শিশুর কৃমির লক্ষণ, সুরক্ষায় করণীয়
অত্যধিক মিষ্টি ও চিনি খেলে কৃমি হয়— এমন ধারণা মোটেও সঠিক নয়
করোনা পরিস্থিতিতে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে আজ ৫ থেকে ১৬ বছর বয়সী সব শিশুকে কৃমির ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে। কৃমি এক ধরনের পরজীবী প্রাণী, যা খাবার ও পানির মাধ্যমে বা পায়ের পাতা ভেদ করে শরীরে প্রবেশ করে।
অপরিচ্ছন্নতা ও খাদ্যাভ্যাসের কারণে এটি শিশুদের আক্রমণ করে। কৃমি হলে শিশুদের মধ্যে কী ধরনের লক্ষণ দেখা যায়, তা জানা থাকলে প্রতিকার সহজ হয়।
শিশুর কৃমি আক্রমণের লক্ষণ
> কৃমি হলে খাবারের প্রতি শিশুর রুচি কমে যায়
> স্বাস্থ্য খারাপ হয়, ওজন বাড়ে না। কারণ তার এক-তৃতীয়াংশ খাবার কৃমি খেয়ে ফেলে
> রক্তশূন্যতা দেখা হয়। একটি কৃমি প্রতিদিন শরীর থেকে শূন্য দশমিক ১ মিলিলিটার রক্ত শোষণ করে
কৃমি নিয়ে কিছু ভুল ধারণা
> শিশু ঘুমের মধ্যে দাঁত কিড়মিড় করে। তার মানে ওর পেটে কৃমি হয়েছে। ঘুমের মধ্যে দাঁত কিড়মিড়ের সাথে কৃমির কোনো সম্পর্ক বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয়
> পেটে দু-একটি কৃমি থাকা ভালো। এতে খাবার হজম হয়। আসলে কৃমি শরীরের শত্রু, এরা দেহের খাদ্য, পুষ্টি ও রক্ত শোষণ করে
> অত্যধিক মিষ্টি ও চিনি খেলে কৃমি হয়— এমন ধারণা মোটেও সঠিক নয়। অপরিচ্ছন্নতা এবং দূষিত খাবার ও পানি কৃমির কারণ। অত্যধিক মিষ্টি বা চিনি খাওয়ার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই
> চিরতার পানি বা তেতো খেলে কৃমি মরে যায়। আসলে চিরতার অন্য ভেষজ গুণ থাকলেও কৃমি মরার উপাদানের বিষয় প্রমাণিত নয়
> কৃমির ওষুধ শুধু শীত কিংবা বৃষ্টির দিনে খাওয়াতে হয়; গরমের দিনে খাওয়াতে নেই— এমন ধারণার কোনো ভিত্তি নেই। বাজারের কৃমিনাশক ওষুধ সবই মোটামুটি নিরাপদ এবং শীত-গরম যেকোনো সময় খাওয়ানো যায়
কৃমি থেকে শিশুর সুরক্ষায় করণীয়
> যেকোনো কিছু খাওয়ার আগে শিশুকে ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে। এটি অভ্যাসে পরিণত করতে হবে
> টয়লেট ব্যবহারের পর সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে
> বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার শিশুকে না দেওয়ায় ভালো
> শিশুর খাবার ঢেকে রাখতে হবে
> নোংরা জায়গায় শিশু খালি পায়ে হাঁটবে না
> দুই বছর বয়স থেকে প্রতি ছয় মাস পরপর শিশুকে কৃমির ওষুধ খাওয়ান। একই সময়ে পরিবারের সবাই এ ওষুধ খেলে ভালো হবে