বুস্টারে সুস্থদের সমান অ্যান্টিবডি তৈরি হয় অসংক্রামক রোগীদের দেহে

ডক্টর টিভি রিপোর্ট
2022-02-23 15:36:46
বুস্টারে সুস্থদের সমান অ্যান্টিবডি তৈরি হয় অসংক্রামক রোগীদের দেহে

গবেষণায় নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ

ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাপানিসহ অসংক্রামক রোগে ভুগছিলেন এমন ব্যক্তিদের শরীরে টিকার বুস্টার ডোজে সুস্থ ব্যক্তির মতোই অ্যান্টিবডি মিলেছে। বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) প্রকাশিত এক গবেষণায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

গবেষকরা বলছেন, বুস্টার ডোজ নেওয়ার এক মাসের মধ্যে এমন ফলাফল মিলেছে। ফলে বুস্টার নেওয়ার কার্যকারিতা আরও জোরালো হলো। তবে ভবিষ্যতেও এভাবে টিকার ডোজ নিতে হবে কিনা, সে বিষয়ে আরও বিশদ গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন তারা।

গবেষণায় নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। সহ-গবেষক হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সালাহউদ্দীন শাহ।

গবেষণায় দুই ডোজ টিকা নেওয়ার এক ও ছয় মাস পর এবং বুস্টার নেওয়ার এক মাস পর শরীরে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে তৈরি অ্যান্টিবডির মাত্রা পরিমাপ করা হয়।

স্বাস্থসেবার সঙ্গে জড়িত ২২৩ জন গবেষণায় অংশ নেন। তাদের শরীরে দুই ডোজ টিকা নেওয়ার এক মাস পর, ৩০ জনের দুই ডোজ নেওয়ার ছয় মাস পর এবং বুস্টার নেওয়ার এক মাস পর অ্যান্টিবডিএর মাত্রা পরিমাপ করা হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, অর্ধেকের বেশি অংশগ্রহণকারী আগে থেকেই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাপানীর মতো অসংক্রামক রোগে ভুগছিলেন। কিন্তু শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার ক্ষেত্রে সুস্থদের সাথে তাদের কোনো পার্থক্য হয়নি।

গবেষণায় দেখা গেছে, ৪২ শতাংশ অংশগ্রহণকারী টিকা নেওয়ার পর মৃদু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা জানালেও রক্ত জমাট বাঁধা বা অন্য কোনো জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গবেষণাকালীন সময়ে দেখা যায়নি। টিকা নেওয়ার প্রথম ধাপে ২২৩ জনের মধ্যে ৯৮ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পাওয়া যায়। যারা আগেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাদের শরীরে বেশি অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে।

তবে টিকা নেওয়ার ৬ মাস পর অধিকাংশের অ্যান্টিবডি কমে গেছে। তাদের মধ্যে ৩০ জনের ৭৩ শতাংশের অ্যান্টিবডির মাত্রা গড়ে ৬৭৯২ AU/mL থেকে ৩৯৬৩ AU/mL- তে নেমে এসেছে। এ সময় দুজনের পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি পাওয়া যায়নি। বুস্টার নেওয়ার পর আবার শতভাগ অংশগ্রহণকারীর দেহে অ্যান্টিবডি পাওয়া যায় এবং প্রায় সবার ক্ষেত্রেই অ্যান্টিবডির মাত্রা পুনরায় বৃদ্ধি পেয়ে গড়ে ২০৮৭৮ AU/mL- এ দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ কারও কারও ক্ষেত্রে বুস্টার নেওয়ার পর ৫ গুণ অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। টিকার বুস্টার ডোজ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা ও কার্যকারিতার প্রমাণ এ গবেষণায় পাওয়া তথ্যে মিলেছে।

গবেষকরা বলছেন, ভবিষ্যতে নির্দিষ্ট সময় অন্তর বুস্টার নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা যাচাইয়ের জন্য সমসাময়িক গবেষণার প্রয়োজন। পাশাপাশি সব ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে নিশ্চিত করতে হবে।


আরও দেখুন: