রোজায় কী খাবেন, কী খাবেন না
পুষ্টিবিদ সুফিয়া হেলেন
আমরা সারা বছর এক ধরনের নিয়মে চলি। কিন্তু রমজান আসতেই আমাদের খাদ্যাভাস পরিবর্তন হয়ে যায়। রমজানের আমরা ইফতার থেকে সেহেরি পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপে খাবার খেয়ে থাকি। আজকে আমরা জানবো রমজানে কোন খাবারগুলি স্বাস্থ্যসম্মত।
রোজায় স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ না করলে পেটের পীড়াসহ বিভিন্ন অসুখের আশংকা বেড়ে যায়। রমজানে বাজারে যে খাবারগুলি দেখা যায় সেখানে সবসময় স্বাস্থ্যকর থাকে না। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতারও একটা বিষয় রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ভেজাল বা মেয়াদ উত্তীর্ণ জিনিসপত্র ব্যবহার খাবারকে অস্বাস্থ্যকর করে তোলে।
আমরা সবাই চাই সুস্থ থাকতে।এর জন্য বাসায় স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরি করে খাওয়া উত্তম। সবসময় লক্ষ্য থাকবে যে খাবারস খাচ্ছি সেটা স্বাস্থ্যকর কিনা। বাংলাদেশে যে খাবারগুলি সচরাচর ইফতারে দেখতে পাই তার মধ্যে বেগুনি, পিয়াজু, ছোলা অন্যতম। তবে আমরা যেভাবে এগুলো খাই তা অস্বাস্থ্যকর। চাইলেই এগুলোকে স্বাস্থ্যকর করে তুলতে পারি। যেমন ছোলাকে যদি আমরা শুধু সেদ্ধ করে বিভিন্ন সালাদ যোগ করে একটু টক দই ব্যবহার করি তাহলে সেটি স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারি।
ইফতারে আমরা খেজুর খেতে পারি। এটি তাৎক্ষণিক ক্যালোরি, আয়রন, পটাশিয়ামসহ অন্যান্য অনেক খনিজ উপাদান জোগায় শরীরে। শরবতের ক্ষেত্রে যদি আমরা চিনি বা ভুট্টাজাতীয় কিছু ব্যবহার না করে শুধু ফলের রস খাই তাহলে কিন্তু সেটা বেশি উপকারি। আইবিএস রোগীদের একেবারেই ভাজাপড়া খাওয়া যাবে না। এ ধরণের রোগীদের বলবো আপনারা ইফতারের পরপরই সন্ধ্যা রাতের খাবার খেয়ে নিন। সেটা হতে পারে একটা খিচুড়ি, সবজি, সাদা ভাত,রুটি বা উটস বা সবজি হতে পারে।
এছাড়া অন্যদেরও রাতে স্বাভাবিক খাবার খাওয়াই উচিৎ। তেহারী বা বিরিয়ানি পরিবর্তে সাদা ভাত, সাজনা দিয়ে ডাল, টক ডাল, লাউ, চাল কুমড়, ঢেঁড়সের মতো সবজিগুলি খেতে পারি। এসব সবজির সাথে যদি একটা ঝোল তরকারি খাই তাহলে সেটা আমাদের জন্য অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর হবে।
সেহেরির ক্ষেত্রে সবসময় যে ভাতই খেতে হবে এমন না। আমরা চিড়া দই বা সবজি খেতে পারেন। মাছ অথবা মাংস ভুনা না করে পেঁপে বা লাউ দিয়ে রান্না করে খেলে পানিশূন্যতা কমাতে সাহায্য করবে এবং হজমটা ভালো হবে।
সবশেষে যে বিষয়টি বলবো তা হলো অনেকের সেহেরির পরে চা খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। এই কাজটি করা যাবে না। এসময় চা বা কফি খেলে সারাদিনে আপনি অনেক বেশি ক্লান্ত অনুভব করবেন এবং পানি শূন্যতায় ভুগতে পারেন। তবে আপনারা ইফতারের পরে আদা চা, লেবু চা, দারুচিনি চা খেতে পারেন।
লেখক
সুফিয়া হেলেন
প্রধান পুষ্টিবিদ
আনোয়ার খান মডার্ন হসপিটাল, ঢাকা