প্রতি ১৪ জনে একজন থ্যালাসেমিয়ার বাহক
আজ বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস
থ্যালাসেমিয়া হলো একটি বংশগত রক্তস্বল্পতাজনিত রোগ। এসব রোগী ছোট বয়স থেকেই রক্তস্বল্পতায় ভোগে। এদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তারা যেহেতু তাদের শরীরে নির্দিষ্ট পরিমাণ রক্ত তৈরি করতে পারে না, তাই অন্যের রক্ত ট্রান্সফিউশন নিয়ে তাদের জীবন চালাতে হয়।
বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস আজ। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হচ্ছে। বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।
বাংলাদেশে বর্তমানে প্রতি ১৪ জনে একজনের থ্যালাসেমিয়ার বাহক রয়েছে, আর ৭০ হাজারের বেশি শিশু থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। প্রতিবছর ছয় হাজার শিশু বিভিন্ন রকমের থ্যালাসেমিয়া রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান মতে, বাংলাদেশের জনসংখ্যার সাত শতাংশ অর্থাৎ প্রায় এক কোটি ১০ লাখ মানুষ থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক। থ্যালাসেমিয়া বাহকদের পরস্পরের মধ্যে বিয়ের মাধ্যমে প্রতিবছর নতুন করে সাত হাজার থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুর জন্ম হচ্ছে। থ্যালাসেমিয়া রোগীরা প্রতিমাসে এক থেকে দুই ব্যাগ রক্ত গ্রহণ করে বেঁচে থাকে। চিকিৎসা না করা হলে এ রোগীরা রক্তশূন্যতায় মারা যায়।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধে ইতিবাচক ভূমিকা রাখা সম্ভব। এ লক্ষ্যে ‘বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস’ পালন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
তিনি বলেন, থ্যালাসেমিয়া একটি জিনবাহিত রোগ, যা বাহকের মাধ্যমে ছড়ায়। স্বামী-স্ত্রী উভয়ই থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক হলে তা জিনগত কারণে সন্তানদের মধ্যে বিস্তার ঘটাতে পারে। এ জন্য পুরুষ বা নারী যে কেউ এ রোগের বাহক কি-না তা বিবাহপূর্ব পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ণয় করা জরুরি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণীতে বলেন, থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রক্তস্বল্পতাজনিত দুরারোগ্য ব্যাধি। এ রোগ প্রতিরোধে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। বাংলাদেশে এই রোগের জিনবাহকের সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। বাহকে-বাহকে বিয়ে হলে দম্পতির সন্তান থ্যালাসেমিয়া রোগী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সে জন্য বিবাহযোগ্য ছেলেমেয়েরা তাদের বিয়ের আগে এই রোগের জিনবাহক কিনা তা জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
বাণীতে তিনি দুরারোগ্য ব্যাধি থ্যালাসেমিয়া এবং বাহকে-বাহকে বিয়ে প্রতিরোধের জন্য দেশের বাড়িতে বাড়িতে, মহল্লায় মহল্লায় সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে সরকারের পাশাপাশি সব পেশাজীবী ব্যক্তি ও সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, গণমাধ্যম, অভিভাবকসহ সচেতন নাগরিক সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।