রোজায় পেটে কি ধরনের সমস্যা হয়, করণীয়
পেটের সমস্যা সমস্যাগুলো অসতর্কতার কারণে হয়ে থাকে
ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম রোজা এবং এটি প্রাপ্তবয়স্ক সবার জন্য ফরজ। আমি মনে করি, রোজার স্বাস্থ্যগত অনেক উপকারী দিক রয়েছে। আবার কিছু কিছু বিষয়ে আমাদের সতর্ক হতে হবে।
এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সচেতন হতে হবে পেটের সমস্যা নিয়ে। কারণ পেটের সমস্যাগুলো অসতর্কতার কারণে হয়ে থাকে। রোজায় যে নির্দেশনা আছে, যেমন পরিমিত খাবার গ্রহণ, সুষম খাবার খাওয়া, অতিভোজ ও ভাজাপোড়া না খাওয়া— এসব নির্দেশনা আমরা প্রায় সময় ভুলে যাই। ফলে পেটের সমস্যাগুলো বেড়ে যায়।
রমজানে পেটের যেসব সমস্যা নিয়ে রোগীরা আমাদের কাছে আসেন, সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গলা ও বুক জ্বালাপোড়া। এরপর পেটের উপরিভাগে অথবা মধ্যখানে ব্যথা, পেট ফুলে যাওয়া, ঢেকুর আসা, পাতলা পায়খানা, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি।
সাধারণত রোজার শেষ অংশে রোজাদাররা অনাহারে ভোগেন। এক্ষেত্রে কিছু কিছু সমস্যা হতে পারে। এটা আমাদের সবার ক্ষেত্রেই হতে পারে। এর মধ্যে বমি বমিভাব অন্যতম। তবে এটি তেমন কোনো বড় সমস্যা না। এটি এসিডের তারতম্যের কারণে হয়ে থাকে। অনেক সময় বেশি এসিড বের হয়, সে কারণেও হতে পারে।
এ সমস্যা এড়াতে খাবার-দাবার গ্রহণের বিষয়ে একটু সতর্ক হতে হবে। তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। সহজে হজম হয় এমন স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে হবে। তারপরও সমস্যা হলে সাহরির আগে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেতে হবে।
রোজায় বুক জ্বালাপোড়া আমাদের পরিভাষায় গ্যাস্ট্রো সিরোসিস রিফ্লাক্স সিম্পটম বলা হয়। এগুলো নিয়মিত হলে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়। গ্যাস্ট্রিক সিরোসিস রিফ্লাক্স ডিজিসের প্রথম উপসর্গ হলো গলা ও বুক জ্বালাপোড়া, বুকে ব্যথা, মুখে পানি আসা, মুখে টক পানি আসা ইত্যাদি। বুকের এ ব্যথা অনেক সময় হার্টের ব্যথার কাছাকাছি মনে হয়। ফলে রোগীরা ঠিক কোন ব্যথা তা পার্থক্য করতে পারেন না এবং অনেকের জন্য ভীতির কারণ হয়ে ওঠে।
গলা, বুক জ্বালাপোড়া করা এটি একটি খারাপ উপসর্গ। এটি প্রতিরোধ করতে হলে ভুরিভোজ, তৈলাক্ত ও চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না। এক সাথে বেশি পরিমাণে না খেয়ে স্বল্প পরিমাণে বার বার খেতে হবে। খাওয়ার সাথে সাথে পানি পান করা যাবে না। কিছুক্ষণ পর পানি পান করতে হবে। খাওয়ার পরপরই শোয়া যাবে না, অন্তত দুই ঘণ্টা পর বিছানায় যেতে হবে। কেউ রাত ১০টায় ঘুমাতে চাইলে, তাকে সন্ধ্যা ৭-৮টার মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে নিতে হবে। এর পাশাপাশি ওমিপ্রাজল জাতীয় ওষুধ সাহরির আগে খালি পেটে খেলে ২৪ ঘণ্টা ভালো থাকা যাবে।