনেটিক্যাল বা বংশগত রোগ। জেনেটিক্যালি বিভিন্ন ডেলিশন ও মিউটেশনের কারনে রোগটি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে প্রায় ৮০ লাখ মানুষ থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত, যাদের বেশিরভাগই রোগটি সম্পর্কে অবগত নন। এর বড় কারণ, আক্রান্তদের বেশিরভাগই বাহক, যা সহজে ধরা পড়ে না। ফলে থ্যালাসেমিয়াকে নীরব ঘাতকও বলা হয়। আক্রান্তদের মধ্যে ৫০ থেকে ৭০ হাজার মানুষের চিকিৎসা প্রয়োজন।

এ সময় ডা. আরিফ মাহমুদ বলেন, ‘ব্লাড ক্যান্সার রোগীদের সব ধরনের চিকিৎসা এভারকেয়ারে পাওয়া যাচ্ছে। চিকিৎসার জন্য আর বিদেশ যেতে হবে না। এক ছাদের নিচে এভারকেয়ার আন্তর্জাতিক মানের সব রোগের চিকিৎসা দিচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় হ্যাপলো ট্রান্সপ্লান্ট এদেশের স্বাস্থ্য খাতে মাইলফলক হয়ে থাকবে।’


আরও দেখুন: