চার বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য কাশির সিরাপ নিষিদ্ধ করল ভারত
চার বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য কাশির সিরাপ নিষিদ্ধ করল ভারত
চার বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য কাশির সিরাপ নিষিদ্ধ করেছে ভারত সরকার। গত ১৮ ডিসেম্বর এ সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। বুধবার (২০ ডিসেম্বর) সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর প্রকাশ করেছে।
প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক বছরে ভারতে তৈরি কাশির সিরাপ সেবনে বিভিন্ন দেশের অন্তত ১৪১ শিশুর মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। সিরাপের প্রভাবে ভারতেও কয়েকটি শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। এরই প্রেক্ষিতে ৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য কাশির সিরাপ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিল ভারতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
ভারতের জাতীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিসিজিআই এখন থেকে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী লেবেল ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছে। অর্থাৎ এখন থেকে শিশুদের জন্য এই ওষুধ যে নিরাপদ নয়, তা বিশেষ সতর্কীকরণ হিসেবে কাশির ওষুধের বোতলে লেখা থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
ডিসিজিআই বলেছে, একটি আলোচনায় অননুমোদিত ঠান্ডার ওষুধ বা কাশির সিরাপের প্রচারের বিষয়ে উদ্বেগ উত্থাপিত হয়েছে। আলোচনা শেষে নির্দিষ্ট বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য এসব সিরাপ নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করা হয়।
এ সুপারিশ মূলত ২০১৯ সাল থেকে ভারতে শিশুমৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে করা, ভারতে উৎপাদিত ‘বিষাক্ত’ কাশির সিরাপের সঙ্গে যুক্ত। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে ভারতে তৈরি কাশির সিরাপ সেবন করানোর পরে জাম্বিয়া, উজবেকিস্তান ও ক্যামেরুনে অন্তত ১৪১টি শিশুর মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার পরেই ভারত থেকে রপ্তানি করা ওষুধের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
কম দামে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ সরবরাহের কারণে ভারতকে প্রায়ই ‘বিশ্বের ফার্মেসি’ বলা হয়। তবে ভারতীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছে, এসব সিরাপ খেয়ে ভারতেই অন্তত ১২ শিশুর মৃত্যু হয় এবং চারটি শিশু ঘরোয়াভাবে তৈরি কাশির সিরাপ খাওয়ার পরে বিকলাঙ্গ হয়ে পড়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সব অভিযোগ আমলে নিয়ে তারা চলতি বছরের জুন মাস থেকে কাশির সিরাপ রপ্তানির জন্য বাধ্যতামূলক পরীক্ষা চালু করেছে। পাশাপাশি ওষুধ প্রস্তুতকারীদের তালিকাও যাচাইবাছাই করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এসব কাশির সিরাপে রয়েছে ক্লোরফেনিরামাইন ম্যালিয়েট ও ফেনাইলেফ্রাইন। সাধারণ সর্দি-কাশির চিকিৎসায় এ দুটি উপাদান সিরাপ বা ট্যাবলেটে মেশানো হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের কাশি ও সর্দির চিকিৎসায় এ ধরনের সিরাপ বা ওষুধ ব্যবহারের সুপারিশ করে না।